ফাইল চিত্র।
যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় করে শুধু ওষুধ চালু করাই নয়। এর চিকিৎসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা। কারণ, চিকিৎসা চলাকালীন যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীর শরীরে কোনও প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই রোগী নজরে থাকলে সময় মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। বৃহস্পতিবার, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসে এমনটাই বলছেন বক্ষরোগ চিকিৎসকেরা।
২০২৫-র মধ্যে বাংলা থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। যক্ষ্মা চিহ্নিতকরণ থেকে রোগীকে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা, সচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি জেলা, মহকুমা, ব্লক এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যবস্থা নিতে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যক্ষ্মা রোগ দ্রুত নির্ণয় করে রোগীর চিকিৎসা শুরু করা যেমন জরুরি, তেমনই চিকিৎসা চলাকালীন তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখাটাও দরকার। পুরো প্রক্রিয়া যাতে ঠিকঠাক হয়, সে জন্য রোগীর সচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন।’’ রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা জানাচ্ছেন পালমোনোলজিস্ট দেবরাজ যশ। তিনি বলেন, ‘‘২০২২-এ দাঁড়িয়ে সন্দেহের বশে কখনই যক্ষ্মার ওষুধ চালু করা ঠিক নয়। তেমনই নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা চালু করার পরেও অনেক কাজ থেকে যায়। অনেক সময়ে রোগী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে প্রথমের দিকে ঠিক মতো ওষুধ খান না। তাতে সমস্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা থাকে।’’
যক্ষ্মা নির্ণয়ের পরে ওষুধ দিয়েই রোগীর প্রতি চিকিৎসকের দায়িত্ব শেষ হয় না বলেই জানাচ্ছেন পালমোনোলজিস্ট সুস্মিতা রায়চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘ছয় থেকে ন’মাস যত দিন চিকিৎসা চলবে, তত দিন নির্দিষ্ট সময় অন্তর দেখতে হবে রোগী ওষুধ সহ্য করতে পারছেন কি না, তাঁর ওজন বেড়ে যাচ্ছে কি না এবং যে লক্ষণগুলি প্রথমে ছিল, সেগুলি কতটা উন্নতি হয়েছে।’’
তিনি আরও জানাচ্ছেন, ওষুধ শেষ হওয়ার ছ’মাস পরে রোগীকে আবার পরীক্ষা করতে হয়, কারণ ঠিক মতো ওষুধ না খাওয়ার কারণে রোগ ফিরতে পারে।
চিকিৎসকেরা এটাও জানাচ্ছেন, আগে থেকেই যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাঁরা যক্ষ্মা আক্রান্ত হলে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। দেবরাজের কথায়, ‘‘ওই সমস্ত রোগী বা ওষুধ চালু করার দু-তিন সপ্তাহ পরেও যাঁদের কাশি বা জ্বরের লক্ষণ থেকে যায়, তাঁদের পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কারণ অনেক সময়ে আচমকাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গিয়ে শরীর নিজের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। যা অনেকটা সাইটোকাইন ঝড়ের মতো। অনেক সময়ে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে।’’ আবার ওষুধ চালু করার পরে যক্ষ্মা সেই ওষুধের প্রতিরোধী হয়ে উঠছে কি না, সেটাও পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। তা হলে বদলাতে হয় ওষুধও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy