Advertisement
E-Paper

কাশ্মীরি যুবককে কুপিয়ে টাকা লুট পার্ক সার্কাসে

আটক করা হয়েছে আরও এক জনকে। রেল পুলিশ তাদের নাম জানায়নি। আজ, রবিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:০০
আক্রান্ত কাশ্মীরি শালওয়ালা শাকুর আহমেদ শাহ। —নিজস্ব চিত্র।

আক্রান্ত কাশ্মীরি শালওয়ালা শাকুর আহমেদ শাহ। —নিজস্ব চিত্র।

পার্ক সার্কাস এলাকায় কাশ্মীরি যুবককে মারধর করে টাকা লুটের ঘটনায় শনিবার রাতে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে আরও এক জনকে। রেল পুলিশ তাদের নাম জানায়নি। আজ, রবিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।

ধৃতকে জেরা করার পর রেল পুলিশের দাবি, শাকুর আহমেদ শাহ নামে ওই কাশ্মীরি যুবক শুক্রবার সন্ধে সাতটা নাগাদ পার্ক সার্কাস স্টেশনের কাছে দুজনের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল। চলছিল হুল্লোড়। সে সময় এলাকার আরও তিন যুবক সেখানে এলে, তাঁদের সঙ্গে প্রথমে বচসা ও তার পরে মারামারি হয়। ধারালো কিছু দিয়ে মারা হয় শাকুরকে। এর পরেই এলাকা ছেড়ে পালায় স্থানীয় ওই তিন যুবক। এলাকা ছাড়ে কাশ্মীরি যুবকের দুই সঙ্গীও। বেশি জখম হওয়ায় ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতে পারেননি শাকুর। পেশায় শালওয়ালা শাকুর পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর থেকে এক লক্ষ পঁচানব্বই হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, শাকুরের কথায় কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। ধৃতদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করা হবে।

শাকুরের বাড়ি জম্মু-কাশ্মীরের বদগাম জেলায়। ব্যবসার কাজে কয়েক বছর হল সন্তোষপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। কলকাতার এক মহাজনকে বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য শুক্রবার যাদবপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে পার্ক সার্কাস স্টেশনে যান। বালিগঞ্জ জিআরপি থানার বাইরে শাকুর বলেন, ‘‘মহাজনের বাড়ি কড়েয়ার মিজান ওস্তাগর লেনে। টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে রেল লাইন ধরে হাঁটছিলাম। চার নম্বর ব্রিজের নীচে কিছুটা এগোনোর পরেই দুই যুবক জানতে চায়, আমি কাশ্মীরি কি না? কাশ্মীরি বলতেই পিছন দিকে দুই যুবক আক্রমণ করে। ব্যাগটা বুকে আঁকড়ে ধরতেই পেটে ও পায়ে ছুরি মারে ওরা। মাটিতে পড়ে যেতেই তাঁরা ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।’’ পাশে ঝুপড়ির বাসিন্দারা জানান, তাঁরা কোনও চিৎকার শোনেননি। তবে শাকুরকে বসে থাকতে দেখে জল খেতে দিয়েছিলেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

স্থানীয় এক ব্যক্তি সে রাতে আহত শাকুরকে নিয়ে যান চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর গভীর রাতে তিনি সার্ভে পার্ক থানায় যান। ওই থানা এলাকাকেই শাকুরের অস্থায়ী ঠিকানা। ঘটনাস্থল রেল পুলিশের আওতায় হওয়ায় রাতেই কলকাতা পুলিশ তাঁকে নিয়ে বালিগঞ্জ জিআরপিতে যায়। সেখানেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে রেল পুলিশ।

পুলওয়ামা ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরিদের উপরে হামলা হয়েছে। কিন্তু এই কাশ্মীরি-বিরোধিতার তেমন কোনও প্রমাণ পায়নি পুলিশ। শাকু মুখে বলেছেন, তিনি কাশ্মীরি কি না, এক যুবক তা জানতে চেয়েছিলেন। তিনি ‘হ্যাঁ’ বলার পরেই হামলা হয়। তবে তা ‘বিদ্বেষমূলক’ ঘটনা, তা তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেননি।

পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এর আগে কাশ্মীরিদের উপরে হামলায় হিন্দুত্ববাদীরা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত পার্ক সার্কাসে হিন্দুত্ববাদীদের তেমন প্রভাব নেই। বরং রেল লাইন সংলগ্ন ওই এলাকায় চোর, ডাকাত, ছিনতাইবাজের উপদ্রব রয়েছে। শাকুর যে টাকা নিয়ে যাবেন তা আগে থেকে দুষ্কৃতীরা জানত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Park Circus Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy