Advertisement
E-Paper

স্বামীকে খুনের পিছনে কি রয়েছে অন্য কোনও কারণ? ধন্দে পুলিশও

বারাসতের অনুপম সিংহ খুনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি রয়েছে কি না, এ বার তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। অনুপমকে খুনের পিছনে স্ত্রী মনুয়া মজুমদারের তিনটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক, স্বামীর প্রতি বিদ্বেষ। দুই, প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে সম্পর্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০২:১৩
স্বামীর সঙ্গে মনুয়া। ছবি অনুপমের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

স্বামীর সঙ্গে মনুয়া। ছবি অনুপমের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

বারাসতের অনুপম সিংহ খুনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি রয়েছে কি না, এ বার তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। অনুপমকে খুনের পিছনে স্ত্রী মনুয়া মজুমদারের তিনটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক, স্বামীর প্রতি বিদ্বেষ। দুই, প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে সম্পর্ক।

তিন, বাধাহীন নিজের মতো জীবনযাপনের ইচ্ছে।

অজিত ব্যক্তিগত ভাবে তেমন কিছুই রোজগার করত না। তার জীবনযাপনও ছিল অত্যন্ত সাদামাটা। ফলে তার সঙ্গে ঘর বাঁধার লোভে মনুয়ার মতো ‘স্টেটাস’ প্রিয় মহিলা ‘বিত্তবান, ভাল মানুষ’ অনুপমকে কেন ছাড়বে, সে প্রশ্ন উঠেছে। অন্য কারও জন্য অথবা বাধাহীন জীবনযাপনের জন্য অজিতকে প্রেমে ফাঁসিয়ে খুনে ব্যবহার করা হয়েছে কি না, পুলিশকে ভাবাচ্ছে এ প্রশ্ন। মনুয়া ও অজিতকে আলাদা আলাদা করে জেরার ভিত্তিতে পাওয়া কিছু তথ্যই এই ধন্দের কারণ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, অনুপমকে খুনের পরে তাঁর সমস্ত টাকা-পয়সা হাতানোর ইচ্ছে ছিল মনুয়ার। তাই খুনের পরে তার উপরে যাতে কোনও সন্দেহ না হয়, সেই চেষ্টা করেছিল সে। বিয়ের পরে অনুপমের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ‘নমিনি’ হিসেবে ছিল মনুয়াই। বিত্তবান স্বামী অনুপমের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হাতানোর টোপও মনুয়া দিয়েছিল প্রেমিক অজিতকে। মনুয়া ও অজিতকে জেরার পরে সোমবার এ কথাই জানিয়েছে পুলিশ।

অনুপমের বাড়ি ‘সিল’ করে রেখেছে পুলিশ। সেই বাড়ি থেকে একটি ভিডিও সিডি উদ্ধার হয়েছে। বিয়ের পরপরই উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের একটি বাগান বাড়িতে বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের সঙ্গে পিকনিকে যান অনুপম-মনুয়া। সেখাকার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মনুয়া ও অনুপম বন্ধুদের কাছে একে অপরের দোষগুণ নিয়ে বলছে। মনুয়া বলছে, ‘‘আমার খুব বড় ফ্যামিলি। সেখানে অনুপম পারফেক্ট।’’ আবার অনুপম ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, ‘‘ও ছোটখাটো ব্যাপারে বাবা বা পরিবারের কারও সঙ্গে আমার তুলনা করে। আমি আমার মতো। বড় হওয়ার চেষ্টা করছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মনুয়াকেই ভালবেসে যাব।’’

অনুপমকে খুনের সময়ে তাঁর আর্ত চিৎকার ফোন চালু রেখে অজিতকে শোনাতে বলেছিল মনুয়া। পুলিশের দাবি, ভিডিও-র সেই কথাবার্তা ও খুনের সময়কার ফোনের কথার উল্লেখ করলেও অনুশোচনা দেখা যায়নি মনুয়ার মধ্যে। মনুয়া শুধু বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে। তবে অজিত জানিয়েছে, অনুপমের টাকা হাতানোর প্রস্তাবও মনুয়াই দিয়েছিল। বারাসত পুরসভায় শিক্ষা দফতরে চাকরিও পেয়েছিল মনুয়া। পুলিশ জেনেছে, মনুয়ার পরিবার এতটাই প্রভাবশালী যে শাসক দলের এক নেতার সাহায্যে পুরসভায় চাকরিও পেয়ে যায় সে। এই বিষয়টি নিয়ে বারাসতে কিছুটা রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। তবে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, মনুয়াকে কাজ থেকে বাদ দেওয়াই হতো। ঠিকমতো কাজে না আসার জন্য তাকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছিল।

murder Manua Majumdar motives Anupam Sinha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy