গঙ্গার পাড়ের কারখানাটি চেনেন অনেকেই। কিন্তু তার ইতিহাস জানেন ক’জন! সেই ইতিহাসকেই এ বার তুলে আনছেন কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির কর্তারা। কারখানার অদূরেই একটি সংগ্রহশালা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। আমজনতা এবং পর্যটকদের জন্য তার দরজা খোলা থাকবে।
শনিবার অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি দিবসে গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার রাজীব চক্রবর্তী জানান, কাশীপুরের দোতলা সংগ্রহশালা তৈরি হবে। তার দ্বিতীয় তলে থাকবে নানা নথিপত্র এবং আলোচনাকক্ষ। নেহাত দর্শন নয়, অস্ত্রশস্ত্র এবং তার ইতিহাসচর্চাকেও সমান ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ দিন অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি দিবস উপলক্ষে সকালে দমদম থেকে পদযাত্রা করেন গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির কর্মীরা। নিজেদের তৈরি নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একটি প্রদর্শনীও করা হয়।
কাশীপুরের এই কারখানাটিই দেশের সব থেকে পুরনো অস্ত্র কারখানা। ১৮০১ সালে এটি তৈরি হয় (তখন নাম ছিল গান ক্যারেজ এজেন্সি)। ১৮০২-এর ১৮ মার্চ এই কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়। তাই এই দিনটিকেই অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কর্তারা জানান, বহু ঘটনার সাক্ষী এই কারখানা। লর্ড কার্জন, ডিউক অব এডিনবরা-সহ ব্রিটিশ আমলের বহু বিখ্যাত মানুষের স্মৃতি আছে এখানে। সেই সব ঘটনা, স্মৃতি এবং নথি তুলে আনা হবে। ইতিমধ্যে সে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। রাজীববাবুর কথায়, ‘‘আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। চাই ইতিহাসের গবেষকেরাও এখান থেকে উপকৃত হোন।’’
মানুষের স্মৃতি কী ভাবে জড়িয়ে আছে তার গল্পও শোনা যায় প্রাচীনতম এই অস্ত্র কারখানায়। বছর কয়েক আগে এক ব্রিটিশ পর্যটক আচমকাই হাজির হয়েছিলেন জেনারেল ম্যানেজারের বাংলোর সামনে। রক্ষীরা জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন, ওই ব্রিটিশ পর্যটক জন্মেছিলেন কলকাতায়। বাবা এই কারখানার চাকুরে হওয়ায় জন্মের পর কয়েক বছর কেটেছে এই বাংলোয়। কারখানার কর্মীরা বলছেন, এমন অনেক ঘটনাই রয়েছে। রাজীববাবু জেনারেল ম্যানেজার পদে যোগ দেওয়ার পরে সেই ইতিহাস পুনরুদ্ধারের কাজ জোরকদমে শুরু হয়। সংগ্রহশালা তৈরিও তারই অঙ্গ।