Advertisement
০২ মে ২০২৪
Jadavpur University Convocation

রাজ্যপাল-উপাচার্য দ্বন্দ্বের আবহে সমাবর্তন শেষ হল যাদবপুরে, ‘আনন্দে’ কেঁদে ফেললেন বুদ্ধদেব

সমাবর্তনের শেষে অপসারিত অস্থায়ী উপাচার্যকে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে দেখা যায়। চোখের জলের ব্যাখ্যা দিয়ে বুদ্ধদেব সাউ বলেন, “এটা আনন্দের জল।”

Jadavpur University’s convocation ceremony amid conflict between removed VC and Governor CV Ananda Bose

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (বাঁ দিকে) এবং যাদবপুরের অপসারিত অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:০৫
Share: Save:

রাজভবন এবং সদ্য অপসারিত অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের মধ্যে টানাপড়েনের আবহেই বার্ষিক সমাবর্তন শেষ হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শনিবার রাত থেকেই এই টানাপড়েনে জড়িয়ে পড়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরও। রাজভবনের তরফে উপাচার্যকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠেছিল যে, আদৌ কি রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে? শেষমেশ অবশ্য সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে।

রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্টের বৈঠকের পর শুরু হয় শংসাপত্র প্রদান অনুষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে। সেখানে পৌরোহিত্য করেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেন শংসাপত্র। পাশে বসে থাকেন সদ্য অপসারিত উপাচার্য। এ দিন সকালেই কোর্টের বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সহ-উপাচার্যকে সামনে রেখে সমাবর্তন করে দেওয়া হোক। অন্য দিকে, শিক্ষা দফতরের তরফে রাজ্যপাল অপসারিত উপাচার্যকে সমাবর্তন করার বিষয়ে ‘বিশেষ ক্ষমতা’ দেওয়া হয় সকালেই।

সমাবর্তনের শেষে অপসারিত উপাচার্যকে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে দেখা যায়। চোখের জলের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এটা আনন্দের জল।” আরও বলেন যে, “গত চার মাস ধরে আমি সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে রাত ১০টায় বাড়ি গিয়েছি। তবে ছাত্রদের হাতে যে অন্তত ডিগ্রিটা তুলে দেওয়া গেল, তাতেই ভাল লাগছে।” শীতের ছুটির পর নতুন বছরের গোড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় খুললে তিনি উপাচার্যের দফতরে যাবেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে বুদ্ধদেব বলেন, “আপাতত কয়েক দিন বিশ্রাম নেব।” তার পরই রহস্য জিইয়ে রেখে তিনি বলেন, “আইনজ্ঞদেরও পরামর্শ নেব। তার পরই সিদ্ধান্ত নেব।”

রবিবার সকালেই রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, বু্দ্ধদেবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি রয়েছে, সেগুলি নিয়ে তদন্ত করা হবে। পড়ুয়ারা আচার্যের দফতরে অভিযোগ করেছেন যে, সমাবর্তনের নামে তাঁদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের গরিব বাবা-মায়ের রোজগার করা টাকা তাঁরা দিতে বাধ্য হয়েছেন এই সমাবর্তনের জন্য, যা কিনা বেআইনি। এই টাকা উপাচার্য এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে। শনিবারের পর রবিবারও বুদ্ধদেব জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক। দেখা হোক, কে দুর্নীতি করেছে। বেতন কেটে নেওয়া হলেও তাঁর আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রতি বছরের ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুরে সমাবর্তন হয়। নীতি মেনে সমাবর্তনের জন্য যাদবপুরে প্রতি বছর কোর্টের বৈঠক করতে হয়। তার জন্য প্রয়োজন হয় আচার্য তথা রাজ্যপালের অনুমতি। কিন্তু এ বছর আইনি জটিলতার কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকে অনুমতি দেননি আচার্য তথা রাজ্যপাল। তার পরেই সমাবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। যদিও নির্ধারিত দিনেই সমাবর্তনের কথা জানিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় রাজ্য শিক্ষা দফতর। এর মাঝেই শনিবার সন্ধ্যায় রাজভবনের তরফে সরানো হয় উপাচার্যকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE