Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জাদুঘর-কাণ্ডে মিথ্যাচারের অভিযোগ চিঠিতে

এক নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ওই তরুণী গত ২ জুলাই নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, সে দিন জাদুঘরে ঢুকতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে বাধা দেন।

ভারতীয় জাদুঘর।—ফাইল চিত্র।

ভারতীয় জাদুঘর।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

ভারতীয় জাদুঘরের অস্থায়ী কর্মীকে যৌন হেনস্থা করার যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করছে নিউ মার্কেট থানা ও জাদুঘরের ‘ইন্টারনাল কমপ্লেন্টস কমিটি’। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানোয় তাঁকে চিঠিতে এমনই উত্তর দিলেন জাদুঘরের প্রশাসনিক অফিসার। সূত্রের খবর, অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিতের নির্দেশেই ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক অফিসারের এই উত্তরের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন জাদুঘরকর্মীদের একাংশ। এ বিষয়ে অধিকর্তা বলেন, ‘‘যা জানার, ইন্টারনাল কমপ্লেন্টস কমিটির কাছ থেকে জেনে নিন।’’

‘ইন্টারনাল কমপ্লেন্টস কমিটি’ (আইসিসি) এ বিষয়ে তদন্ত করবে না বলে আগেই জানিয়েছিল অভিযোগকারিণীকে। সূত্রের খবর, কমিটির চেয়ারপার্সন দীপা মজুমদার জানিয়েছিলেন, ওই তরুণী একটি সংস্থার মাধ্যমে ভারতীয় জাদুঘরে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। তাই এই তদন্ত তাঁরা করতে পারবেন না। কারণ, আইসিসি শুধুমাত্র জাদুঘরের স্থায়ী কর্মীদের বিষয়ে তদন্ত করতে পারে! দীপা অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে সোমবার বলেন, ‘‘ওই তরুণীর অভিযোগের পুরোটাই বানানো।’’

ওই তরুণীর প্রশ্ন, আইসিসি তদন্তে অপারগ হলে অধিকর্তা তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিবকে আইসিসি তদন্ত করছে বলে জানালেন কেন? অধিকর্তা কি তা হলে কেন্দ্রকে মিথ্যা রিপোর্ট জমা দেবেন?

এক নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ওই তরুণী গত ২ জুলাই নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, সে দিন জাদুঘরে ঢুকতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে বাধা দেন। অথচ, তিনি ২০১৮ সাল থেকে সেখানে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। পরে তিনি তাঁকে আটকানোর কারণ জানতে অধিকর্তার কাছে যেতে চাইলে কয়েক জন মহিলা কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষী মিলে তাঁকে চুলের মুঠি ধরে বার করে দেন বলে অভিযোগ।

তরুণী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছিলেন, জুন মাসে অধিকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। সেই ‘অপরাধেই’ সে দিন তাঁকে ওই ভাবে মারধর করা হয়েছিল। অথচ, যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি আইসিসি। মারধরের অভিযোগ নিয়েও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এ বিষয়ে আবার কেন্দ্রকে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে, ওই দিন তরুণীকে আদৌ মারধর করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে সিকিওরিটি অফিসারকে।

কিন্তু এ ক্ষেত্রেও মন্ত্রককে মিথ্যা বলা হয়েছে বলে অভিযোগ। কারণ সূত্রের খবর, অধিকর্তাই সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিসিটিভি ফুটেজ দেখার দায়িত্ব সিকিওরিটি অফিসারের হাত থেকে নিয়ে এক দোভাষীকে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রককে

কী করে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ পরপর ‘ভুল’ তথ্য দিচ্ছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ২ তারিখের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE