Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ি ভাঙছে বড়বাজারে, অগ্নিযুদ্ধ জারি

৩৬ ঘণ্টা পরেও পুরোপুরি নেভানো গেল না আগুন। বুধবার সকালেও বড়বাজারের আমড়াতলা লেনে ওই বহুতলের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। দমকলের ছ’টি ইঞ্জিনকে কাজে লাগানো হয়। দমকল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাড়ির ছাদ ছাড়াও বিভিন্ন অংশ একের পর এক ভেঙে পড়ছে।

পারাপার: বড়বাজারের ভস্মীভূত সেই বহুতল থেকে দমকলের মইয়ের সাহায্যে পাশের বাড়িতে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বেঁচে যাওয়া মালপত্র। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

পারাপার: বড়বাজারের ভস্মীভূত সেই বহুতল থেকে দমকলের মইয়ের সাহায্যে পাশের বাড়িতে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বেঁচে যাওয়া মালপত্র। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

৩৬ ঘণ্টা পরেও পুরোপুরি নেভানো গেল না আগুন। বুধবার সকালেও বড়বাজারের আমড়াতলা লেনে ওই বহুতলের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। দমকলের ছ’টি ইঞ্জিনকে কাজে লাগানো হয়। দমকল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাড়ির ছাদ ছাড়াও বিভিন্ন অংশ একের পর এক ভেঙে পড়ছে। দমকলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ভিতরে জ্বলন্ত জিনিসের উপরে মেঝে বা ছাদের অংশ ভেঙে পড়ায় তার নীচে সেই আগুন চাপা পড়ে যাচ্ছে। ফলে দমকলকর্মীরা সেই আগুন নেভাতে পারছেন না।

এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা এসে ধ্বংসস্তূপ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। তাঁরা জানান, আগুন কী ভাবে লাগল, পরীক্ষার পরেই তা বোঝা যাবে। এ দিনও আগুন নেভাতে দমকলকর্মীরা হিমশিম খেয়েছেন। তিনতলায় যেখান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল, সেখানে জলের পাইপ নিয়ে পৌঁছতে পারছিলেন না তাঁরা। শেষ পর্যন্ত পাশের একটি বাড়ির রান্নাঘরের জানলা ভেঙে তিনতলায় জল দেওয়া শুরু হয়। ওই তিনতলার বাসিন্দা হুমা খান বলেন, ‘‘যেটুকু জিনিস বেঁচেছিল, ঘরের মেঝে ভেঙে পড়ায় তা-ও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

এ দিকে, বাড়িটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ভাঙা নিয়ে ফাঁপরে পড়েছে পুরসভা। সঙ্কীর্ণ, ঘিঞ্জি ওই গলিতে পোড়া বাড়িটির পাশেই রয়েছে অসংখ্য বাড়ি। তাই বাইরে মই লাগিয়ে ওই মেরামতি সম্ভব নয়। আবার বাইরে থেকে ভাঙতে গেলেও যে কোনও সময়ে গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে অন্যান্য বাড়ির ক্ষতি করতে পারে।

সোমবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের পরে বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা ওই বাড়িটির প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়িটির ভিতরে কাঠামো বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। সিঁড়ির পরে ছাদ ও দোতলার মেঝেও ভেঙে পড়েছে। বিল্ডিং দফতরের এক কর্মী জানান, সদর দরজা দিয়ে উপরের দিকে তাকালে আকাশ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। বিল্ডিং বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল (২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই বাড়ির কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। পুরোটাই ভেঙে ফেলতে হবে। তবে, সামনে থেকে ভাঙা সম্ভব নয়। নিরাপত্তার জন্য ভিতর থেকে ভাঙতে হবে।’’

পুরসভার বিল্ডিং দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় একশো বছরেরও বেশি পুরনো ওই বাড়ি শুধুই ইটের গাঁথনি দিয়ে তৈরি। পুরনো খিলানওয়ালা ওই বহুতলে ছিল কাঠের কড়িবর্গা। আগুনে যা পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে কাঠামো নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় যে কোনও সময়েই বাড়িটি ভেঙে পড়তে পারে। মেঝে ছাড়াও এই বাড়ির কার্নিস, জানলা ও দরজার কিছু কিছু অংশ ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।

কবে থেকে পুরসভা এই বাড়ি ভাঙতে শুরু করবে? দেবাশিসবাবু জানান, আগুন পুরো নিভলে তবে দমকল বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেবে। তার পরে ভাঙার কাজ হবে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে কয়েক জন ওই বাড়িতে ঢুকে নিজেদের মালপত্র বার করতে যান। পুলিশ ও দমকলকর্মীরা তাঁদের বাধা দিলে সামান্য উত্তেজনা ছড়ায়। পরে অবশ্য বাড়ির একতলার একটি অক্ষত গুদাম থেকে কিছু কিছু মালপত্র বার করতে সাহায্য করে পুলিশ ও দমকল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burrabazar Fire Under Control
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE