অনলাইনে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সাত যুবককে গ্রেফতার করল বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ। ধৃতদের নাম সারঙ্গ শেখর, ফিরদৌস হক, টোটন হক, প্রসেনজিত্ মান্না, সৈকত মিত্র, ওয়াসিম আহমেদ, সাজিদ আহমেদ। অভিযোগ, গ্রাহকদের কম্পিউটারে অ্যান্টি-ভাইরাস লাগিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনলাইন পেমেন্টের সময়ে জালিয়াতি করে কার্ড থেকে বেশি টাকা কেটে নিত ধৃতেরা। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে ইন্টারপোল ও সিবিআই-এর আধিকারিকদের। বিদেশের কিছু গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে তারাই বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকে এ বিষয়ে খবর দেয়।
কী ভাবে চলত এই আন্তর্জাতিক প্রতারণা-চক্র?
তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্তেরা ছোট ছোট বিপিও খুলে প্রতারণা চালাত। তিনটে বিপিও ছিল সল্টলেকের সি জে ব্লকে ও একটি ছিল আড়িয়াদহে। সারঙ্গ, ফিরদৌস ও প্রসেনজিত্ এই সমস্ত বিপিও-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিল। এই সংস্থার গ্রাহক ছড়িয়ে ছিলেন ইংল্যান্ড, মালয়েশিয়া এমনকী বাংলাদেশেও। বিদেশে ওই সংস্থার হয়ে এজেন্টের কাজ করতেন কয়েক জন যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, বিদেশি গ্রাহকদের অনলাইনে কম্পিউটারের অ্যান্টি-ভাইরাস বিক্রি করত ধৃতেরা। এর পরে যখন গ্রাহক ডেবিড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পেমেন্ট করতেন, তখন নির্ধারিত অঙ্কের পিছনে একটা শূন্য যোগ করে দিত অভিযুক্তেরা। যা গ্রাহক বুঝতেই পারতেন না। তদন্তকারীদের দাবি, এই জালিয়াতি চক্রের কাছে এমন একটা সফ্টওয়ার ছিল, যা দিয়ে নির্দিষ্ট অঙ্কের পিছনে শূন্য বসানো যেত। যখন গ্রাহক বিষয়টি বুঝতে পেরে ব্যাঙ্কে পেমেন্ট বন্ধ করতে বলতেন, ততক্ষণে সংস্থার বিদেশে থাকা এজেন্টরা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিত। এই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে দেশে আসত বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।
বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে বিপিও অফিস থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, সাতটি দামি মোবাইল ও দু’লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। আর কোথায় কোন অ্যাকাউন্টে টাকা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, “অভিযুক্তেরা দেড় থেকে দু’বছর ধরে এই কাজ করত। তাদের এজেন্টদেরও খোঁজ চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে এজেন্টরাও প্রতারণার কাজে মোটা অঙ্কের টাকা ধৃতদের থেকে নিত।” পুলিশ জানিয়েছে, ফিরদৌস হক, টোটন হক ও প্রসেনজিত্ মান্নাকে আট দিনের জন্য পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy