ফাইল ছবি
স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের আগে শহর জুড়ে মনীষীদের মূর্তি জল দিয়ে পরিষ্কার করা এবং ফুলে সাজানোর ক্ষেত্রে ‘আমরা’ বনাম ‘আমরা’র বিতর্ক শুরু হয়েছে কলকাতা পুরসভায়।
ঘটনার সূত্রপাত বরোভিত্তিক মনীষীদের মূর্তি পরিষ্কারে পুরসভার দরপত্র ডাকা নিয়ে। স্বাধীনতা দিবসের আগে ১-১২ নম্বর বরোস্থিত মনীষী-মূর্তি পরিষ্কার করে ফুল দিয়ে সাজানোর দায়িত্ব নামী ঠিকাদার সংস্থাকে দিতে পুরসভার উদ্যান ও বাগিচা দফতর (পার্কস ও স্কোয়ারস) ৫ অগস্ট দরপত্র ডাকে। সেই দরপত্রে জায়গা পায়নি ১৩ থেকে ১৬ নম্বর বরো। ওই চার বরোর মনীষী-মূর্তি পরিচ্ছন্ন করার দায়িত্ব বর্তেছে বরো স্তরেই। একই কাজে এই ‘বিভাজনমূলক নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, ১-১২ নম্বর বরোয় মূর্তি সাজানোর দায়িত্ব পুরসভা বেসরকারি সংস্থাকে দিতে দরপত্র ডাকলেও বাকি চার বরো কিসের ভিত্তিতে বাদ পড়ল?
১৩ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন রত্না শূরের বক্তব্য, ‘‘একই কাজে পুরসভার কেন পৃথক সিদ্ধান্ত, বুঝলাম না! বরোর বাজেট যখন একই, তখন একসঙ্গেই দরপত্র ডাকা উচিত ছিল।’’ যার প্রেক্ষিতে এক পুরকর্তা জানাচ্ছেন, ১-১২ নম্বর বরোর মূর্তির তালিকা ঠিক সময়ে পাওয়া গিয়েছিল। তাই কেন্দ্রীয় ভাবে দরপত্র ডাকা সম্ভব হয়েছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘বাকি চারটি বরো মূর্তির তালিকা দিতে দেরি করেছিল। তাই দরপত্রে তাদের নাম সংযুক্ত হয়নি। বরো স্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা যেন নিজেরাই কাজটা করে নেয়।’’
তালিকা দেরিতে দেওয়া প্রসঙ্গে ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীলের বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতা দিবসে কে বা কারা মনীষীদের মূর্তি সাজাচ্ছে, সেটা বড় নয়। বিষয়টা হল, আমাদের কাছে মূর্তির কোনও তালিকাই চাওয়া হয়নি। চাইলে দিয়েই দিতাম।’’ যদিও পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, প্রতিটি বরোর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারেরা জানেন মূর্তির তালিকা চাওয়ার বিষয়টি।
পুরসভা সূত্রের খবর, ১ থেকে ১২ নম্বর বরোয় মনীষীদের মোট ৫১৮টি মূর্তি রয়েছে, যা পুর কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদ্যোগে বসিয়েছেন। এর মধ্যে ১, ২, ৩, ৪, ৫ এবং ৬ নম্বর বরোয় মূর্তির সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬, ৪৫, ১৪৩, ২৬, ১৩ এবং ১৪। আবার ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর বরোয় মূর্তি আছে যথাক্রমে ৩৩, ২৮, ৩২, ৭৮, ২১ এবং ১৯টি। সূত্রের খবর, বাকি চারটি বরোয় মূর্তি ৪৫টির মতো। তবে কাউন্সিলরের নিজস্ব উদ্যোগে বসানো মূর্তির হিসাব কেন্দ্রীয় পুর ভবনে রাখা হয় না।
১৪ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন সংহিতা দাস বলছেন, ‘‘স্বাধীনতা দিবসে কাদের উদ্যোগে মনীষীদের মূর্তি সাজানো হচ্ছে, তা গুরুত্বপূর্ণ নয় ঠিকই। কিন্তু কেন আমাদের বরোগুলি আলাদা করা হল, তা উদ্যান দফতরের কাছে জানতে চাইব।’’ গোটা বিষয়টি নিয়ে অবহিতই নন ১৬ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নির্দেশিকা তো একটাই হবে। উদ্যান দফতর দায়িত্বে থাকলে তারাই সব করবে। বরো অফিসকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তারা করবে।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় ভাবে শুধু ১-১২ নম্বর বরোর দরপত্র ডাকা হয়েছে শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা জানি না। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় পুর ভবন থেকে যা বলার বলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy