অফিসের ব্যস্ত সময়। সিগন্যাল সবুজ থাকায় গাড়ি চলাচল করছে ট্র্যাফিক নিয়ম মেনে। আচমকাই গাড়ির সামনে পড়ে গেলেন এক ব্যক্তি। চালকের তৎপরতায় বাঁচলেন তিনি।
শহরের আনাচ-কানাচে পুলিশের প্রচার ও নজরদারির মধ্যে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেক গাড়িচালকেরই। এ বার পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং গাড়ি চলাচল মসৃণ করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযোগস্থলে ফুটব্রিজ তৈরির প্রস্তাব দিল লালবাজার। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে ইতিমধ্যেই জায়গা বেছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের ৭০টিরও বেশি রাস্তার মোড়ে সব সময়েই গাড়ির চাপ বেশি থাকে। তাই প্রাথমিক ভাবে গড়িয়া মোড়, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, প্রিন্স আনোয়ার শাহ মোড়, সাউথ সিটির মতো ব্যস্ত ক্রসিংয়ে ফুটব্রিজ তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িচালকদের পাশাপাশি দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী পথচারীরাও। অন্য বারের তুলনায় গত বছর দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল কম৷ তা সত্ত্বেও পুলিশকে উদ্বেগে রেখেছে শহরে পথচারীদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান৷ গত বছর কলকাতা পুলিশ এলাকায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩২৯ জনের। যাঁদের মধ্যে ১৫০ জনই পথচারী। মূলত তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেই ফুটব্রিজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷
বর্তমানে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযোগস্থলে ব্যুম বেরিয়ার, গার্ডরেল এবং দড়ি দিয়ে পথচারীদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন পুলিশকর্মীরা। তাঁদের সাহায্যের জন্য কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের অধীনে প্রায় ৭০০ সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, বেপরোয়া পথচারীদের আটকানো এবং তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই চার বা পাঁচ রাস্তার মোড়ে ফুটব্রিজ তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনা শুরু হয় কয়েক মাস আগে। পরে বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডকে তাদের এলাকার জায়গা বেছে দিতে বলা হয়। সেই মতো বিভিন্ন গার্ডের তরফে ওই ফুটব্রিজ তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই ফুটব্রিজের সমীক্ষা করা হয়েছে। শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি বা শিয়ালদহ অথবা কাইজার স্ট্রিটের মতো জায়গায় ফুটব্রিজ হলে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।’’
লালবাজার জানিয়েছে, পথচারীরা যাতে নিয়ম মেনে রাস্তা পার হন, সে জন্য কিছু মোড়ে ট্র্যাফিক সিগন্যালের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। টাইমারের মাধ্যমে ‘অল রেড সিগন্যাল’ চালু হচ্ছে৷ গেট বসিয়েও পথচারীদের বাগে আনার কাজ শুরু হয়েছে।