Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

Calcutta High Court: প্রযুক্তিগত সমস্যা, হাই কোর্ট কর্তৃপক্ষকে শো-কজ বিচারপতির, বললেন ন্যায়বিচারের শপথ নিয়েছি

বিচারপতি বলেন, “যতক্ষণ না সমস্যাগুলি পুরোপুরি সমাধান হয়, ততক্ষণ আমি খালি স্টেজ শো করতে কোর্টে বসতে পারব না।”

বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য (ইনসেটে)।

বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য (ইনসেটে)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ২৩:৫০
Share: Save:

বিচার পেতে যাঁরা আদালতে আসেন, বিচারপতি সাধারণত তাঁদের দোষ-ত্রুটি বিচার করেন। তার পর তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রায় দেন। এ বার কোনও বিচারপ্রার্থী নন, বিচারপতি নিজেপ পাশাপাশি আদালতকে দোষী দাগিয়ে কাঠগড়ায় তুললেন। রায়ও দিলেন। শুক্রবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাই কোর্ট। ভার্চুয়াল শুনানিতে ব্যাঘাত ঘটার কারণেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের রোষের মুখে পড়ে হাই কোর্ট কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটরকে শো-কজ করেন বিচারপতি। এমনকি এই ঘটনায় জড়ানো হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলকেও

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের অন্যান্য আদালতের মতো কলকাতা হাই কোর্টেও চলছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি। শুক্রবার হাই কোর্টের সাত নম্বর কোর্টে বিচার করছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন আইনজীবীরাও। সেই সময় প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় শুনানি। এজলাসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন বিচারপতি। অবশেষে পরিষেবা ঠিক না হওয়ায় ভার্চুয়াল পরিচালকদের উপর রুষ্ট হন বিচারপতি। অসন্তোষের সুরে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি হচ্ছে। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আদালত যথাযথ ন্যায়বিচার সরবরাহ করতে ন্যূনতম পরিষেবা ও সংযোগ দিতে অক্ষম।” বিচারপতি আরও বলেন, “আমি এ জাতীয় সার্কাস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। কারণ আদালত ও বিচারকদের থাকার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষের বাইরে অনেক মেহনতি মানুষ রয়েছেন। যাঁরা এই রোদ্দুরে, ধুলোবালি মাখা অবস্থায়ও বিচারের বাণীর অপেক্ষায় আছেন। আমি ওই মানুষদের ন্যায়বিচার দেওয়ার শপথ নিয়েছি। তাই যতক্ষণ না সমস্যাগুলি পুরোপুরি সমাধান হয়, ততক্ষণ আমি খালি স্টেজ শো করতে কোর্টে বসতে পারব না।”

শুধু এখানেই থেমে থাকেননি বিচারপতি ভট্টাচার্য। ভার্চুয়াল মাধ্যম দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটরকে তিনি শো-কজও করেন। তিনি বলেন, “এই ধরণের সমস্যা দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী হাই কোর্টের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। আমি এই আদালতের অংশ হিসাবে এর জন্য নিজেকে ব্যক্তিগত ভাবে দোষী বলে মনে করি। যে কোনও কারণেই হোক এটা আদালতের কাজে বাধা এবং হস্তক্ষেপ করা। তাই এটা অপরাধ হিসাবে গণ্য হতেই পারে। তাছাড়া এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়, আগেও একাধিকবার ঘটেছে। তারপরও নিজেদের ত্রুটি সংশোধন করেননি কো-অর্ডিনেটর। তাই তাঁদেরকে কেন আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে না তার জবাবে শো-কজ নোটিস দেওয়া হবে।”

এই ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিন্দল ও হাই কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। তিনি নির্দেশ দেন, তাঁর আদেশের প্রতিলিপি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির পাশাপাশি আদালতের রেজিস্টার জেনারেলকেও দেওয়া হবে। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চান বলেও জানান বিচারপতি ভট্টাচার্য। বিষয়টি নিয়ে বিচার চলার কথাও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার এ বিষয়ে বিচারের দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE