Advertisement
E-Paper

ছেলে বিজেপিতে বলেই স্টুডিয়োয় কোপ, অভিযোগ

চেতলা থানা এলাকার আলিপুর রোডের ফুটপাতে মঙ্গলবার দুপুরে যে কাঠামোটি ভাঙা হয়, সেটির মালিক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৯
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

শিল্পীর দাবি, বিগত ৪০ বছর ধরে তিনি ফুটপাতে বাঁশের কাঠামো দিয়ে তৈরি একটি স্টুডিয়োয় প্রতিমা তৈরি করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল সাফাই বিভাগের কর্মীরা বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে গিয়ে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন সেই স্টুডিয়ো। পুরসভার বক্তব্য, ওই কাঠামোটি বেআইনি। তাই তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যদিও এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙে ফেলা স্টুডিয়োর পাশেই ফুটপাত জুড়ে রয়েছে আরও কিছু বেআইনি নির্মাণ। সেগুলির কোনওটাতেই অবশ্য প্রশাসনের হাত পড়েনি। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘ওই স্টুডিয়ো মেয়রের নির্দেশে ভাঙা হয়েছে। যা জিজ্ঞাসা করার, মেয়রকে করুন।’’

চেতলা থানা এলাকার আলিপুর রোডের ফুটপাতে মঙ্গলবার দুপুরে যে কাঠামোটি ভাঙা হয়, সেটির মালিক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তিনি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রাক্তন সহায়ক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা। অনির্বাণ দিন কয়েক আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ দিন তাঁর স্টুডিয়ো ভাঙা প্রসঙ্গে বাপ্পাবাবু বলেন, ‘‘আমি এক জন শিল্পী। আমার কোনও রং নেই। ৪০ বছর ধরে এখানেই প্রতিমা তৈরি করেছি। কিন্তু কোনও নোটিস ছাড়াই অন্যায় ভাবে আচমকা আমার স্টুডিয়ো ভেঙে দেওয়া হল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলে সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তার বদলা নিতেই এই কাণ্ড ঘটালেন মেয়র।’’

তবে ওই স্টুডিয়োটি যে বেআইনি ছিল, তা মেনে নিয়েছেন শিল্পী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ফুটপাতে ওই ভাবে স্টুডিয়ো তৈরি করা যে বেআইনি, তা মানছি। কিন্তু শহর জুড়ে, এমনকি আমার স্টুডিয়োর পাশেই তো এমন আরও বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। তা হলে সেগুলি ভাঙা হচ্ছে না কেন?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত ১৯ জুলাইও পুলিশ নিয়ে

পুরসভার কর্মীরা আমার স্টুডিয়ো ভাঙতে এসেছিলেন। কিন্তু পাড়ার লোকজন আপত্তি জানানোয় সে দিন ওঁরা ফিরে যান। আমি অনুরোধ করেছিলাম, সামনেই পুজোর মরসুম। স্টুডিয়ো ভেঙে ফেললে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। কিন্তু আমার কথাই কানেই তোলা হল না।’’

এ বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তা বেজে যায়। পরে এসএমএসের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ফুটপাতের উপরে থাকা দোকানটি বৈধ, না কি জবরদখলকারী, তা আমার জানা নেই।’’ এর পরে ফের তাঁকে এসএমএস করে জানতে চাওয়া হয়, ওই স্টুডিয়োটি জবরদখল করে ছিল ঠিকই। কিন্তু সেখানে তো এমন আরও একাধিক বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। তা হলে সেই সমস্ত নির্মাণ কেন ভাঙা হল না? এর উত্তরে মেয়রের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হলে তা আমি কী করে আটকাব?’’ তাঁর প্রাক্তন সহায়ক গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতেই কি এই সিদ্ধান্ত? মেয়র অবশ্য এর কোনও জবাব দেননি।

বাবার স্টুডিয়ো ভেঙে দেওয়ায় মেয়রের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনির্বাণও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘চল্লিশ বছর ধরে বাবা যে স্টুডিয়োটি চালালেন, সেটি রাতারাতি ভেঙে ফেলার কোনও অর্থ খুঁজে পাচ্ছি না। আমার বিরুদ্ধে বদলা নিতেই বাবাকে এমন শাস্তি দেওয়া হল।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এক জন শিল্পীর স্টুডিয়ো ভাঙতে যে ভাবে বুলডোজার আর পুলিশবাহিনী নিয়ে আসা হয়েছিল, তাতে মনে হচ্ছিল, বাবা যেন বিশাল কোনও ফৌজদারি অপরাধ করে ফেলেছেন!’’

এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি (সাউথ) মিরাজ খালিদ শুধু বলেন, ‘‘নির্মাণ ভেঙেছে কলকাতা পুরসভা। ওরা পুলিশের সহায়তা চেয়েছিল। তাই পুলিশ ছিল।’’

BJP Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy