Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
Robbery

ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটে ধৃত দুই, পিছনে কি পরিচিত কেউ?

তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তদের সন্ধান পায় পুলিশ। এর পরে সোমবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

সিবিআই অফিসার সেজে ভবানীপুরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে নগদ ৩০ লক্ষ টাকা ও আট লক্ষ টাকার গয়না লুটের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পাশাপাশি, বাঁকুড়া থেকে আরও চার জনকে আটক করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে লুটে ব্যবহৃত একটি গাড়িও। তবে বাকি অভিযুক্তেরা এখনও অধরা। বাড়িতে ঢুকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে লুটপাটের ওই ঘটনার পিছনে ব্যবসায়ীর পরিচিত কেউ জড়িত থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ মঙ্গলবার এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে।

পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দু’জনের নাম রঞ্জন চৌধুরী ও শান্ত মোল্লা। তারা দু’জনেই হরিদেবপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। শান্ত নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বাসিন্দা হলেও ইদানীং হরিদেবপুরে থাকছিল। সোমবার রাতে হরিদেবপুর থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘নগদ ৩০ লক্ষ টাকা এবং আট লক্ষ টাকার গয়না লুট করা হয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক জন জড়িত। বাকিদের সন্ধান পেতে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’’

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সোমবার সকালে তিনটি গাড়িতে করে মোট ন’জন ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে যায়। তাঁর ঘরে ঢুকে প্রথমে জিএসটি ফাঁকি দেওয়ার কথা বলে। এমনকি, এর জন্য দিল্লি থেকে এক জন সিবিআই অফিসার এসেছেন বলেও ব্যবসায়ীকে জানিয়েছিল অভিযুক্তেরা। রঞ্জনকেই ব্লেজ়ার পরিয়ে দিল্লির সেই সিবিআই-কর্তা সাজানো হয়েছিল। এমনকি, তাদের কাছে বাড়ি তল্লাশির জন্য সার্চ ওয়ার‌্যান্ট আছে বলেও দাবি করেছিল অভিযুক্তেরা। এর পরেই তল্লাশির নামে আলমারি থেকে নগদ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা এবং আট লক্ষ টাকার গয়না হাতিয়ে নেয় তারা। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ছিল অভিযুক্তেরা। সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ ঢুকে ৯টা ৪০ নাগাদ বেরিয়ে যায় সকলে। লুটের ঘটনার ঘণ্টা চারেক পরে ভবানীপুর থানায় বিষয়টি জানান ওই ব্যবসায়ী।

তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তদের সন্ধান পায় পুলিশ। এর পরে সোমবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। ধৃতদের জেরা করে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, অপরাধের কাজে ব্যবহৃত তিনটি গাড়ির মধ্যে একটি রঞ্জনের। বাকি দু’টি গাড়ি অন্য কোথাও থেকে জোগাড় করা হয়েছিল। তবে, সেই দু’টি গাড়ির সন্ধান এখনও মেলেনি। উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া টাকা এবং গয়নাও। লালবাজারের এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অভিযুক্তদের দেখা গিয়েছে। এ ছাড়া, ওই ঘটনায় একাধিক জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। ধৃত ও আটকদের জেরা করলে তা অনেকটা পরিষ্কার হতে পারে।’’

এই ঘটনায় পরিচিত কারও যুক্ত থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে কোথায় টাকা রয়েছে, কোথায় গয়না রয়েছে, কার্যত সব তথ্যই অভিযুক্তদের কাছে ছিল বলে এক প্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। যা পরিচিত কারও যুক্ত থাকার সন্দেহকে আরও জোরালো করছে বলে তদন্তকারীদের একাংশের অভিমত। ধৃত ও আটকদের জেরা করে বাকি অভিযুক্তদের সন্ধান পাওয়ার পাশাপাশি এই ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Robbery Crime Bhawanipore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE