পরীক্ষা: নিউ গড়িয়া থেকে রুবি মোড় পর্যন্ত মেট্রোর মহড়া দৌড়। শনিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার দশ বছরেরও বেশি সময় পরে শনিবার নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথের রুবি মোড় পর্যন্ত, প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথে প্রথম বার চাকা গড়াল মেট্রোর। তবে অভিযোগ, সেই মহড়া দৌড়ে ছত্রে ছত্রে প্রকট হয়েছে প্রস্তুতির বেহাল দশা। জোকা-তারাতলা মেট্রোপথে মহড়ার আগে এক মাসের বেশি সময় ধরে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, তার ছিটেফোঁটাও এ ক্ষেত্রে ছিল কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে নিউ গড়িয়া স্টেশনে মেট্রোর লাইনে এবং থার্ড রেলের কাজ চলেছে। এ সবের মধ্যেই পুজোর আগে তড়িঘড়ি মহড়া দৌড় সেরে ফেলার বার্তা পেয়ে আচমকা তৎপরতা বাড়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই একে মুখরক্ষার মহড়া বলছেন।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ নিউ গড়িয়া সংলগ্ন কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে মহড়া দৌড় শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় বিপত্তি। পুরনো নন-এসি রেকের দরজা নিয়ে সমস্যা আগেই ছিল। এ দিন মন্থর গতিতে ছুটে সব স্টেশনে ট্রেন থামলেও আলাদা করে রেকের দরজা খোলা বা বন্ধের দিকে যাননি কর্তৃপক্ষ। এ দিন রেকটি ছাড়ার পরে উড়ালপথে ওঠার সময়ে সেটির সঙ্গে একটি কাঠের টুলের ধাক্কা লাগে বলে অভিযোগ। ট্র্যাকের পাশে রেলিং বা অন্য কিছুর কাজের জন্য সেটি এনে ব্যবহার হয়েছিল বলে অনুমান। রেকের ধাক্কায় টুলটি ভেঙে যায়। তার একাংশ লাইন থেকে পরিষ্কার করতেই অনেকটা সময় লেগে যায়। এর জন্য প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরি হয় বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠেছে, মহড়া দৌড়ের আগে ট্রলি চালিয়ে আদৌ কি দেখা হয়েছিল? এর পরে অতি সন্তর্পণে রেকটি রুবি পৌঁছয় এবং সেখান থেকে আবার কবি সুভাষ ফিরে আসে। লাইনের পাশ দিয়ে মেট্রোর কর্মী এবং আধিকারিকদের জরুরি প্রয়োজনে হাঁটার যে রাস্তা, সেখানে কিছু পড়ে থাকলে তা সরাতে দেখা গিয়েছে বলেও জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ জন্য বার বার ট্রেন থামাতেও হয়।
সরকারি ভাবে মহড়া চাক্ষুষ করতে মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা আরভিএনএলের শীর্ষ কর্তারা ছাড়াও স্থানীয় কর্তারা এসেছিলেন। কলকাতা মেট্রোর শীর্ষ কর্তারাও আসেন। একাধিক সমস্যা সত্ত্বেও দীর্ঘ ১০ বছর পরে ই এম বাইপাসে মেট্রো ছুটতে দেখার জন্য দু’পাশের বহু আবাসনে ছিল ভিড়। অনেকেই মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করেছেন মহড়ার সেই দৃশ্য। আরভিএনএল কর্তৃপক্ষ মহড়া দৌড়ের ছবি তুলে রাখার জন্য ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করেন।
আরও কয়েক দফা মহড়া দৌড়ের পরে, সিগন্যালিং ব্যবস্থা ছাড়া মেট্রো পরিষেবা শুরু করার জন্য আগামী অক্টোবর মাসে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের কাছে আবেদন জানাবেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সব কিছু ঠিক থাকলে নভেম্বর মাসে নিউ গড়িয়া থেকে রুবির মধ্যে মেট্রো পরিষেবা খুলে দেওয়া হতে পারে বলে খবর। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, এই মহড়া দৌড়ে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy