এক দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর হল। রবিবার, পূর্ব যাদবপুর থানার নয়াবাদের ঘটনা। মৃতদের নাম উৎপল ঘোষ (৫১) ও তনুশ্রী কোলে (৪৫)।
পুলিশ সূত্রের খবর, ই এম বাইপাস লাগোয়া নয়াবাদে একটি বাড়ির তিনতলায় থাকতেন নিঃসন্তান ওই দম্পতি। উৎপলবাবুর ভাগ্নে ডালিম দত্ত মামার কাছে থাকতেন। তিনি বিজয়গড়ের একটি কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র। রবিবার রাত ন’টা নাগাদ তিনি বীরভূমে নিজের বাড়ি থেকে ফেরেন। নয়াবাদের ফ্ল্যাটে এসে দেখেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় দরজায় জোরে ধাক্কা দেন তিনি। দরজা খুলতেই মামা-মামিকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন ডালিম। ডালিমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর পৌঁছয় থানায়। পুলিশ দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে দু’টি সুইসাইড নোট মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তনুশ্রী দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। উৎপলবাবু গৃহশিক্ষকতা করতেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে তিনি প্রোমোটিং ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয় সূত্রের খবর, উৎপল ও তনুশ্রী উভয়ের আদি বাড়ি লেক গার্ডেন্সে। বছর দশেক আগে তাঁরা নয়াবাদে ফ্ল্যাট কিনে আসেন। শৈশব থেকেই উৎপল পোলিয়ো আক্রান্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে প্রোমোটিং ব্যবসা শুরু করার পরে প্রচুর দেনায় জড়িয়ে পড়েন উৎপল। তনুশ্রীর ভাই শ্রীমন্তকুমার কোলের অভিযোগ, ‘‘জামাইবাবু প্রোমোটিংয়ে যুক্ত হওয়ার পরেই ঝামেলায় জড়ান। অনেক ঋণও হয়ে যায়।’’ তিনি বলেন, ‘‘মার্চের শেষে দিদি
আমার থেকে তিরিশ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। ডালিমও সপ্তাহখানেক আগে জানিয়েছিল, মামাকে হুমকি দিয়ে কেউ ফোন করছে।’’ শ্রীমন্তের দাবি, ‘‘হুমকির চাপে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন উৎপল-তনুশ্রী।’’
ডিসি (পূর্ব) রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘সুইসাইড নোট ছাড়াও দু’টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তার তদন্ত চলছে।’’ গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘উৎপলবাবু এক ব্যক্তির কাছে মোটা টাকা ধার নিয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে গিয়েছিলেন। সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy