Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Gas Cylinder Blast

খাবারের দোকানে অগ্নি-বিধি মানার বালাই নেই দমদমে, উঠছে প্রশ্ন 

প্রশ্ন উঠছে, পর পর এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও রাস্তার ধারের দোকানদারেরা সচেতন হয়েছেন কি? বাস্তব ঘটনাপ্রবাহ অবশ্য বলছে, দোকানদারেরা এখনও অগ্নি-সুরক্ষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া সম্পর্কে নিরুত্তাপ।

An image of blast

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪১
Share: Save:

সম্প্রতি কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লিতে রাস্তার ধারে একটি খাবারের দোকানে আগুন এবং তা থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার কিছু দিন পরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার অধীন কালিন্দীতে আগুনে ভস্মীভূত হয় একটি দোকান। তার কাছেই একটি গুদামে মজুত করা ছিল অসংখ্য থার্মোকলের বাক্স। সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারত বলে মনে করছেন বাসিন্দারাই। এই দু’টি ঘটনার আগে, দক্ষিণ দমদমেই রাস্তার ধারের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছিল।

প্রশ্ন উঠছে, পর পর এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও রাস্তার ধারের দোকানদারেরা সচেতন হয়েছেন কি? বাস্তব ঘটনাপ্রবাহ অবশ্য বলছে, দোকানদারেরা এখনও অগ্নি-সুরক্ষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া সম্পর্কে নিরুত্তাপ। পুর প্রশাসনের যদিও দাবি, এই বিষয়ে পর্যালোচনা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। আপাতত ব্যবসায়ীদের সচেতন করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

তিন দমদমের বেশ কিছু স্টেশন সংলগ্ন এলাকা-সহ গোরাবাজার, নাগেরবাজার ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্না করা হচ্ছে। সেই সব খাবার বিক্রি হচ্ছে। অথচ অগ্নি-নির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা নেই কোথাওই। ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, অধিকাংশ খাবার হোটেলে একটি মাত্র অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। দমদমের এক বাসিন্দা সুস্মিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্টেশন সংলগ্ন দোকানগুলিতে প্রতিদিন খাওয়াদাওয়া করেন প্রচুর মানুষ। এলাকাটা অত্যন্ত জনবহুল। অথচ, উপযুক্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। সামান্য অসতর্কতায় আগুন লাগলে বড় অঘটন ঘটে যেতে পারে।’’ যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই ব্যবসা করেন। তবে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র কেনার সামর্থ্য তাঁদের নেই বলে দাবি করেছেন ওই ব্যবসায়ীরা।

এটা যদি হয় খাবারের দোকানগুলির চিত্র, তবে এর পাশাপাশি রয়েছে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় দোকান বা গুদামে দাহ্য বস্তু মজুত করে রাখার প্রবণতা। যেমনটা দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার কালিন্দীর অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে।

উত্তর দমদম পুরসভার এক কর্তা জানাচ্ছেন, ব্যবসায়ীরা যাতে কঠোর ভাবে অগ্নি-বিধি মেনে চলেন, সেই বিষয়ে তাঁদের নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে। তবে এ জন্য পুর কর্তৃপক্ষের তরফে নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্টও মেনে নেন যে দোকানগুলিতে অগ্নি-সুরক্ষায় জোর দিতে এ বার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

কিন্তু বাসিন্দাদের প্রশ্ন, সব দোকানে যথাযথ অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কি না কিংবা দোকান বা গুদামগুলিতে দাহ্য বস্তু মজুত রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে কি পুর প্রশাসন অবগত?

দক্ষিণ দমদমের পুরকর্তাদের একাংশ স্বীকার করেছেন, তাঁদের কাছে এমন বিষয়ের প্রাথমিক তথ্য আছে। তবে দোকানগুলিতে দৈনন্দিন নজরদারি চালানো হয় না। কারণ, সে জন্য যে ধরনের পরিকাঠামো বা লোকবল দরকার, পুরসভার সেটা নেই। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী জানাচ্ছেন, রান্না করে এমন রাস্তার ধারের দোকানগুলির প্রতি নজরদারি বাড়ানো এবং তাদের অগ্ন-সুরক্ষা মানাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE