Advertisement
E-Paper

মুরগির ঠ্যাঙে ব্যাক্টেরিয়া, বিষ ক্ষীরেও

দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান রবিবার বলেন, ‘‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি। এ তো খাবার নয়, পয়সা দিয়ে মানুষ বিষ কিনে খাচ্ছেন!’’ কিন্তু এ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? চেয়ারম্যান জানান, অভিযান ইস্তক রেস্তোরাঁ বন্ধ।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০১:৪৮
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

চোখে দেখেই বোঝা গিয়েছিল, মজুত করা খাবার পচা ও বাসি। পশ্চিমবঙ্গ জনস্বাস্থ্য পরীক্ষাগারের (খাবার ও জল) রিপোর্টও বলছে, দমদমের মতিঝিল রোডের সেই রেস্তোরাঁর খাবার ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়ায় ভর্তি, স্বাস্থ্যের পক্ষেও আদৌ নিরাপদ নয়।

রিপোর্ট বলছে, ওই রেস্তোরাঁর খোয়া ক্ষীরে মিলেছে ফর্মালিনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক! যা ব্যবহার করা হয় মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য। খদ্দেরের পাতে পড়ার জন্য তৈরি ‘রেডি টু ইট’ মুরগির ঠ্যাঙে পাওয়া গিয়েছে কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া। যা সাধারণত মানুষের মলের সংস্পর্শে তৈরি হওয়ার কথা।

কনভেন্ট লেনে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের অধীন পরীক্ষাগার এই রিপোর্ট দিয়েছে। শুক্রবার তা পেয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা ও রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি)। ১৯ মে পুরসভা ও ইবি অভিযান চালিয়েছিল ওই রেস্তোরাঁয়। তখনই চোখে পড়ে মজুত রাখা প্রচুর উচ্ছিষ্ট খাবার, মরা মাছি-আরশোলার অস্তিত্ব প্রকট পানীয় ও খাবারে। খোয়া ক্ষীর ও রান্না করা মুরগির নমুনা ওই দিনই পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষাগারে।

আরও পড়ুন: বাড়িতে বসেই টাটকা মাছ, পৌঁছে দেবে নিগম

দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান রবিবার বলেন, ‘‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি। এ তো খাবার নয়, পয়সা দিয়ে মানুষ বিষ কিনে খাচ্ছেন!’’ কিন্তু এ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? চেয়ারম্যান জানান, অভিযান ইস্তক রেস্তোরাঁ বন্ধ। ইবি-র এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘মালিক সুইডেনে আছেন। সম্ভবত অভিযানের খবর পেয়েই আর ফিরছেন না। ওঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে।’’


বিপজ্জনক পরীক্ষাগারের দেওয়া সেই রিপোর্ট। নিজস্ব চিত্র

রিপোর্ট অনুযায়ী, রান্না করা মুরগিতে কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া মিলেছে প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ২০০টি, স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া প্রতি মিলিলিটারে ২০টি। মিলেছে ইস্ট ও ক্ষতিকর জৈবকণা মোল্ড-ও। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ওই মুরগির ঠ্যাঙ ব্যাক্টেরিয়া দূষণে আক্রান্ত এবং নিরাপদ খাদ্যের কথা ভাবলে বিষয়টি উদ্বেগজনক।

আবার খোয়া ক্ষীরের যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাতেও মিলেছে প্রচুর কলিফর্ম। ওই খোয়া ক্ষীরে অম্লের পরিমাণও বিপজ্জনক মাত্রায় বেশি। ক্ষীরে পাওয়া ছত্রাক জীবন্ত তো বটেই, তারা স্পোর নামে কাঠামোও তৈরি করে ফেলেছে দীর্ঘ দিন বেঁচেবর্তে থাকার জন্য। তার উপর দেওয়া হয়েছে ফর্মালিন। রিপোর্টে ওই খোয়া ক্ষীরকে নিরাপদ নয় বলেই জানানো হয়েছে।

রাজ্য সরকারি একটি সংস্থার এক প্রবীণ বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘মাছে দেয় জানতাম, খোয়া ক্ষীর তাজা রাখতেও ফর্মালিন দিচ্ছে! মানুষ খাবে কী!’’

formalin toxic formalin restaurant Food Preservation West Bengal Public Health Laboratory পশ্চিমবঙ্গ জনস্বাস্থ্য পরীক্ষাগার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy