মর্মান্তিক: মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা সন্ধ্যা ঢালি। ঋতু রায় (ইনসেটে) বৃহস্পতিবার, বাঘা যতীনে। নিজস্ব চিত্র
মা ঠিক করেছিলেন, মেয়ে হলে নাম রাখা হবে তৃষা। তাঁর ইচ্ছেতেই সদ্যোজাতের নাম রেখেছেন বাড়ির লোকজন। তবে বাঘা যতীন রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা সেই শিশুকন্যার মা ঋতু রায় (১৮) আর বেঁচে নেই। সন্তান জন্মের পরে বুধবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতিতেই ঋতু মারা গিয়েছেন। সন্তান জন্মের পরে ঋতুকে দু’টি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার পরেই সুস্থ মেয়ের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত উঠে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
হাসপাতালের বিরুদ্ধে ঋতুর পরিবার নেতাজিনগর থানায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বাঘা যতীন হাসপাতাল থেকে ঋতুর মরদেহ ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। থানার এক আধিকারিক বলেন,
‘‘কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’’ বাঘা যতীন হাসপাতালের সুপার গৌরব রায় অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে বলেন, ‘‘এখন ব্যস্ত রয়েছি।’’
রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা পেশায় জুতোর শো-রুমের কর্মী রাজেশের সঙ্গে বিয়ে হয় ঋতুর। অন্তঃসত্ত্বা ঋতুকে প্রসবের জন্য মঙ্গলবার বাঘা যতীন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাজেশ জানান, চিকিৎসকেরা বলেছিলেন সিজার করতে হবে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঋতুর অস্ত্রোপচার হয়। রাজেশ বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে সব ঠিকই ছিল। একেবারে সুস্থ ছিল ঋতু আর মেয়ে। শয্যায় দেওয়ার পরে মেয়েকে দেখল মা। তার পরে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ হাসপাতাল থেকে ফোনে বলা হল, ঋতুর অবস্থা খারাপ।’’ রাজেশদের দাবি, হাসপাতালে নার্সেরা জানান, ঋতুকে দু’টি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। এর তিরিশ মিনিটের মধ্যেই শয্যায় ছটফট শুরু করেন ঋতু। এর পরেই তাঁর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত উঠতে শুরু করে বলে দাবি রাজেশের। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় তরুণীর। এ দিন মৃতদেহ পুলিশের গাড়িতে তোলার মুখে ঋতুর মা সন্ধ্যা ঢালি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘‘সুস্থ মেয়েটাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে মারল!’’ ঋতুর বাবা সুজন ঢালি বলেন, ‘‘সুপারের কাছে বহু বার গিয়েছি। কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, তা বলতে পারছেন না। আমরা আদালতে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy