Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Education

অনলাইনে ঘরোয়া উপায়ে স্কুলপড়ুয়াদের বিজ্ঞান শিক্ষা

‘জগদীশ বসু ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’ অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অনলাইনে প্র্যাক্টিক্যাল-সহ বিজ্ঞানের শিক্ষা দিতে উদ্যোগী হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২১ ০৮:০৫
Share: Save:

অতিমারির এই দীর্ঘ সময়ে প্রবল ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন। স্কুল খোলা নেই। যতটুকু ক্লাস অনলাইনে হচ্ছে, তার মধ্যে বিজ্ঞানের বিষয়গুলি যথাযথ ভাবে পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করানো যাচ্ছে না। সেই জন্য বিজ্ঞানের বিষয়গুলি যাতে ঠিকঠাক ভাবে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের মাধ্যমে করানো যায়, সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে ‘জগদীশ বসু ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’। রাজ্য শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ এই সংস্থা বিভিন্ন জেলার অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অনলাইনে প্র্যাক্টিক্যাল-সহ বিজ্ঞানের শিক্ষা দিতে উদ্যোগী হয়েছে।

সংস্থার অধিকর্তা মৈত্রী ভট্টাচার্য জানান, মূলত অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরই তাঁরা এই পাঠ দান করছেন। কারণ, অষ্টম শ্রেণি থেকেই বিজ্ঞান শিক্ষায় পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে হয়। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, বীরভূম, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও মুর্শিদাবাদের ২০টি সরকার অনুমোদিত স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে প্রতিটি অনলাইন কর্মশালা দশ দিন ধরে হচ্ছে। বিষয়ভিত্তিক পাঠের পাশাপাশি হাতেকলমে ঘরোয়া, সহজলভ্য উপকরণ দিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেখাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সিলেবাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রসায়নের ফর্মুলা, জীবন বিজ্ঞানের বিভিন্ন উদ্ভিদের বর্ণনা, পানীয় জলের প্রয়োজনীয়তা, মানব দেহে কোষের বিন্যাসের পাশাপাশি খেলার ছলে পাটিগণিত, বীজগণিতও শেখানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই, পড়ুয়ারা যাতে অনায়াসে সব কিছু বুঝতে পারে। একেবারে ঘরোয়া জিনিসপত্র দিয়ে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা পড়ুয়াদের করতে দেওয়া হচ্ছে। যেমন, অম্ল এবং ক্ষার সম্পর্কিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের লিটমাস পেপারের বদলে হলুদ রঙের কাগজ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। কাগজটি লেবুর রসে লাল হয় এবং সাবান-জলে নীল হয়। এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীরা পদার্থের ধর্ম বুঝতে পারছে।

জীবন বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের বলা হচ্ছে, কিছুটা মাটি জোগাড় করে রাখতে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইনেই প্রতিটি মাটি বিশ্লেষণ করে ছাত্রছাত্রীদের শনাক্ত করতে শেখাচ্ছেন। বিভিন্ন মাটি (যেমন এঁটেল, পলি, দোআঁশ) সম্পর্কে পড়ুয়াদের বিশদে ধারণা তৈরি হচ্ছে।

পরিবেশ সংক্রান্ত পাঠে পড়ানো হচ্ছে, ‘একটি প্লাস্টিক বোতলের আত্মকাহিনি’। প্লাস্টিকের অতিরিক্ত ব্যবহার কী ভাবে জীববৈচিত্র ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে, সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে। মৈত্রীদেবী জানান, এই অনলাইন কর্মশালার জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াকে তাঁরা ১০০ টাকার ইন্টারনেট ডেটাও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেকের বাড়িতেই হয়তো স্মার্টফোন নেই। প্রতিবেশীর থেকে স্মার্টফোন চেয়ে অনলাইন ক্লাস করছে। এই কার্যক্রম পুজো পর্যন্ত চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE