এ বার খাস কলকাতায় ডিজিটাল গ্রেফতারের শিকার কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্তা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই পরিচয় দিয়ে অভিযুক্তেরা তাঁকে পার্ক স্ট্রিটের এক হোটেলে আটকে রাখেন। তার পরে ইন্ডিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্ডসের ডেপুটি ডিরেক্টর শৌভিক শিকদারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ২৫ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় হাওড়া এবং নিউটাউনের বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের শুক্রবার আদালতে হাজির করানোও হয়েছে।
গত ২৩ মে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তেঁতুলতলার বাসিন্দা শৌভিক। অভিযোগে তিনি জানান, ২২ মে তাঁকে মোবাইলে ফোন করেন কয়েক জন। তাঁরা নিজেদের সিবিআইয়ের আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে দাবি করেন, শৌভিকের নামে একটি পার্সেল এসেছে। সেই পার্সেলে মাদক রয়েছে। সেই কারণে কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাই করতে হবে। শৌভিকের অভিযোগ, এই কথা বলে পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে তাঁকে ডিজিটাল-বন্দি করে রাখেন অভিযুক্তেরা। সেই সময়ে তাঁকে অনলাইনে ২৫ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য করেন তাঁরা। দফায় দফায় সেই লেনদেন চলেছিল। অভিযুক্তেরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সিবিআই অ্যাকাউন্ট যাচাই করার পরে তাঁর পাঠানো টাকা তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ৫ জুন, বৃহস্পতিবার রাতে নিউ টাউনের ইকো পার্ক এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম নরপত সিংহ, রাজেন্দ্র সোনি, হরিশ কুমার। তাঁদের জেরা করে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হাওড়া থেকে ধৃতদের নাম মনোহর, সংগ্রাম সিংহ, সুরজ, দিলীপ এবং জিতেন্দ্র। ধৃতেরা সকলেই রাজস্থানের জোধপুরের বাসিন্দা।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শহরে এসে প্রথমে তাঁরা নিউ টাউনে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। তার পরে প্রায় প্রতিদিন ঠিকানা বদলাতে থাকেন। এর পরে দুই দলে ভাগ হয়ে যান অভিযুক্তেরা। হাওড়া থেকেও প্রতারণা শুরু করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বেসরকারি ব্যাঙ্কের দু’টি সোয়াইপ যন্ত্র (পিওএস সোয়াইপ মেশিন), পাঁচটি স্মার্ট ফোন, ব্যাঙ্কের বেশ কয়েকটি পাশবই, চেকবই, আধার, প্যান, ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার আট জনকে আলিপুরের আদালতে হাজির করানো হয়। ১৮ জুন পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।