Advertisement
E-Paper

WB municipal election 2022: লড়াই হল তৃণমূল বনাম তৃণমূলের, ফের কি ‘হট সিট’-এ, জল্পনা সব্যসাচীকে ঘিরে

সব্যসাচী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে না ফিরলে পরবর্তী মেয়র কে হবেন, সেই প্রশ্নটাই উঠত না। তিনিও এক সময়ে হট সিটে বসেছেন।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০০
ভোট দেওয়ার পরে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী  দত্ত, তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত ও (ডান দিকে) বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী।

ভোট দেওয়ার পরে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত, তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত ও (ডান দিকে) বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দু’হাজার নিয়ে ম্যাডাম বেরোলেন আগে। ১০টা বাজার একটু আগে দাদা বেরোলেন পাঁচ হাজার নিয়ে। দুটোই গাড়ির নম্বর। সব্যসাচী দত্তের বাড়ির সামনে তখনও দাঁড়িয়ে এক হাজার নম্বরের গাড়িটি।

গাড়ির এই নম্বরের বাইরে আরও কিছু বৈশিষ্ট ঘিরে থাকে সব্যসাচীকে। দিনের শেষে চেনা-পরিচিতেরা যখন শোনেন, সারা দিন খাওয়া হয়নি, তখন কেউ গাজরের হালুয়া, কেউ কেউ ধোকলা এগিয়ে দেন। তাঁদের একটা বড় অংশই অবাঙালি।

আর এ সব নিয়েই ফল্গুর চোরা স্রোতে নেমে পড়েন অহি। এই নামেই পুরনো সল্টলেক তাঁকে চেনে। বিধাননগরের বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গে সব্যসাচীর ‘সুসম্পর্ক’ বুঝতে এখন আর রকেট-বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। বিধাননগরের যাবতীয় চোরা স্রোতের মূলে এই ‘সুসম্পর্ক’। কোথাও বিজেপি, কোথাও সিপিএম খানিকটা লড়াই দিলেও, আসল লড়াইটা আজ তৃণমূল বনাম তৃণমূলেরই। অন্তত বিধাননগরে তো বটেই।

এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা দেবাশিস জানা এখন পদ্মফুল শিবিরে। আর তিনিই নেমেছেন সব্যসাচীর বিরুদ্ধে, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। নিন্দুকদের মতে, তিনি পদ্মফুলের সমর্থকদের চেয়েও বেশি সমর্থন পেয়েছেন তাঁদের, সব্যসাচী যাঁদের চক্ষুশূল। ‘ভোট করানোর কৌশল’ দু’জনেরই ভাল জানা আছে। চেনা শত্রু। একে অপরের দুর্বলতাও জানেন। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, দিনের শেষে তাঁরই হাসিই চওড়া হয়, প্রশাসন যাঁর সঙ্গে থাকে।

এ দিন সল্টলেকে পা দেননি সুজিত। তবে এখনও অনেক তৃণমূল প্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা তাঁরই অনুগত। তাঁরা জিতে এলে এবং তৃণমূল বোর্ড গড়লে ‘খেলা হবে’ স্লোগান পুরসভার অন্দরেই ঘুরতে পারে।

তৃণমূল জিতলে বিধাননগরের মেয়র কে হবেন, এই প্রশ্নটাও গা ভাসিয়েছে চোরা স্রোতে। বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীও প্রার্থী। এ দিন প্রত্যয়ী পদক্ষেপে ঘুরে বেড়ালেন। সকাল থেকে ভোটের হালহকিকত দেখে খুশি মনে দুপুরে এক বার বাড়িমুখো হলেন ছোট নাতিকে দেখতে।

সব্যসাচী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে না ফিরলে পরবর্তী মেয়র কে হবেন, সেই প্রশ্নটাই উঠত না। তিনিও এক সময়ে হট সিটে বসেছেন। বর্তমানে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর প্রতি সদয় বলেই খবর। যা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না কেউ কেউ।

সব্যসাচীর মতোই সল্টলেকের বহু দিনের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিতা মণ্ডল। তাঁর ও তৃণমূলের আর এক প্রার্থী তুলসী সিংহ রায়ের জনসংযোগ সুবিদিত। তবে অনিতার পথ যে খানিকটা কণ্টকাবৃত, তা নিজের মুখেই বলছেন তিনি। পরিচিতিই তাঁর অস্ত্র। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে সেই অস্ত্র নিয়েই ঘুরেছেন তৃণমূলের মিনু দাস চক্রবর্তী। তাঁর এলাকায় আজও সিপিএম নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়। এ দিনও বাদানুবাদে কেটেছে কিছুটা সময়। তবে দিনের শেষে স্বস্তির ছবিটা তিনিও মুখে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন।

তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে কৌতূহল বেশি সব্যসাচীর ওয়ার্ড ঘিরেই। তাঁর দিনযাপনের বৃত্তটা শেষ হয় বিকেল পাঁচটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ স্কুলে ভোট দিতে ঢুকেছিলেন সব্যসাচী। সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী কাকলি সাহা। ভোট দিয়ে সস্ত্রীক সব্যসাচী বাইরে বেরোনোর পরে সেখানে হাজির কৃষ্ণাও। পাশাপাশি দু’জনকে পেয়েই ছিটকে আসে সেই অমোঘ প্রশ্ন, কে হচ্ছেন পরবর্তী মেয়র?

সব্যসাচীর কাছ থেকে উত্তর আসে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট যা হয়, তাঁর নামেই তো হয়।”

Sabyasachi Dutta Bidhannagar Mayor WB Municipal Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy