এ যেন প্রদীপের নীচেই অন্ধকার!
এক দিকে সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত কলকাতার নতুন গড়ে ওঠা ঝাঁ-চকচকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আর তার পাশেই বিমানবন্দরের কার্গো বিভাগে পানীয় জলের জন্য নিত্যদিন হাহাকার! সেখানে পানীয় জলের একটিমাত্র কল রয়েছে। সুতোর মতো জল বেরোয়। কখনও তা-ও বেরোয় না। পানীয় জল কিনতে গেলেও হেঁটে যেতে হয় বেশ খানিকটা পথ। কার্গো বিভাগের এক কর্মীর কথায়, ‘‘আধুনিক বিমানবন্দরের কোনও পরিষেবাই আমরা পাই না। পানীয় জলটুকুও নেই। এমনই দুরবস্থার মধ্যে আমরা প্রতিদিন কাজ করি।’’ কার্গো বিভাগের কর্মীরা জানাচ্ছেন, শুধু তাঁরাই নন, দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ নানা প্রয়োজনে সেখানে যান। এই তীব্র গরমে সবাই জলকষ্টে ভুগছেন। সমস্যা শৌচাগার নিয়েও। কারণ, তারও সংখ্যা মাত্র একটি।
আধুনিকীকরণের পরে বিমানবন্দরের পুরনো অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক টার্মিনাল এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরনো বিমানবন্দর ভবনেই চলে এসেছে অন্তর্দেশীয় কার্গো বিভাগ। ওই বিভাগ আগে ছিল বিমানবন্দরের সাত নম্বর গেটের কাছে। কার্গো-কর্মীদের অভিযোগ, বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের পরে নতুন জায়গায় এসে তাঁরা বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। পুরনো কার্গো বিভাগেও কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যা ছিল। কিন্তু পানীয় জলটুকু অন্তত সেখানে পাওয়া যেত। এখন সেটাও বন্ধ।
সাতটি বিমান সংস্থার কার্গোর অফিস রয়েছে এই অন্তর্দেশীয় কার্গো বিভাগে। শুধু এই বিভাগের কর্মীরাই নন, ক্যুরিয়র সার্ভিসের প্রচুর কর্মীও রোজ নানা প্রয়োজনে এখানে আসেন। ট্রান্সপোর্টার, গাড়ির চালক, মালবহনকারীরাও কাজের প্রয়োজনে এখানে আসেন। এক বিমান সংস্থার আধিকারিক বললেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমে আমাদের এক কর্মী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে খাওয়ানোর জন্য জল পর্যন্ত মেলেনি। শেষে নতুন বিমানবন্দর থেকে জল কিনে আনতে হল।’’ এক ক্যুরিয়র সংস্থার কর্মী বললেন, ‘‘এখানে একটিমাত্র কল। জলে এত দুর্গন্ধ যে, ভয় লাগে খেতে। সারা দিন যত মানুষ এখানে আসেন, তাতে অন্তত চার থেকে পাঁচটি জলের কল থাকলে তবেই পানীয় জলের সমস্যা মিটবে।’’
শুধু পানীয় জলই নয়, কয়েক হাজার কর্মীর জন্য এখানে রয়েছে একটিমাত্র শৌচাগার। এখানে সাতটি সংস্থার কার্গো অফিস থাকলেও তাদের কারও আলাদা অফিসঘর নেই। বাইরে থেকে যাঁরা কাজে আসেন, তাঁদের বসার জায়গাটুকু পর্যন্ত নেই। এক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘এখানে বসার জায়গা নেই। জল নেই। শৌচাগার পর্যন্ত অপ্রতুল। নামেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো বিভাগ। পরিষেবার দিক
থেকে তো মান্ধাতার আমলে পড়ে রয়েছে। এ নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বহু বার জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।’’
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র ডিজিএম রাহুল নন্দী অবশ্য বলছেন, ‘‘এই কার্গোটি কমন ইউজার্স টার্মিনাল। এখানে আলাদা আলাদা কার্গো অফিস থাকার কথা নয়। পরিকাঠামোর দিক থেকে সে রকম কোনও খামতি এখানে নেই। তবে পানীয় জলের কোনও সমস্যা থাকলে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy