কলকাতার কালীপুজোও তারাহীন হওয়ার পথে।—ফাইল চিত্র।
ক্যাটরিনা কাইফ, আলিয়া ভট্ট, সলমন খানেরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাধুরী দীক্ষিতও দুর্গাপুজোর ৪০ লক্ষ টাকার ‘রেট কার্ড’ ধরে রেখেছেন। রবিনা টন্ডন, শিল্পা শেঠি, প্রীতি জিন্টাদেরও আনতে হলে কমপক্ষে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে! কিন্তু এত টাকা দেবে কে? অতএব, দুর্গোৎসবের পরে এ বার কলকাতার কালীপুজোও তারাহীন হওয়ার পথে!
এই তারকাদের আনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা যোগাযোগ বা মধ্যস্থতার কাজ করেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, ছোট-বড় সব কালীপুজো কমিটিরই এ বার ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ অবস্থা। তারকা আনিয়ে চমকের পথে হাঁটার জোর কারওরই নেই। মুম্বইয়ের শিল্পী তো দূরের কথা, বাজেট কাটছাঁট করতে গিয়ে কলকাতার বড় শিল্পীদেরও নাম বাদ দিতে হয়েছে বহু কালীপুজো কমিটিকে। এর মধ্যেও চমক বলতে ৮০ হাজার টাকায় আড়িয়াদহ ও বাগুইআটির পুজোর জন্য ভাগ্যশ্রীকে আনার কথাবার্তা চলছে। দমদমের একটি পুজোর জন্য কথা হচ্ছে অমিশা পটেলের সঙ্গেও। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের দমদম সেভেন ট্যাঙ্কসের পান্নালোক শ্যামাপুজোর জন্য অবশ্য শহরে এসে গিয়েছেন গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্য। আজ, শনিবার ওই পুজোয় তাঁর যোগ দেওয়ার কথা।
বহু পুজোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে তারকাদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে আসা বাবুয়া ভৌমিক বললেন, ‘‘অভিজিৎ তো কলকাতার প্রায় ঘরের ছেলে। এ ছাড়া বড় শিল্পী আর কই? শ্রদ্ধা কপূর বা সোনাক্ষী সিংহদের সঙ্গেও তো ৬০-৭০ লক্ষ টাকার কমে কথাই বলা যায় না। কেউ অবশ্য তাঁদের আনানোর জন্য বলছেনও না। কোনও মতে ছ’লক্ষ টাকায় শুধু রাখি সবন্তকে আনানোর কথা হয়েছিল আমার সঙ্গে। এই বৃষ্টিতে সেটাও বাতিলের পথে।’’
আর এক তারকা মধ্যস্থতাকারী তোচন ঘোষ জানালেন, দুর্গাপুজোয় যা-ও দু’-একটি পুজো কমিটির ফোন পেয়েছিলেন, কালীপুজোয় তা-ও আসেনি। তোচনের কথায়, ‘‘এই পেশায় ৩০ বছরের বেশি হয়ে গেল, এমন খারাপ হাল আগে দেখিনি। নামী কালীপুজো কমিটিগুলিই হাত তুলে নিচ্ছে, ছোট পুজো কী করবে?’’
এক কালে কালীপুজোয় মুম্বইয়ের শিল্পীদের নিয়ে আসার প্রতিযোগিতা চলত আমহার্স্ট স্ট্রিটে। আগের জৌলুস কোনও মতে ধরে রাখার চেষ্টা চললেও তারকা আনা এখন প্রায় বন্ধ। আগে তারকা আনার প্রতিযোগিতায় সকলকে টেক্কা দিত যে ফাটাকেষ্টর পুজো, তারাও এ বার তারকা নিয়ে অন্ধকারে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ধনঞ্জয় ধর বললেন, ‘‘মুম্বই থেকে কলকাতায় আসার বিমানের কয়েকটি টিকিটের ব্যবস্থা করে রেখেছি। তবে সেই টিকিটে কারা আসছেন, এখনও জানি না।’’ তাঁর যদিও দাবি, ‘‘ফাটাকেষ্টর পুজোয় এমনিই তারকারা আসেন। এ বারও গায়ক শান এবং সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের আসার প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। বাপ্পি লাহিড়ীও কাউকে না কাউকে প্রতি বারই সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। এ বার কী হয় দেখা যাক।’’
ফাটাকেষ্ট ভাবলেও মুম্বইয়ের তারকা আনার আশা অবশ্য ছেড়েই দিয়েছেন আহিরীটোলা সর্বজনীন, বাগমারি সর্বজনীন বা আমহার্স্ট স্ট্রিট বালক সঙ্ঘের মতো পুজোর উদ্যোক্তারা। একই পথে হেঁটেছে দমদমের প্রায় ৩০-৩৫টি পুজোও। ইন্দ্রাণী হালদার, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, লোপামুদ্রা মিত্র ও নানা টেলি সিরিয়ালের শিল্পীদের উপরে ভরসা রেখেছে তারা। গিরিশ পার্ক ফাইভ স্টারের পুজো উদ্যোক্তা তথা বিধায়ক স্মিতা বক্সীর পুত্র সৌম্য বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের শিল্পীদের এনে লাভ কী? ১০ মিনিট থেকেই তো চলে যান ওঁরা। আমাদের পুজোয় পরমব্রত, টলিউডের বনি, কৌশানীরা আসছেন। মনে হয় সেটাই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy