Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Shashi Panja

Shashi Panja: ১১টি ওয়ার্ডেই জয় দেখছেন শশী, বিশেষ নজরে থাকবেন কন্যা পূজা

কলকাতা পুরভোটে কলকাতা থেকে নির্বাচিত মন্ত্রীদের কেন্দ্রের পুরচিত্র কেমন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

অঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ

অঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৪৮
Share: Save:

প্রয়াত অজিত পাঁজার পুত্রবধূ হিসেবে রাজনীতিতে আগমন। কিন্তু গত ১০ বছরের তৃণমূল জমানায় রাজ্য রাজনীতিতে নিজস্ব পরিচিতি অর্জন করেছেন শ্যামপুকুরের বিধায়ক শশী পাঁজা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ২,১০০-র কিছু বেশি ভোটে শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়েছিল বিজেপি। তখন শ্যামপুকুর নিয়ে ‘গেল-গেল’ রব উঠেছিল। কিন্তু বছর দু’য়েক সময় নিয়ে শশী আবার নিজের আয়ত্তে এনেছেন শ্যামপুকুরকে। তাই এ বারের পুরভোটে শ্যামপুকুরের লড়াই তাঁর কাছে ততুলনায় ‘নিরাপদ’।

সেই ‘নিরাপত্তা’-র কারণেই শ্যামপুকুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে মন্ত্রী শশীর আইনজীবী কন্যা পূজা পাঁজাকে। হাতেকলমে রাজনীতি না করলেও মায়ের জন্যই এই যুদ্ধে পূজাকে এগিয়ে রাখছেন ভোট রাজনীতির কারবারিরা। পূজাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে বলেই এ বার টিকিট দেওয়া হয়নি ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর পার্থ মিত্রকে। তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষিত হয়েছিলেন। তবে ‘সুবোধ বালক’-এর মতো ঘরে ফিরেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ডাকে। পাশাপাশি জানিয়েছেন, পূজাকে জয়ী করতেই পরিশ্রম করবেন।

কলকাতা পুরসভার মোট ১১টি ওয়ার্ড নিয়ে শ্যামপুকুর বিধানসভা। ৭, ৮, ৯, ১০, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২৪ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে। ২০১০ সালের পুরভোটে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে কাউন্সলর হয়েছিলেন শশী। মেয়র পারিষদও (শিক্ষা) হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৩ সালেই তাঁকে মন্ত্রিসভার সদস্য করে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৫ সালে তাই আর পুরভোটে দাঁড়াননি শশী। সে বার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন তারকনাথ চট্টোপাধ্যায়। এ বারও টিকিট পেয়েছেন ‘শশী-ঘনিষ্ঠ’ ওই বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর।

শ্যামপুকুর এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে সংখ্যালঘু ভোটের প্রভাব তেমন নেই বলেই বিজেপি-র উত্তর কলকাতা জেলা কমিটি সেখানে ভাল ফলের আশা করছে। ২০১৫ সালে ৭ নম্বর ওয়ার্ডটিতে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী বাপি ঘোষ। কিন্তু তিনি পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এ বারও তিনি প্রার্থী। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মিতালি সাহাকে আবার টিকিট দেওয়া হয়েছে।

দশকের পর দশক ধরে কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডটি ধরে রেখেছে বামেরা। ২০০৫ সাল থেকে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর করুণা সেনগুপ্ত। প্রবীণ সিপিআই নেত্রীকে এ বার আবার প্রার্থী করা হয়েছে। ওয়ার্ডে জনপ্রিয়ও তিনি। বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর করুণা বলছেন, ‘‘মানুষ আমাকে চেয়েছিলেন বলেই এত বছর আমি কাউন্সিলর। আশা নিয়েই মানুষ বাঁচে। তাই আবার নির্বাচিত হব বলেই আশা রাখি। তা ছাড়া করোনা অতিমারীর সময় বামপন্থীরা যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন, তাতে সমর্থন আরও বৃদ্ধি পাওয়ারই কথা। মন্ত্রীর কেন্দ্র হলেও কেন পুর পরিষেবা বেহাল, তা নিয়ে শাসকদলকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে।’’

শাসক তৃণমূল আস্থা রেখেছে ১৭, ১৮, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলরদের ওপরেই। সিপিএমের দখলে-থাকা ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী মহিলা নেত্রী মীরা হাজরা। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বিদায়ী কাউন্সিলর ইলোরা সাহা। বিজেপি শিবিরের দাবি, মানুষ ভোট দিতে পারলে শ্যামপুকুর বিধানসভা থেকে অপ্রত্যাশিত ফল পাবেন তাঁরা।

কিন্তু মন্ত্রী শশী স্বয়ং মোট ১১টি ওয়ার্ডেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বেশি আশাবাদী সম্ভবত ৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। যেখানে প্রার্থীর নাম পূজা। পূজা পাঁজা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE