Advertisement
০২ মে ২০২৪

পৌঁছল ফরাসি সংস্থার ছাড়পত্র

মাস কয়েক আগে সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন চালানোর সময়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থায় বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়েছিল।

সল্টলেকে চলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রায়াল রান। ফাইল চিত্র

সল্টলেকে চলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রায়াল রান। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

নাগাড়ে চলা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধুনিক সিগন্যালিং এবং ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে ছাড়পত্র দিল ফরাসি মূল্যায়ন সংস্থা। শুক্রবার রাতে ওই সংস্থার ছাড়পত্র এসে পৌঁছনোয় পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তুতি অনেকটা সেরে ফেলা গেল বলে মনে করছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কর্তারা।

মাস কয়েক আগে সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন চালানোর সময়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থায় বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়েছিল। কন্ট্রোল রুম থেকে স্বয়ংক্রিয় উপায়ে ট্রেন নিয়ন্ত্রণের সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কিছু জটিলতা দেখা দেয়। তার প্রেক্ষিতে ফরাসি মূল্যায়ন সংস্থাটি মেট্রো কর্তৃপক্ষকে এক হাজার ঘণ্টা ট্রেন চালিয়ে তার ফলাফল পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেন। সেই মতো গত কয়েক মাস ধরে সিগন্যালিং এবং ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে ত্রুটিমুক্ত করতে নাগাড়ে ট্রেন চালিয়ে তার ফলাফল নথিভুক্ত করা হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে প্রায় ৮০০ ঘণ্টার বেশি ট্রেন চালিয়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থা পরখ করা হয়েছে। ওই পরীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে তার পর সিগন্যালিং ব্যবস্থা নিয়ে ছাড়পত্র দিয়েছে ওই ফরাসি সংস্থা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় আধুনিক প্রযুক্তির কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসিএস) ব্যবহার করা হবে। বিশেষ ওই প্রযুক্তির সাহায্যে একটি ট্রেনের প্রতি মুহূর্তের অবস্থান অনুযায়ী তার গতি কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সে ক্ষেত্রে ট্রেনে চালক থাকলেও তাঁর ভূমিকা গৌণ হয়। কোচি এবং হায়দরাবাদের মেট্রোয় ওই প্রযুক্তি চালু রয়েছে। দিল্লির মেট্রোয় ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেট্রো সূত্রের খবর, তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ নির্ভর ওই প্রযুক্তিতে রেললাইন বরাবর অসংখ্য অ্যান্টেনা লাগানো থাকে। প্রত্যেক ট্রেনেও অ্যান্টেনা থাকে। রেললাইনের অ্যান্টেনা থেকে বেরিয়ে আসা তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ ট্রেনের অ্যান্টেনা থেকে ফের লাইনে ফেরত আসে। ওই প্রক্রিয়াতেই

একটি ট্রেনের প্রতি মুহূর্তের অবস্থান জানা যায়। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় ওই প্রযুক্তি নেই। সেখানে ব্লক সিগন্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। সেই প্রযুক্তিতে একটি ট্রেনকে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করতে দেখার পরেই পরবর্তী ট্রেনকে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধুনিক প্রযুক্তিতে তার প্রয়োজন পড়বে না। ফলে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।

কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের রোলিং স্টক বিভাগের ডিরেক্টর অনুপকুমার কুন্ডু শনিবার বলেন, ‘‘রেক নিয়ে রেল বোর্ডের ছাড়পত্র আমরা আগেই পেয়েছি। ট্রেন চালানোর চূড়ান্ত পর্বের দিকে ফরাসি সংস্থার ছাড়পত্র আমাদের অনেকটা এগিয়ে দিল।’’ মেট্রো সূত্রের খবর, সিগন্যালিং সংক্রান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার পরে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির কাছে এ বার সামগ্রিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার আর্জি জানাবেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সব প্রস্তুতি প্রায় সারা। ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE