Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের নামে প্রতারণা, পাকড়াও যুবক

অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সল্টলেকের এএ ব্লক থেকে সেই ‘র’-এর কর্তা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৩
Share: Save:

স্ত্রী জানতেন, তাঁর স্বামী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এক বড় কর্তা। বিয়ের আগে তেমনটাই দাবি করেছিল হবু বর। পাত্রীপক্ষেরও কোনও সংশয় বা সন্দেহ জাগেনি। কিন্তু, বিয়ের এক মাস পার হতেই আসল রূপ বেরিয়ে পড়ে তার। স্ত্রী দেখেন, প্রতি রাতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যায় স্বামী। সন্দেহ হওয়ায় এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই শুরু হয় নির্যাতন। তার মাসখানেক পরে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে অন্যত্র চলে যায় সেই ব্যক্তি। খোঁজ নিয়ে স্ত্রী জানতে পারেন, তাঁর স্বামী নিজের যে পরিচয় দিয়েছিল, তা পুরোপুরি ভুয়ো। বিয়ের শংসাপত্রটাও জাল। শুধু তা-ই নয়, ওই লোকটি আগে বিয়েও করেছিল। এ সব জেনেই সটান বিধাননগর থানায় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্ত্রী।তিনি প্রয়াত, প্রাক্তন বিধায়কের মেয়ে।

অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সল্টলেকের এএ ব্লক থেকে সেই ‘র’-এর কর্তা পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তারা। ধৃতের নাম দেবার্শন মিত্র। পুলিশ জানায়, দেবার্শনকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় সে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এর পরে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই নামে কেউ সেখানে কাজ করেন না।

পুলিশকে মহিলা জানিয়েছেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দেবার্শনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। বিয়ের পরে বরাহনগরের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে দেবার্শনের সঙ্গে থাকছিলেন তিনি। দেবার্শন তাঁকে জানিয়েছিল, ওটা তারই ফ্ল্যাট। কিন্তু, বিয়ের কিছু দিন পরেই স্ত্রী লক্ষ করেন, প্রতি রাতেই বিভিন্ন অজুহাতে দেবার্শন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তা নিয়ে মহিলা জিজ্ঞাসাবাদ করাতেই শুরু হয় অশান্তি।

পুলিশের দাবি, দফায় দফায় জেরার মুখে দেবার্শন স্বীকার করেছে যে, সরকারি স্ট্যাম্প ও সিল জাল করে বিভিন্ন ধরনের ভুয়ো নথি তৈরি করেছিল সে। এমনকী, বিয়ে করার আগে হবু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে এক মহিলাকে নিজের ‘মা’ সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সে।

এখানেই শেষ নয়। তদন্তকারীরা জানান, বিয়ের শংসাপত্র জাল তো বটেই, এমনকী ম্যারেজ রেজিস্ট্রার বলে যাকে বিয়ের দিন নিয়ে আসা হয়েছিল, সে-ও ছিল ভুয়ো। বিয়ের পিছনে প্রতারণার এমন নিখুঁত পরিকল্পনা কী উদ্দেশ্যে, সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। পুলিশের একাংশের সন্দেহ, মহিলার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়াটাই সম্ভবত দেবার্শনের লক্ষ্য ছিল। কারণ পুলিশের দাবি অনুযায়ী, ধৃত দেবার্শন স্বীকার করেছে যে, অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করার আগে আরও দুই মহিলাকে বিয়ে করেছিল সে। উদ্দেশ্য একটাই। তাঁদের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া।

পুলিশ জানায়, বুধবার ধৃতকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। তাকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cheating Marriage Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE