Advertisement
E-Paper

বাস গিয়েছে ভোটে, পথে শুধুই দুর্ভোগ

হাতে গোনা কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চললেও বহু রুটে এ দিন বেসরকারি বাসের দেখা মেলেনি। যার জেরে টালা থেকে টালিগঞ্জ— সর্বত্রই দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য নিত্যযাত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০১:৪৮
বাস আসতেই ধরার জন্য দৌড়। সোমবার, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বাস আসতেই ধরার জন্য দৌড়। সোমবার, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন কার্যত বাসবিহীন হয়ে রইল শহরের রাজপথ।

হাতে গোনা কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চললেও বহু রুটে এ দিন বেসরকারি বাসের দেখা মেলেনি। যার জেরে টালা থেকে টালিগঞ্জ— সর্বত্রই দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য নিত্যযাত্রী। সরকারি বাস চললেও তার সংখ্যা ছিল নিতান্তই কম। বহু যাত্রীকেই কর্মস্থলে পৌঁছতে অটো, ট্যাক্সি বা অ্যাপ-ক্যাবের উপরে নির্ভর করতে হয়েছে।

অটো ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচনের জন্য দলীয় কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় বহু রুটে অটোর সংখ্যাও ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। বাসমালিক সংগঠনের দাবি, নির্বাচনের প্রয়োজনে বহু বাস তুলে নেওয়ার ফলেই এ দিন শহরে বাসের এত অভাব ছিল। ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দুই ২৪ পরগনা এবং হাওড়া মিলে শহরতলি থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে সাত হাজার বাস কলকাতায় ঢোকে। এর প্রায় ৭৫ শতাংশকেই নির্বাচনের কাজে লাগানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তিন জেলা প্রশাসন ছাড়া কলকাতা পুলিশও বাস নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘কেন এই পরিস্থিতি, তার উত্তর জেলাশাসকেরাই দিতে পারবেন।’’

মিনিবাস সংগঠন সূত্রের খবর, প্রতিদিন কলকাতায় প্রায় ১২০০ মিনিবাস রাস্তায় নামে। এ দিন নির্বাচনের কাজে চলে যাওয়ায় প্রায় ৭০০ বাস রাস্তায় নামেনি।

বাসমালিকেরা জানিয়েছেন, কয়েকটি রুটে প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ বাসই এ দিন পথে নামেনি। যেমন, কামারহাটি-আলিপুর। ওই রুটের ৯০টি বাসের মধ্যে এ দিন রাস্তায় নেমেছে মাত্র পাঁচটি। বাকিগুলি চলে গিয়েছে নির্বাচনের কাজে। ৩৪সি, নোয়াপাড়া-ধর্মতলা রুটেও এ দিন মাত্র পাঁচটি বাস চলেছে। এসি-৩০ রুটে দমদম রেল স্টেশন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত চলা ১৭টি বাসের মধ্যে এ দিন মাত্র চারটি চলেছে। ‘নর্থ কলকাতা বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, “অনেক রুটেরই বেশির ভাগ বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ওই রুটগুলিতে বাস প্রায় চলেইনি।” বেহালার মিনিবাস সংগঠনের স্বপন ঘোষ জানান, বেহালা চৌরাস্তা, শখের বাজার, জোকা-সহ একাধিক রুটে বাস চলেছে গুটি কয়েক।

গড়িয়ার মিনিবাস সংগঠনের নেতা অপু ঘোষ অবশ্য জানান, কিছু জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জিতে যাওয়ায় ভোট হয়নি। ফলে সেই সব জায়গার জন্য বাস নেওয়া হয়নি। তবে জেলা শহর থেকে যাতায়াত করা বাস কম চলায় এ দিন প্রবল সমস্যায় পড়েন হাওড়া, শিয়ালদহের যাত্রীরা। হয়রানির মুখে পড়তে হয় সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদেরও।

রাজ্য পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, কলকাতায় এ দিন সমস্ত রুট মিলিয়ে মোট ৫২৩টি বাস চলেছে। সরকারি বাসের সংখ্যা কমানো হয়নি বলেই পরিবহণকর্তাদের দাবি। বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসের মালিকদের একটি বড় অংশের অভিযোগ, নির্বাচনের মতো সরকারি কাজে বাস দিতে আপত্তি না থাকলেও বাস নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে তাঁদের প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন বাস সংগঠনের অভিযোগ, বাস তোলার যে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, পুলিশ তার তোয়াক্কা না করেই যখন যে ভাবে পেরেছে, বাস তুলে নিয়েছে। বাস তুলে নেওয়ার পরে সেই রুটে কোনও সমস্যা হবে কি না, এক বারও ভাবা হয়নি।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Bus Service
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy