এত দিন মরণোত্তর অঙ্গ প্রতিস্থাপনে গ্রিন করিডর তৈরি করত পুলিশ। এ বার গুরুতর অসুস্থ এক কিশোরীর জীবন বাঁচাতেও গ্রিন করিডর গড়ার নজির গড়ল হাওড়া সিটি পুলিশ। তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল কলকাতা পুলিশও। হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল পর্যন্ত গোটা পথ গ্রিন করিডর করার পাশাপাশি ভেন্টিলেশনে থাকা ওই কিশোরীকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সঙ্গে ছিল পুলিশের একটি পাইলট ভ্যানও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার মাঝ রাতে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয় ১৪ বছরের পৌষালি পাল। মধ্য হাওড়ার গদাধর মিস্ত্রি দ্বিতীয় বাই লেনের বাসিন্দা নবম শ্রেণির ছাত্রী পৌষালি পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটও খেলে। গত কয়েক বছর বেলুড়ের একটি ক্রিকেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষীরতন শুক্লর ক্রিকেট অ্যাকাডেমিরও নিয়মিত খেলোয়াড় ওই কিশোরী।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে হঠাৎই মেয়েটির প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তার অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হতে থাকায় মঙ্গলবার তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। হাসাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ওই কিশোরীর ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ওই রাতেই খবর পেয়ে হাওড়া হাসপাতালে পৌঁছন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। তিনি কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। বুধবার ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে শুরু করায় পরিবারের লোকজন তাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য চেষ্টা শুরু করেন। প্রথমে ঠিক হয় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ চেষ্টার পরেও শয্যা না মেলায় দুপুরে সিদ্ধান্ত হয়, কিশোরীকে দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
কিন্তু ভেন্টিলেশনে থাকা এক জন রোগিণীকে কী ভাবে এতটা পথ নিয়ে যাওয়া হবে সে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান পরিজনেরা? সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়ে লক্ষ্মীরতন শুক্ল হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহকে অনুরোধ করায় গ্রিন করিডর তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। পাশাপাশি, যোগাযোগ করা হয় কলকাতা পুলিশের সঙ্গে। তারাও সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেয়।
হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি ট্র্যাফিক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাওড়া হাসপাতাল থেকে বিদ্যাসাগর সেতু পর্যন্ত গ্রিন করিডরের পাশাপাশি আমাদের পাইলট কারও ছিল। এর পরে কলকাতা পুলিশের পাইলট কার গ্রিন করিডরের মাধ্যমে কিশোরীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy