নেশামুক্তি কেন্দ্রের দোতলায় ২০ জন আবাসিক ছাড়া আর কেউ থাকেন না। অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে সেখানে যাওয়া তদন্তকারীদের সামনে এমনই দাবি করেছিলেন নেশামুক্তি কেন্দ্রের কর্মীরা। কিন্তু রাস্তায় পাহারায় থাকা এক পুলিশকর্মী দেখেন, বাড়ির ছাদ থেকে কেউ উঁকি মারছেন। সন্দেহ হওয়ায় তদন্তকারীরা ছাদের দরজার চাবি চাইলে কর্মীরা জানান, কোনও চাবি নেই। তখন পাশের বাড়ির ছাদ থেকে ওই কেন্দ্রের ছাদে পুলিশ পৌঁছলে সেখানে খোঁজ মেলে তালাবন্দি করে রাখা আরও আবাসিকের।
শুক্রবার বরাহনগরের ঘটনাটি। সেখানকার নিয়োগী পাড়া রোডে একটি গলির ভিতরে দোতলা বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়ম না মেনেই নেশামুক্তি কেন্দ্রটি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটি আগে কয়েক বার ওই কেন্দ্রে গেলেও কেউ দরজা খোলেননি। এ দিন বরাহনগর থানার পুলিশ বাহিনী নিয়ে সেখানে যান স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারীরা।
দরজা খুলতেই দোতলার একটি ঘরে ২০ জন পুরুষ আবাসিকের খোঁজ মেলে। পরে ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ১৬ জন পুরুষ আবাসিককে। দোতলার অন্য একটি ঘরে আলো জ্বলতে দেখে সেটির তালাও খোলায় পুলিশ। সেখানে ১০ জন মহিলা আবাসিককে আটকে রাখা হয়েছিল। মোট ৪৬ জন আবাসিকের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। সমস্ত কিছুর ভিডিয়ো করা হয়। নেশামুক্তি কেন্দ্র চালানোর লাইসেন্স না থাকা, আবাসিকদের ঠিক মতো খেতে না দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ নথিভুক্ত করেন তদন্তকারীরা। আবাসিক ও কর্মীদের রেজিস্টার মেলেনি।
উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘লাইসেন্স ছাড়া কোনও নেশামুক্তি কেন্দ্র চালানো যায় না। বরাহনগরের নেশামুক্তি কেন্দ্রের কিছু অনিয়ম নজরে এসেছে। এ সব নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ ওই কেন্দ্রের মালিক অভিষেক সিংহের দাবি, ‘‘প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেটের আবেদন করা আছে। নিয়ম মেনে ট্রেড লাইসেন্স-সহ অন্যান্য শংসাপত্র নিয়েই নেশামুক্তি কেন্দ্রটি চলছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)