রিঙ্কি ঘোষ
মেয়ের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থের দ্বারস্থ হলেন পিয়ারলেস হাসপাতালে আত্মঘাতী নার্সিং পড়ুয়া রিঙ্কি ঘোষের বাবা আনন্দ ঘোষ। মেয়ের মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। ক্রিক রো-এ নার্সেস ইউনিটি নামে এক সংগঠনের ডাকা সাংবাদিক বৈঠকে বুধবার এ কথা জানান তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। ওকে খুন করা হয়েছে।’’ তাঁর আবেদন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসন আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য প্রকৃত দায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। যাতে অন্য মেয়েরা এই পথ বেছে না নেয়।’’
গত ১০ মে পিয়ারলেস নার্সিং কলেজের ছাত্রী, রিঙ্কির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, আত্মহত্যা করেছেন রিঙ্কি। যদিও পরে হাসপাতাল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেন তাঁর বাবা। প্রতিবাদে কলেজে বিক্ষোভ দেখান তাঁর সহপাঠীরাও। দু’দিন অচলাবস্থার পরে নার্সিং কলেজ আপাতত বন্ধ।
এ দিন আনন্দবাবুর অভিযোগ, ‘‘কলেজে এতই মানসিক চাপ দেওয়া হত যে, আমাদের সন্তানেরা তা সহ্য করতে পারত না। মেয়ে কখনও আমাকে তা বলেনি। জানলে ছাড়িয়ে দিতাম। মেয়েটা এ ভাবে মরত না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ইন্টারনাল পরীক্ষার নম্বর কলেজের হাতে থাকায় ওদের মারাত্মক খাটানো হত। নম্বর কম দেওয়ার ভয়ও দেখানো হত। আমার মেয়েকেও নম্বরের ভয় কাবু করে ফেলেছিল!’’
আনন্দবাবুর দাবি, গত ১০ মে কলেজে অভিভাবকদের ডেকে কথা বলেন কর্তৃপক্ষ। বাবার অভিযোগ, সেখানে রিঙ্কির সামনে তাঁর বাবাকে বলা হয়, তাঁর দেওয়া স্মার্টফোনে দিনরাত কথা বলেন রিঙ্কি। আনন্দবাবু আরও বলেন, ‘‘পরে বললাম, ফোনটা ক’দিনের জন্য নিয়ে যাই। মেয়েও বিনা প্রতিবাদে দিয়ে দিল। ক্লাসে ফিরে গিয়ে নাকি ওকে দিদিমণিরা বলেছেন, ‘কারও বাবা ফোন নিলেন না, তোমারটাই নিলেন? তা হলেই বোঝ তুমি কেমন!’ এতে অপমানিত হয়েছিল ও।’’ নার্সেস ইউনিটির সম্পাদক পার্বতী পাল বলেন, ‘‘নার্সদের নিরাপত্তার জন্যও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’’
পিয়ারলেস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ছাত্রীর বাবার দাবি, ‘‘কলেজের তদন্তে আমার বিশ্বাস নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশের সাহায্য চেয়েছি। আমার বিচার চাই।’’ হাসপাতালের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ওই ছাত্রীর অভিভাবকের কলেজের বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। যথাযথ ব্যবস্থা নেব। তবে অন্য পড়ুয়াদের জন্য কলেজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy