নিজস্ব সংবাদদাতা
দু’দিনও গেল না। ফের উড়ো ফোনে বোমাতঙ্ক বিমানবন্দরে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে উড়ো ফোনটি সরাসরি কলকাতা বিমানবন্দরের ম্যানেজারের ঘরে আসে। গত দিনের মতো এ দিনও এক যুবক হিন্দিতে বলেন, ‘‘ম্যায় সঞ্জয় বোল রাহা হুঁ। এয়ারপোর্ট মে আজ বম্ব ব্লাস্ট হোগা।’’ যে মোবাইল থেকে ওই যুবক ফোন করেছিলেন, সেই নম্বরটি বিমানবন্দরের তরফে বিধাননগর পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন রাত পর্যন্ত ওই যুবকের সন্ধান চালিয়েছে বিধাননগরের পুলিশ। যে নম্বর থেকে ফোনটি এসেছিল, সংশ্লিষ্ট সেই মোবাইল সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই মোবাইলের মালিকের নাম ও ঠিকানাও জোগাড় করে ফেলেছে পুলিশ। তবে, রাত পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি।
গত মঙ্গলবার মাঝ রাতে লালবাজারে এবং বুধবার সকালে বিধাননগরের পুলিশ কন্ট্রোলে একই যুবক ফোন করে বোমা রাখার কথা বলেছিলেন। লালবাজারে ফোনটি করা হয়েছিল ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল’ ব্যবহার করে। সেই ফোন নম্বরটি দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল যে, অসম থেকে ফোনটি করা হয়েছে। পরে জানা যায়, ডানকুনিকে বসে ফোনটি করেন অরুণাভ সিংহ। বুধবার সকালে নিজের মোবাইল থেকেই বিধাননগর পুলিশ কন্ট্রোলে ফোন করেন অরুণাভ।
ডানকুনি গিয়ে সেই অরুণাভকে ধরার পরে পুলিশ দেখে, যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। মানবিকতার খাতিরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সে দিনের ঘটনায় একটি মামলা শুরু করা হয়েছে। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই মামলায় চার্জশিট পেশ করা হবে। এ ভাবে উড়ো ফোন করে বোমা রাখার খবর দিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীকে যে ভাবে হয়রান করা হচ্ছে, তা কঠোর হাতে মোকাবিলা করতে চায় পুলিশ।
এ দিনও উড়ো ফোনটি বিমানবন্দরের আসার পরেই শুরু হয় তল্লাশি। বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত বলেন, ‘‘খবর পেয়েই নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। এই ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) মেনে যা যা করার কথা, করছে।’’
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যদিও এ দিনের ফোনের ধরন দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে এটি উড়ো ফোন, তবুও এ ধরনের হুমকি এলে কোনও ভাবে ঝুঁকি নেওয়া যায় না। এ দিন সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে গিয়ে স্নিফার ডগ ও মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে টার্মিনালের ভিতরে তল্লাশি চালান। টার্মিনালের ভিতরে সন্দেহভাজন কেউ রয়েছে কি না তা দেখার জন্য সাদা পোশাকে ঘুরেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এ দিন যে সব যাত্রী বিমানবন্দরে ঢুকেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেরই মালপত্র মেশিনে পরীক্ষা করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের পার্কিং-এ ঢোকা প্রতিটি গাড়ি এ দিনও তল্লাশি করা হয়। বিমানবন্দরের জন্য বোমা-বিশারদ ‘বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল স্কোয়াড’ (বিডিডিএস) রয়েছে। এ দিনও সেই দলকে কাজে লাগানো হয়। বিমানবন্দরের টার্মিনালের সামনে বেশিক্ষণ কোনও গাড়িকে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy