E-Paper

পণের দাবিতে বধূকে খুনের অভিযোগ, ধৃত স্বামী

মৃতার বাবা জামাইয়ের মা, মামা ও মামিমার বিরুদ্ধেও পুলিশে অভিযোগ করেছেন। বেলেঘাটা থানা ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৯
ধৃতের নাম দিবাকর ধর।

ধৃতের নাম দিবাকর ধর। — প্রতীকী চিত্র।

ছ’মাস আগে বিয়ে হয়েছিল তরুণীর। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার চলত তাঁর উপরে। মা-বাবাকে সে কথা জানিয়েওছিলেন মেয়ে। সোমবার গভীর রাতে তরুণীর স্বামী শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানান, তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। তরুণীর বাবা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ছুটে গিয়ে দেখেন, তাঁর মৃতদেহ মেঝেয় পড়ে আছে। মৃতার নাম
তুলিকা ধর (৩০)। তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে বেলেঘাটা থানার পুলিশ জামাইকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম দিবাকর ধর। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। মৃতার বাবা জামাইয়ের মা, মামা ও মামিমার বিরুদ্ধেও পুলিশে অভিযোগ করেছেন। বেলেঘাটা থানা ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলেঘাটার কে জি বসু সরণি এলাকায় পাশাপাশি বাড়ি দিবাকর ও তুলিকার। বছর দেড়েক আগে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। মাস ছয়েক আগে বিয়ে করেন তাঁরা। এ দিন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে তুলিকার বাবা গৌতম মিত্র বলছিলেন, ‘‘ছ‘মাস আগে বিয়ে হয়েছিল ওদের। বিয়ের দশ দিন পর থেকেই দু‘জনের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। মেয়ের সামনেই রাতে অন্য মেয়েদের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলত জামাই। এটা মেয়ে মেনে নিতে পারেনি। শুধু তা-ই নয়, মেয়েকে বাড়ি থেকে মোটা টাকা নিয়ে যেতে চাপ দিত।’’ পাশাপাশি বাড়ি হলেও তুলিকা মা-বাবার বাড়িতে যেতে পারতেন না বলে অভিযোগ। ফোনে মাকে লুকিয়ে স্বামীর অত্যাচারের ঘটনা শোনাতেন মেয়ে।

পেশায় বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী গৌতমের দুই মেয়ে। বড় জন তুলিকা। ছোট
মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। গৌতম জানান, সোমবার রাত ১২টা নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে ছুটে এসে জামাই বলতে থাকেন, তুলিকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গৌতম ছুটে গিয়ে দেখেন, মেঝেয় মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। গলায় ওড়নার ফাঁস। তাঁর অভিযোগ,
‘‘ওরা পুলিশকে বলেছে, আগে মেয়ে গলায় ওড়না বেঁধে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেছে। পরে বাড়ির লোকজন মিলে দেহ নামিয়েছে। আমাদের সাফ কথা, ও (দিবাকর) মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করে আত্মহত্যার তত্ত্ব সাজাচ্ছে।’’ গৌতমের পাশে বসে থাকা স্ত্রী অঞ্জনা শুধু বলছিলেন, ‘‘ওরা আমার ফুটফুটে মেয়েটাকে মেরে ফেলল।’’

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, দিন সাতেক আগে তুলিকার সঙ্গে তাঁর স্বামীর প্রবল
ঝামেলা শুরু হয়েছিল। মেয়ের বাবার অভিযোগ, ‘‘এমনিতেই ওদের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। মেয়ের ফোনটা খারাপ হওয়ায় ও জামাইকে একটা নতুন ফোন কিনে দিতে
বলে। সে কথা বলায় উল্টে মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করেছে। মেয়ে সেই ঘটনার কথা আমাদের জানিয়েছিল। ফোন কেনার বিষয়টি নিয়ে অশান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়।’’ মৃতার বাবা-মায়ের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ পুরো ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের কঠোর সাজা দিক। ধৃত দিবাকরকে আজ, বুধবার আদালতে তোলা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mysterious death Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy