প্রতীকী ছবি।
সে এক দিকে পাত্রপক্ষ। কখনও কন্যাপক্ষ। আবার কখনও সে-ই ঘটক!
বিভিন্ন চরিত্রে ‘অভিনয়’ করে শ’পাঁচেক লোকের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল সে। নাম ভাঁড়িয়ে দীর্ঘ দিন লুকিয়ে ছিল। শেষমেশ অবশ্য রাজ সরকার নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
কী ভাবে এত রকম ভূমিকা পালন করত অভিযুক্ত?
পুলিশ জানিয়েছে, মাঝবয়সি রাজ সংবাদপত্রে কখনও পাত্রী, কখনও পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিত। সঙ্গে থাকত একটি মোবাইল নম্বর। পাত্র বা পাত্রীর তরফে ফোন করা হলে অধিকাংশ সময়ে রাজ নিজেই ফোন ধরত। পুলিশ জানিয়েছে, বিজ্ঞাপন দেখে ডিসেম্বর মাসে রাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিউ আলিপুরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মী।
ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, তিনি বিজ্ঞাপনে থাকা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে এক জন জানায়, তার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। সে অভিযোগকারীকে ‘পতি পাত্র’ নামে এক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে বলে, তারাই তার ছেলের বিয়ে ঠিক করেছে। তিনি সেখানে যোগাযোগ করলে তাঁর মেয়ের যোগ্য পাত্র মিলবে।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, সরকারি ওই কর্মী ‘পতি পাত্রে’ যোগাযোগ করলে এক প্রতিনিধি তাঁর বাড়িতে যায়। মেয়ের নাম নথিভুক্ত করার জন্য সাড়ে সাত হাজার টাকা চায়। বলে, টাকা পেলে পাত্রপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবে। ওই প্রতিনিধিকে বিশ্বাস করে সাড়ে সাত হাজার টাকা দেন অভিযোগকারী। কিন্তু অভিযোগ, টাকা নেওয়ার পরেই মোবাইল নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রতারিত হয়েছে বুঝতে পেরে ওই ব্যক্তি নিউ আলিপুর থানার দ্বারস্থ হন।
তদন্তে নেমে বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল নম্বরের কল-লিস্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাজের সন্ধান পায়। পুলিশের দাবি, ওই যুবক নিজেই বিজ্ঞাপন দিত। তার ‘টার্গেট’ ছিল পয়সাওয়ালা পাত্রী। তাঁদের তরফে ফোন করা হলে বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে জানিয়ে রাজ ভুয়ো সংস্থা ‘পতি পাত্র’র নম্বর দিত। সেখানে ফোন করলে নিজেই কথা বলত। পরে প্রতিনিধি পাঠিয়ে টাকা আদায় করে ফোন বন্ধ করে দিত।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, গত এক বছরে এ ভাবে প্রায় ৫০০ জনের থেকে সাড়ে সাত হাজার-দশ হাজার টাকা আদায় করেছে অভিযুক্ত। তার সঙ্গে থাকা অন্যদের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy