Advertisement
E-Paper

পর্যবেক্ষকই নেই, ডেঙ্গি দেখবে কে

প্রশাসনের একাংশ এর মধ্যে আলাদা ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, মশা নিধন কর্মসূচি নিয়ে পুরসভাকে কিছু বলাটা অর্থহীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগ দমনে রাজ্যের পুরসভাগুলি কেমন কাজ করছে, তা দেখতে এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কিন্তু ব্যতিক্রম হল কলকাতা পুরসভা! কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে দফতরের তরফে কোনও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, পুরসভা নিজেই এ বিষয়ে ‘এত জানে’ যে, তাদের ক্ষেত্রে আর পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রশ্ন নেই!

কিন্তু প্রশাসনের একাংশ এর মধ্যে আলাদা ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, মশা নিধন কর্মসূচি নিয়ে পুরসভাকে কিছু বলাটা অর্থহীন। কারণ, বরাবরই পুরসভা নিজের মতো করে কাজ করে এসেছে। প্রসঙ্গত, এর আগে স্বাস্থ্য দফতরও পুরসভার মশা দমন কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। স্বাস্থ্য দফতরেরও বক্তব্য ছিল, পুরসভা তাদের কোনও নির্দেশ মানতে খুব একটা আগ্রহী নয়। তারা নিজেদের মতো করেই মশা দমনের কাজটা চালায়। অথচ যখনই কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তখন তার দায়ভার কলকাতা পুরসভা নেয় না, উল্টে স্বাস্থ্য দফতরের উপরে চাপিয়ে দেয়। স্বাস্থ্য দফতরকে বলতে হয়, ডেঙ্গিতেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে কি না।

এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তাদের একাংশ। পুর দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে কোন পুরসভা কেমন কাজ করছে, সে বিষয়ে নজরদারি চালাতে এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুর দফতরের নির্দেশ পুরসভাগুলি মানছে কিনা, সেটা দেখাই ওই পর্যবেক্ষকদের কাজ। কিন্তু কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে কিছু করা হয়নি। কারণ, ওরা এ ব্যাপারে নিজেরাই জানে সব! কলকাতা পুরসভাকে শুধু প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হয়েছে।’’

যদিও গত বছরই শহরে ডেঙ্গিতে প্রায় হাজারেরও বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল একাধিক। পুর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গি-তথ্য চাপছেন বলে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। ফলে ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভা যতই স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকাঠামোর দাবি করুক, তা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে সব মহলেই প্রশ্ন উঠেছিল।

কলকাতা পুরসভার অবশ্য দাবি, পুর দফতর জেনেবুঝেই পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেনি। কারণ, তাদেরই একমাত্র ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া-সহ মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যথাযথ পরিকাঠামো রয়েছে। একটি স্বয়ংক্রিয় পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখাও রয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়ার্ড ও বরো স্তরে মশার আঁতুড়ঘর খুঁজে তা ধ্বংস করার জন্য তিনটি আলাদা আলাদা দলও
রয়েছে। এক পুরকর্তার দাবি, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা বিভাগের রূপরেখা অনুযায়ী কাজ করি। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কী কী করতে হবে, প্রয়োজনে অন্য পুরসভাও আমাদের কাছ থেকেই পরামর্শ নেয়। পুর দফতর সেটা বুঝেই আমাদের ক্ষেত্রে হয়তো পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেনি।’’

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের বক্তব্য, ‘‘পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর যেটা মনে করেছে, সেটাই করেছে। কোনও শিক্ষক যদি মনে করেন, এই ছাত্র ভাল, এর বাড়তি কিছুর প্রয়োজন নেই। এটাও তেমনই। এটা নিয়ে আমাদের কী বলার আছে!’’

পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ে লিফলেট বিলি, সচেতনতা প্রচারের জন্য ইতিমধ্যেই পুরসভাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী কী করণীয়, সে ব্যাপারে একগুচ্ছ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশ পালন হল কি না, তা নিয়ে প্রতিনিয়ত নজরদারিও চালানো হচ্ছে। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুরসভাগুলো কী করছে, তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে।’’

Dengue ডেঙ্গি Mosquitos কলকাতা পুরসভা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy