চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে চারজনকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গ্রেফতার করল রেল পুলিশ। ধৃতেরা হল, শুভেন্দু রাউত, চন্দ্রমণি পাল, মানস চন্দ্র নায়েক ও কানু চন্দ্র রাউত। ওই চারজনেরই বাড়ি ওড়িশায়।
রেল সূত্রে খবর, গত বছরের নভেম্বর মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার বাসিন্দা পাটানা গণেশ, পাটানা ঘনশ্যাম, শিবাজী রাউ ও পাটানা মুরলীকে রেলের গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট ৮ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল ধৃতেরা। পরে কয়েক বার মিলিয়ে চারজনের কাছ থেকে চার জনের কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা করে আদায়ও করে ওই দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি না পেয়ে আবেদনকারীরা রেলের ভিজিল্যান্সকে জানায়। তারপরেই শনিবার আরপিএফ গিয়ে ওই চার জনকে ধরে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রতারিতদের প্রত্যেকের কাছে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৫০০ টাকা নিয়েছিল ওই দলটি। ওই সময় প্রত্যেককে গ্রুপ ডি পদের ভুয়ো ফর্মে নাম ঠিকানা লিখিয়ে নেওয়া এবং পরীক্ষার উত্তরপত্রেও আবেদনকারীদের দিয়ে লিখিয়ে সই করিয়ে নেয় তারা। এরপরে ডিসেম্বর মাসে কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে ওই চারজনের মেডিক্যাল টেস্টও করিয়ে ছিল ওই চক্রটি। আরও কয়েক বার বিভিন্ন অছিলায় টাকা আদায় করে নেয় চক্রটি।
রেল পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আবেদনকারীরা বারবার চাপ দেওয়ায় ওই সময় নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য তাদের বেলুড় মঠ স্টেশনে আসতে বলেছিল চক্রটি লোকজন। আবেদনকারীদের অভিযোগ, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে এলেও ৬ লক্ষ টাকা না আনায় সেদিন তাঁদের আবেদনপত্র দেওয়া হয়নি। এরপরেই সন্দেহ হয় আবেদনকারীদের। তাঁরা বিষয়টি ভিজিল্যান্সের কাছে কাছে জানান।
এরপরে প্রতারকরা আবেদনকারীদের আবারও জানায়, ২৩ জানুয়ারি বাকি ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে শিয়ালদহ রেল স্টেশনে হাজির হতে। সেইমত শনিবার বিকেলে শিয়ালদহ স্টেশনে আড়ি পেতে ছিলেন আরপিএফের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা। ওড়িশার চার যুবক শিয়ালদহ স্টেশনে আসামাত্রই হাতনাতে তাদের ধরিয়ে দেন আবেদনকারীরা। ধৃতদের রবিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করে কী করে কাঁচড়াপাড়া রেল হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট হল সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তাকারীরা। এর আগেও কয়েক বার দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব রেলের সদর দফতর থেকে এই ধরণের চাকরি দেওয়ার নামে আরও একটি প্রতারণা চক্রের হদিস পেয়েছিল রেল পুলিশ। সেখানেও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। বারবার বিজ্ঞাপন, ঘোষণা করার পরেও বারবার এই ধরণের চক্রে পাঁদে পা দিচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy