Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা: রেখা জানে কোথায় সংগ্রাম

সম্পাদক লিখছেন, বাংলায় পোস্টার বানানোর একটা বামপন্থী ধারা ছিল ১৯৪০-এর দশক থেকেই, যদিও তার সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য খুবই কম।

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০১:০৬

বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?/ এস তবে আজ বিদ্রোহ করি,/ আমরা সবাই যে যার প্রহরী/ উঠুক ডাক।’’ (সুকান্ত ভট্টাচার্য, ‘বিদ্রোহের গান’, ঘুম নেই) এ কবিতার জন্য সঙ্গের ছবিটি এঁকেছিলেন দেবব্রত মুখোপাধ্যায় (১৯১৮-১৯৯১)। বছর পঞ্চাশ আগে, অষ্টম শ্রেণির বাংলা সহায়ক পাঠ হিসেবে সারস্বত লাইব্রেরি প্রকাশ করেছিল সুকান্ত-সংকলিতা— সুকান্ত ভট্টাচার্যের ২৬টি কবিতার সঙ্গে দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি। ১৯৯০-এর দশকে তা থেকে দশটি কবিতা ও ছবি বেছে সারস্বতই তৈরি করে পোস্টার। শিল্পীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বড় বইয়ের আকারে দুর্লভ সেই দশটি পোস্টার ফিরে এল (সম্পা: শুভেন্দু দাশগুপ্ত, ঠিকঠিকানা)। সম্পাদক লিখছেন, বাংলায় পোস্টার বানানোর একটা বামপন্থী ধারা ছিল ১৯৪০-এর দশক থেকেই, যদিও তার সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য খুবই কম। দেবব্রত তাঁর প্রথম রাজনৈতিক পোস্টার আঁকেন ১৯৩৯-এ। সব মিলিয়ে তিনি হাজার পাঁচেক পোস্টার আঁকলেও বাঁচেনি কিছুই। ১৯৪৬-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর দেবব্রত অনেকগুলি পোস্টার আঁকেন, তার প্রদর্শনীও হয়। আবার ১৯৬২ সালে পার্ক সার্কাস ময়দানে শান্তি সম্মেলনে বিশ্ব শান্তির পক্ষে প্রদর্শনী দেবব্রতের আঁকা পোস্টার দিয়েই সাজানো হয়েছিল, এই বইয়েই লিখেছেন প্রত্যক্ষদর্শী হিরণ মিত্র। দেবব্রত ও তাঁর ছবি নিয়ে লিখেছেন কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্তও। চল্লিশ-পঞ্চাশ-ষাটের কঠিন নির্মম বাস্তবের আশ্চর্য প্রতিফলন দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের রেখায়, পূর্ণেন্দু পত্রী যাকে বলেছেন, ছিলার মতো, চাবুকের মতো রেখা ছিটকে বেরুচ্ছে। তির ছুড়বে বলে। ‘‘...রেখা যেন গর্বিত গাণ্ডীব।/ যেন জানে শত্রুপক্ষ, যেন জানে কোথায় সংগ্রাম/...।’’ শতাব্দীর অনেকটা পেরিয়ে এসেও ওই সময়টা বড্ড চেনা চেনা লাগে না? কোথাও কি মিল আছে? কিন্তু আজ সে রেখা কোথায়, পথের দিশাই বা কোন দিকে? বোধ হয় তারও ইঙ্গিত রয়েছে দেবব্রতের লেখায়, ‘‘তোমারও বুদ্ধি আছে, তোমারও দেখার চোখ আছে, তুমি দেখো, বোঝো, বোঝার চেষ্টা করো...।’’

ম্যাজিক-জীবন

‘‘আমার পার্টটা শুরু হয়েছে একজন জাদুকরের ছেলে জাদুকর হিসাবে। হঠাৎ করে পর্দা উঠে গেছে। অজান্তে। আমি তখন মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।’’ ৬ জানুয়ারি ১৯৭১, জাপানের হোক্কাইডোর আশাহিকাওয়া শহর থেকে খবর এল, মাত্র ৫৭ বছর বয়সে জাদুকর পি সি সরকার হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ‘ইন্দ্রজাল-জগতে ইন্দ্রপতন’। জাপানে ৬৫টি শো করার পরিকল্পনা ছিল প্রতুলচন্দ্রের, করতে পেরেছিলেন মাত্র ৫টি। খবর পেয়েই মেজো ছেলে প্রদীপচন্দ্র জাপানে পৌঁছন এবং পি সি সরকার জুনিয়র হিসেবে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে শো চালিয়ে যান। আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। এ বার তিনি স্মৃতিচারণ করলেন আমার জীবন আমার ম্যাজিক (পত্রভারতী) বইয়ে, জাদুর সঙ্গে পরিবার, দেশকালের ইতিহাস সেখানে মিলেমিশে গিয়েছে।

নতুন বিষয়

এ নাটকে ‘‘প্রলাপ, কাব্য, যাপন, অপরাধ, স্মৃতি, প্রায়শ্চিত্ত, আক্রমণ, বিষাদ সব মিলিয়ে মিশিয়ে আছে...। নৈর্ব্যক্তিক এক ঈশ্বরও সেই সঙ্গে কান পেতে আছেন অবশ্য কিন্তু তাতে অহৈতুকী জটিলতার উপলখণ্ড নেই, বরঞ্চ রাশি রাশি ঝর্ণার সরল, স্পষ্ট ধ্বনি আছে।’’ এ মন্তব্য নাটককার ব্রাত্য বসুর, প্রসঙ্গ ‘আমি অনুকূলদা আর ওরা’। গত সেপ্টেম্বরে অভি চক্রবর্তী নির্দেশিত নাটকটি মিনার্ভায় প্রথম অভিনয় করে অশোকনগর নাট্যমুখ। সারা বাংলা জুড়ে অভিনয়ের পর এ বার সেই নাটক মধুসূদন মঞ্চে, ৯ জুন সন্ধে সাড়ে ৬টায়। নির্দেশকের কথায়, ‘‘আমি বরাবরই চেয়েছি নাটকে এমন বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করতে যা সিরিয়াল বা ছবিতে করা সম্ভব নয়।’’ ফলত চলেছে নিরন্তর নিরীক্ষা। ‘‘রাজ্যের বাইরে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এ নাটক অভিনয় করাই এখন আমাদের লক্ষ্য’’, বললেন অভি।

সুজয়ের গান

এত দিন তাঁকে মানুষ দেখেছেন সাবলীল বাচনিক ও নিখুঁত উচ্চারণে কবিতা আবৃত্তি করতে বা পর্দায়, মঞ্চে অভিনয় করতে। এ বার শুনতে পাবেন তাঁর সুরেলা কণ্ঠটিও। সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় গান শিখেছেন প্রমিত সেন ও লিপিকা ঘোষের কাছে। তবে কোনও দিনই গানকে পেশা করেননি। তাই তাঁর গানের কোনও রেকর্ডও হয়নি। এ বার সত্রাজিৎ সেন ও মেজর সেভেন্‌থ-এর উদ্যোগে তাঁর গাওয়া ‘ও যে মানে না মানা’, ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে’, ‘যখন এসেছিলে অন্ধকারে’, এবং ‘কতবার ভেবেছিনু’— এই চারটি রবীন্দ্রসঙ্গীত ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত হল জার্মান ডেপুটি কনসালের বাড়িতে। ‘ও যে মানে না মানা’ গানটির একটি মিউজ়িক ভিডিয়োও প্রকাশ পেল ।

সমাজবিদ

মাত্রই সাতান্ন বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। মার্ক্সীয় সমাজতত্ত্ব থেকে বিশ্বায়ন, বিকেন্দ্রীকরণ থেকে গ্রাম উন্নয়ন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা থেকে গ্রামীণ নিকাশি সব দিকে ছিল তাঁর সজাগ দৃষ্টি। পড়াশোনা শুরু পাঠভবন স্কুলে। তার পর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগ। শিক্ষকতা প্রেসিডেন্সি কলেজ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হংকং-এর সিটি ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ার কারটিন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে অগ্রাহ্য করার অসামান্য ক্ষমতা ছিল তাঁর। ২০০৪ সালে দৃষ্টি চলে যাওয়ার পরেও নিজের মতো কাজ করছিলেন। মার্ক্সের পর মার্ক্সবাদ, উত্তর আধুনিকতা কী বলছে কেন বলছে, বিপন্ন পরিবেশ বিপন্ন মানুষ, রিলিজিয়ন অ্যান্ড সোসাইটি-র মতো অন্তত আশিটি বইয়ের লেখক যুক্ত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল সোশিয়োলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে। শেষ বই ভগিনী নিবেদিতাকে নিয়ে প্যাট্রিয়ট এক্সট্রাঅর্ডিনারি। আকস্মিক অসুস্থতায় ৬ মে প্রয়াত হলেন মৌলানা আজ়াদ কলেজের অধ্যাপক সমাজতত্ত্ববিদ শমিত কর।

এখন সত্যজিৎ

সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল ও হযবরল সম্পর্কে সত্যজিৎ বলেছিলেন ‘‘এই দুটো বইয়ের মতো আর কোনও বই লেখা হয়নি এবং এই বইয়ের আকর্ষণও বাঙালিদের কাছে কমেনি।... আমার মতে মাত্র ত্রিশ পাতার মধ্যে হযবরল-তে যে পরিমাণ আইডিয়া ঠাসা হয়েছে, সারা বিশ্বের সাহিত্যে আর কোনও বইয়ে তেমন হয়েছে কিনা সন্দেহ!’’ এটি সত্যজিতের বেতার বক্তৃতা: ‘আমার বাবা’। ঠাঁই পেয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘এখন সত্যজিৎ’ পত্রিকা-র (সম্পা: সোমনাথ রায়) ‘সুকুমার রায়’ ক্রোড়পত্রে। সত্যজিৎ-কৃত ‘সুকুমার রায়’ তথ্যচিত্রের চিত্রনাট্যটিও আছে। এ ছাড়াও সত্যজিতের ‘অমল ভট্টাচার্য স্মৃতি বক্তৃতা’, শঙ্করীপ্রসাদ বসুর ‘অপুর সংসার’ নিয়ে আলোচনা... এমত রচনায় ঋদ্ধ পত্রিকাটি। ওরা এ বারেও আয়োজন করেছে ‘রে কুইজ়’, নন্দন-এ ১ জুন বিকেল ৫টায়। গুগাবাবা ছবিটির মুক্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছবিটি নিয়ে বলবেন সন্দীপ রায়, আর সংবর্ধিত করা হবে অপর্ণা সেন-কে।

লীলাময়

প্রেম প্রীতি ভালবাসার মধ্যেই নিহিত সুখ শান্তির পথ নির্দেশ। বর্তমান হানাহানির পরিবেশে তা শুধু উপেক্ষার নামান্তর। আর এই সময়ে দাঁড়িয়ে শিল্পীর দায়বদ্ধতায় প্রেমের বার্তা দিলেন ভাস্কর রামকুমার মান্না ও চিত্রশিল্পী গোপালচন্দ্র নস্কর। ‘রাধাকৃষ্ণ— দ্য রিয়্যালিটি ইউনাইটস ইটারনিটি’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে ছ’টি ভাস্কর্য ও দশটি চিত্রে রাধাকৃষ্ণের লীলাময় জীবন, যেখানে নির্ভেজাল ভালবাসায় পার্থিব রাধার সঙ্গে অপার্থিব কৃষ্ণপ্রেমের মেলবন্ধনের তুলনা করেছেন ঈশ্বর ও ঈশ্বরসৃষ্ট প্রকৃতির সঙ্গে। গাছ যেমন প্রাণবায়ু ফল ফুল ছায়া বাতাস আশ্রয় দেয় ঝড় জল বৃষ্টিতে, সেই গাছই এখানে কৃষ্ণরূপ। আজ ২৭ মে সন্ধে ৬টায় চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনী শুরু, চলবে ৫ জুন পর্যন্ত (৩-৮টা)।

প্রান্তজন

রবীন্দ্রচর্চা ও চিন্তনের প্রসারে পাঁচ দশক ধরে ব্যাপৃত সঙ্গীত-প্রতিষ্ঠান ‘ইন্দিরা’ এ বছরে প্রথা ভেঙে একটু অন্য রকম ভাবে রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপনে ব্রতী। এ বারে তারা নিজেদের মঞ্চ তুলে দিয়েছে ‘অন্বেষা দ্য কোয়েস্ট’ সংস্থাটির হাতে, যারা বিশেষ ভাবে চাহিদাসম্পন্ন শিশুকিশোরদের মানসিক উন্মেষের কাজে নিয়ত নিয়োজিত। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি কেমন করে এই শিশুকিশোরদের হৃদয়ে অপার্থিব আনন্দের স্পর্শ এনে দেয়, তা দেখা যাবে তাদের রবীন্দ্র-পরিবেশনায়। ‘ইন্দিরা’র উদ্দেশ্য, কবিপক্ষের উৎসবে প্রান্তজনকে শামিল করা। আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন সভাগৃহে, সন্ধে সাড়ে ছ’টায়।

রঙ্গ মহোৎসব

গ্রীষ্মের এই দহনেও অদম্য বাঙালির নাট্যচর্চা। বেহালা ব্রাত্যজন-এর আসন্ন নাট্যোৎসব তার হাতে-নগদ একটি প্রমাণ। ব্রাত্য বসুর প্রেরণায় প্রতিষ্ঠিত এই নাট্যগোষ্ঠীটি পাঁচ বছর ধরে নতুন মুখ খুঁজে এনে তাদের নাট্যোপযোগী করে তুলেছে ক্রমাগত। আয়োজন করেছে একের পর এক নাট্যকর্মশালা, এসেছেন বিভাস চক্রবর্তী অরুণ মুখোপাধ্যায় অশোক মুখোপাধ্যায় গৌতম হালদার খরাজ মুখোপাধ্যায়। এ বারে তাদের ‘বঙ্গ রঙ্গ মহোৎসব’-এ নানা শিল্পগুণান্বিত ও জনসমাদৃত নাটকেরই সমাহার, যেমন কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর ‘মিরজাফর’ বা চেতনা-র ‘ডন— তাকে ভাল লাগে’। শুরুতে বেহালা ব্রাত্যজন-এরই নাটক ‘তারপর একদিন’। ২-৭ জুন মধুসূদন মঞ্চে।

মেয়েদের কথা

‘উবাচ’ নামে একটি অভিনব পোস্টার সিরিজ় তৈরি হয়েছে নানা স্বাধীনতার লড়াইয়ে শরিক মেয়েদের কথা ও ছবি দিয়ে। তাঁদেরই লেখা বা সাক্ষাৎকার থেকে উদ্ধৃতি রয়েছে পোস্টারে। তাঁদের মধ্যে আছেন ইসমত চুগতাই, বামা ও বেবি হালদারের মতো লেখিকা; মেরি কম ও পিঙ্কি প্রামাণিকের মতো খেলোয়াড়; বীণা দাস ও কল্পনা দত্তের মতো রাজনৈতিক কর্মী; এবং সাধনা বসু ও কেতকী দত্তের মতো শিল্পী। গবেষণা ও পরিকল্পনায় শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত, বিন্যাস চান্দ্রেয়ী দে-র। ‘এবং আলাপ’ সংস্থা এই সিরিজ়ের ৫২টি পোস্টার নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে গোর্কি সদনে। ১ জুন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন নবনীতা দেব সেন। বিশেষ অতিথি অনিতা অগ্নিহোত্রী, বেবি হালদার ও পিঙ্কি প্রামাণিক। প্রদর্শনী ২-৫ জুন, ৩-৮টা। ‘লিঙ্গসাম্য সম্মান’ পাবে লস্করপুর হাই স্কুল, বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন, লিপিকা বিশ্বাস ও বিলকিস বিবি।

আনন্দ সঙ্গীত

‘আ বেনি প্লাসিতো’ একটি সাঙ্গীতিক লব্‌জ, যার অর্থ ‘আনন্দে’ বা ‘ইচ্ছেমতো’। পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সঙ্গীতের প্রসারে নিবেদিতপ্রাণ সংস্থা ‘কলকাতা ইয়ুথ অনসম্বল’ তাদের বার্ষিক কনসার্টের নাম হিসেবে বেছেছে এই অপরিচিত শব্দত্রয়ীকেই। একশোরও বেশি শিল্পী-সদস্য পরিবেশন করবেন পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সঙ্গীতের মণিকণা, স্ট্রিং অর্কেস্ট্রার সঙ্গে অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলনে। দ্বিতীয়ার্ধে ভারতীয় মার্গসঙ্গীত ও সমসাময়িক সঙ্গীতের বৃন্দবাদন— রাগ ইমনের হাত ধরে ‘আজ জানে কি জ়িদ না করো’, রাগ খাম্বাজের আলাপ শেষে ‘তেরে মেরে মিলন কি’-র সুর। পুরো অনুষ্ঠানকে সুরে বাঁধছেন অমিতাভ ঘোষ; থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কৌশিকী চক্রবর্তী, কল্যাণ সেন বরাট, পণ্ডিত দেবজ্যোতি বসু, দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়। ১ জুন সন্ধে ছ’টায়, মধুসূদন মঞ্চে।

স্বমহিমায়

তিনি ঘুমোতে যতটা ভালবাসেন, ততটাই গান গাইতে। গায়িকা না হলে কী হতেন? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাস্টার্সের সপাট জবাব: ‘লেডি কুম্ভকর্ণ’। অনসূয়া চৌধুরীর প্রথম সঙ্গীতগুরু উষারঞ্জন মুখোপাধ্যায়। তালিম পেয়েছেন অরুণ ভাদুড়ী এবং জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। তখন সবে ক্লাস টেন, হঠাৎই এক দিন সুযোগ এল বাপ্পি লাহিড়ির সুরে বাংলা ছবিতে প্লেব্যাকের। বাবা তাঁকে নিয়ে ছুটলেন মুম্বইতে ‘আশা ও ভালবাসা’ ছবির ‘গোপাল রে ও গোপাল’ গানটা গাওয়ার জন্য। গাইলেন। এক বছর পর ছবি রিলিজ় করল, গানও জনপ্রিয় হল। ইতিমধ্যেই রাহুল দেববর্মন ওরফে পঞ্চমও তাঁর গান শুনে মুগ্ধ। তাঁকে দিয়ে গাওয়ালেন ‘আক্রোশ’ ছবির ‘ও পুলিশ তোমার হাতকড়াটা, পরাও আমার হাতে...’। সেটাও প্রশংসা পেল। ২০০২-এ এইচএমভি থেকে বার হল তাঁর প্রথম বেসিক অ্যালবাম ‘ইতি অনসূয়া’। এর পর খান সাতেক অ্যালবাম, বেশ কিছু বাংলা ছবিতে প্লেব্যাক, ইতিউতি অজস্র জলসা, জিঙ্গল, টিভি সিরিয়ালের গান নিয়ে বেশ চলছিল। কিন্তু ‘‘বাধ সাধল ২০১১-র সেপ্টেম্বর। হল সেরিব্রাল অ্যাটাক। পরের মাসেই ইন্টারনাল হেমারেজ। ডান দিকটা পুরোপুরি অসাড় হয়ে গেল। এর পর টিবি, ফুসফুসে অস্ত্রোপচার, তার পর আর এক ফেঁকড়া— এমডিআর। কোনও ওষুধই কাজ করছিল না।’’ বলছিলেন অনসূয়া। আশার কথা, অনেক লড়াইয়ের পর শিল্পী আবার ফিরে এসেছেন স্বমহিমায়। এনএফডিসি তাঁর এই লড়াই নিয়ে তৈরি করেছে তথ্যচিত্র ‘জীবনপুর স্টেশন’। এ বার তিনি রবীন্দ্রসদনে ২ জুন সন্ধে ৬টায় ‘আবার অনসূয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তাঁর বেসিক গানগুলো শোনাবেন। শিল্পীর সঙ্গে তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে আড্ডায় মাতবেন রূপঙ্কর। দেখা যাবে শিল্পীর নাট্যদল ‘সৃষ্টিসুখ’-এর দু’টি নাটক। অভিনয় করতেও দেখা যাবে শিল্পীকে।

Korcha Kolkata Korcha কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy