Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মাঝ আকাশে বিমানে ‘উধাও’ সোনার হার

ঠিক কোথায় হারাল, কোথাও অবহেলায় পড়ে রইল, নাকি কারও পকেটস্থ হল — তা বলতে পারছেন না কেউই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৩
Share: Save:

আকাশে ১২ হাজার ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে কোথাও হারিয়ে গিয়েছে ২০ হাজার ২০০ টাকার সোনার হার!

ঠিক কোথায় হারাল, কোথাও অবহেলায় পড়ে রইল, নাকি কারও পকেটস্থ হল — তা বলতে পারছেন না কেউই। যাদের বিমানে চেপে হার কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে শিকাগো পাড়ি দিয়েছিল, সেই এয়ার ইন্ডিয়াও বলতে পারছে না। যাদের মাধ্যমে সেই হার পাঠানো হয়েছিল সেই ডাক বিভাগও অন্ধকারে।

মাঝখানে পড়ে ৬৯ বছরের বৃদ্ধ জ্যোতির্ময় হাজরার ভীষণ মন খারাপ। একমাত্র নাতনি কিট্টুর (১০) জন্মদিনে উপহার হিসেবে পাঠানো সোনার হারটা তো তার পরাই হল না।

অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জ্যোতির্ময়বাবু থাকেন টালিগঞ্জে। একমাত্র মেয়ে কৌশিকি ২০০৭ সাল থেকে শিকাগোয় সংসার করছেন। তার পর থেকেই পুজোয়, মেয়ে-নাতনির জন্মদিনে, জামাইষষ্ঠীতে ছোট ছোট উপহার পাঠিয়ে যান জ্যোতির্ময়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘কিরণশঙ্কর রায় রোডের ডাক বিভাগের অফিসে গিয়ে প্রতি বারই ছোট ছোট পার্সেল পাঠিয়েছি। ১৫-২০ দিনের মধ্যে তা পৌঁছেও গিয়েছে।’’

কিট্টুর জন্মদিন ১০ ডিসেম্বর। তাই সময় নিয়ে গত বছর ২১ নভেম্বর সোনার হার পার্সেল করে পাঠিয়ে দেন জ্যোতির্ময়বাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কিট্টু অঙ্কে ভাল রেজাল্ট করছে। জন্মদিনের পাশাপাশি ওকে অঙ্কে উৎসাহিত করতেই হার পাঠিয়েছিলাম।’’ কিন্তু, কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে ১২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার মাঝেই উধাও হয়ে গিয়েছে সেই হার সমেত পার্সেল।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি শিকাগো থেকে মেয়ে যখন জানান, যে হার পৌঁছয়নি, তখন তিনি প্রথমে ছোটেন ডাক বিভাগে। তার পরে পাঁচ মাস কেটেছে। ডাক বিভাগকে বেশ কয়েকটি ই-মেল করেছেন তিনি। ডাক বিভাগ ই-মেলে যোগাযোগ করেছে এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে। এই মেল চালাচালির মধ্যে জ্যোতির্ময়বাবু জানতে পেরেছেন, শুধু সোনার হারই নয়, ডাক বিভাগের তরফ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার মাধ্যমে সে বার শিকাগোয় পাঠানো পাঁচটি প্যাকেট উধাও। যে কারণে, আইজলের বেশ কয়েকজনও নিয়মিত খোঁজখবর করছেন ডাক বিভাগে।

এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, শিকাগো অফিস জানিয়েছে, যা যা প্যাকেট এসেছিল, তারা তা সঠিক লোকের হাতে তুলে দিয়েছে। আবার জ্যোতির্ময়বাবুর মেয়ে মার্কিন দেশের ডাক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনেছেন, তারা বেশ কয়েকটি প্যাকেট হাতে পায়নি। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পার্সেল যদি তাদের কাছে পড়ে থাকত, তা হলে তা তারা জানতে পারতেন।

কলকাতার চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল অরুন্ধতী ঘোষ জানিয়েছেন, জ্যোতির্ময়বাবুর ওই প্যাকেটটি যে তাঁরা মার্কিন দেশের ডাক বিভাগের হাতে তুলে দিয়েছেন, তার প্রমাণপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে। অরুন্ধতীদেবীর কথায়, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বিমান সংস্থার উচ্চ পর্যায়ে অনুরোধ করা হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া যদি এমন প্রমাণপত্র দেখাতে পারে তা হলে আমরা মার্কিন ডাক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE