Advertisement
E-Paper

রঙাচ্ছন্ন উন্মাদনায় উদ্‌যাপন শুরু দোলের দু’দিন আগেই

সেই আচ্ছন্ন ভাব বুধবার সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের দিকে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দুর্গোৎসব, কালীপুজোর উচ্ছৃঙ্খলতার সঙ্গে তার মিল পাচ্ছেন অনেকে

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৯
উল্লাস: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মাইক বাজিয়ে বসন্ত উৎসব। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

উল্লাস: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মাইক বাজিয়ে বসন্ত উৎসব। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

উৎসব পালনের ধরন যেন ক্রমশই ‘রঙাচ্ছন্ন’!

সেই আচ্ছন্ন ভাব বুধবার সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের দিকে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দুর্গোৎসব, কালীপুজোর উচ্ছৃঙ্খলতার সঙ্গে তার মিল পাচ্ছেন অনেকে। দু’দিন আগে থেকেই শহরের ইতি-উতির চিত্রটা এমন হলে আজ, দোল উৎসবের দিন সেই বাঁধ ভাঙা ‘আনন্দ’ কোন পর্যায়ে পৌঁছবে, তা নিয়েই আশঙ্কায় তাঁরা। চিন্তায় খোদ পুলিশও। রঙের জুলুম রুখতে বাড়তি পুলিশি নজরদারির আশ্বাস দিচ্ছে তারা। সেই আশ্বাসে চিঁড়ে ভিজবে তো, প্রশ্ন তবু থেকেই যাচ্ছে অনেকের মনে।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সোমবারের দোল উৎসব ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। সেখানে এক পড়ুয়ার অসংলগ্ন অবস্থায় পড়ে থাকার ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। দোল উৎসব ঘিরে সেই একই পথে পা বাড়িয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। যে ক্যাম্পাসে বিগত বছরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠানের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, সেখানেই এ দিন তারস্বরে মাইক বেজেছে বলে অভিযোগ। দুপুরের পরে ভিড় বাড়ল ক্যাম্পাসের নানা ঘরে। সেখান থেকেই অসংলগ্ন অবস্থায় বেরিয়ে এসে নাচতে শুরু করলেন তরুণ-তরুণীদের কেউ কেউ। ক্যাম্পাসের ছাত্র নেতা মণিশঙ্কর মণ্ডল অবশ্য দাবি করলেন, ‘‘আমরা সতর্ক ছিলাম। বাইরের কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গান বাজানোর অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই।’’ গান বাজানো নিয়ে কথা বলতে ফোন করা হলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। টেক্সট মেসেজেরও উত্তর দেননি।

দোলে মেতেছে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা। বুধবার, দক্ষিণ কলকাতায়।

ক্যাম্পাসের উন্মাদনা দেখা গিয়েছে শহরের অন্যত্রও। বিকেলের পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোটরবাইকের দাপট। দু’দিন আগেই শেষ হওয়া কলকাতা পুলিশের পথ নিরাপত্তা সপ্তাহের প্রচারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তখন একটি বাইকে সওয়ার তিন জন। এ দিন দুপুরে বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে তিনটি মোটরবাইকে বেরিয়েছিলেন মোট আট জন। হেদুয়া পার্কের কাছে শরবতের দোকানে কিছু ক্ষণ সময় কাটিয়ে ফের বাইকে সওয়ার হলেন তাঁরা। বাইকচালককে পিছনে বসা এক জন সেই সময়ে বললেন, ‘‘ভাই পারবি তো? তোর তো বেশ কয়েক গ্লাস হয়ে গিয়েছে। সাবধানে!’’ শ্যামবাজার এলাকায় আবার একদল যুবক-যুবতীকে দেখা গেল, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি ছোটাচ্ছেন। ভিতরে তারস্বরে গান বাজছে। চালক ছাড়া চার জনের জায়গায় সেই গাড়িতে সওয়ার ছ’জন।

কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (১) জাভেদ শামিম অবশ্য দাবি করলেন, আশঙ্কার সে রকম কোনও কারণ নেই। প্রথম দিন ৭০০ পুলিশ পিকেটের পাশাপাশি রাস্তায় থাকবেন পাঁচ হাজার পুলিশকর্মী। পরদিন অর্থাৎ, শুক্রবার ছ’শো পিকেটের পাশাপাশি থাকছেন চার হাজার পুলিশকর্মী। সেই সঙ্গে মহিলাদের জোর করে রং মাখানোর উপরে বাড়তি নজর দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। সঙ্গে বাড়তি নজরদারি থাকছে ঘাটগুলিতেও।

নজরদারির এই আশ্বাসবাণী ত্রমেই ফিকে শোনায় সন্ধ্যার দিকে কলকাতা পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গোলমালের খবর আসার পরে। সেখানে সাফাইকর্মীদের কোয়ার্টার্সের দোল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। মত্ত অবস্থায় সেখানেই গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

‘রঙাচ্ছন্নদের’ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তো? প্রশ্ন তাই অব্যাহত...!

Holi 2019 Celebration Calcutta University Rabindra Bharati University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy