Advertisement
E-Paper

এত পটল তুলবে কে? চিন্তায় শুল্ক অফিসারেরা

কনভেয়ার বেল্টে যে বড় ট্রে-র উপরে যাত্রীর ছোট ব্যাগ আসে, শুল্ক দফতরে সেই রকম একটি ট্রে-র উপরে পড়ে রয়েছে আধ ভাঙা সেই পটলের স্তূপ।

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৮ ০৩:২০
স্তূপাকার: কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতরে পড়ে পটল। নিজস্ব চিত্র

স্তূপাকার: কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতরে পড়ে পটল। নিজস্ব চিত্র

কুড়ি কিলোগ্রাম পটল নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক অফিসারেরা।

কনভেয়ার বেল্টে যে বড় ট্রে-র উপরে যাত্রীর ছোট ব্যাগ আসে, শুল্ক দফতরে সেই রকম একটি ট্রে-র উপরে পড়ে রয়েছে আধ ভাঙা সেই পটলের স্তূপ। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরেও তা বেশ সতেজ, তাজা। কিন্তু কী করবেন এত পটল নিয়ে, ভেবেই পাচ্ছেন না শুল্ক অফিসারেরা।

সাধারণত সোনা থেকে শুরু করে বিদেশি মুদ্রা, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, সিগারেট, মদ— শুল্ক দফতর যা বাজেয়াপ্ত করে, তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্ট্র্যান্ড রোডে শুল্ক বিভাগের সদর দফতরে। কিছু জিনিস চলে যায় সরকারি কোষাগারে। কিছু জিনিস নিলাম করা হয়।

আধ ভাঙা পটল তো আর নিলাম হবে না। তা ছাড়া এই পটল তো খাতায় কলমে বাজেয়াপ্তও হয়নি। তার ভিতর থেকে পাওয়া গিয়েছে ইউরো। ফলে শেষ পর্যন্ত আবর্জনার স্তূপেই এই ২০ কিলোগ্রাম পটল পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছেন শুল্ক অফিসারেরা।

সোমবার রাতে ওই পটল নিয়ে ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে ধরা পড়ে যান দুই যুবক। তাঁদের দু’টি ব্যাগে ১০ কিলোগ্রাম করে পটল ছিল। সেই পটল ফাটিয়ে তার থেকে বেরিয়েছে ৫৫ হাজার ইউরো। সেই দুই যুবককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। শুল্ক দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, ১ কোটি টাকার কম মূল্যের বিদেশি মুদ্রা নিয়ে ধরা পড়লে জামিন পেয়ে যান অভিযুক্তেরা।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এক একটি বড় সাইজের পটলের মধ্যে ১০টি করে ৫০০ ইউরোর নোট মুড়িয়ে রাখা ছিল। যার অর্থ, একটি পটলের ভিতরে পাওয়া যায় ৫ হাজার ইউরো। এ ভাবে এক জন যুবকের ব্যাগে রাখা মাত্র ৫টি পটল থেকে ২৫ হাজার এবং অন্য যুবকের ব্যাগে রাখা মাত্র ৬টি পটলের ভিতর থেকে ৩০ হাজার ইউরো পাওয়া যায়।

পটলের মাথা কেটে ভিতরের শাঁস বার করে সেটিকে কেটে ফেলা হয়েছিল। ফাঁপা অংশে ইউরো ঢুকিয়ে তা আবার আঠা দিয়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। শুল্ক অফিসারদের কথায়, ‘‘বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপতেই ফেটে যাচ্ছিল পটল। ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছিল ইউরো। কিন্তু কোন পটলের ভিতরে ইউরো আছে, কোনটার মধ্যে নেই, তা বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছিল না।’’ তাই ২০ কেজি পটলের প্রতিটিকেই ফাটিয়ে ফাটিয়ে দেখতে হয়েছে তাঁদের। এখন সেই ফাটা পটল পড়ে রয়েছে ট্রে-র উপরে।

প্রাথমিক জেরার মুখে ওই দুই যুবক জানিয়েছেন, কলকাতার এক ব্যক্তি তাঁদের হাতে ওই দু’টি ব্যাগ ব্যাঙ্ককে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন। সেই ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় তাঁদের জানা নেই। ওই ব্যক্তি তাঁদের শুধু জানান, ব্যাঙ্কক পৌঁছনোর পরে তাঁদের নম্বরে যোগাযোগ করে নেবেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে পটল ভর্তি ব্যাগ। ওই দুই যুবকের দাবি অনুযায়ী, পটলের ভিতরে যে ইউরো লুকোনো রয়েছে, তা তাঁরা জানতেন না। শুধু ব্যাগ ভর্তি পটল পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁদের কিছু টাকা পাওয়ার কথা ছিল।

এই দুই যুবকের কাছ থেকে কয়েকটি মোবাইল নম্বর পাওয়া গিয়েছে। তার সূত্র ধরে সেই ব্যক্তির খোঁজ চলছে, যিনি পটল ভর্তি ব্যাগ তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

কিন্তু এত পটলের এ বার হবে কী, ভেবে পাচ্ছেন না শুল্ক কর্তারা। পটল নিয়ে যা হল, তেমন অভিজ্ঞতা সে ভাবে হয়নি শুল্ক কর্তাদের। ফলে তাঁরাও বিভ্রান্ত। তা ছাড়া আছে আরও এক সমস্যা। বাজেয়াপ্ত হওয়া জিনিস ফেলতে উপর মহলের অনুমতি লাগে। অতএব পটল-সঙ্কট কাটা সহজ নয়।

Customs Officers Euro Notes Airport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy