Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্র-রাজ্য কাজিয়ার শিকার জল প্রকল্প

গত কয়েক বছর ধরে দ্রুত নগরায়নের চাপে ক্রমাগত বাড়ছে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার জনসংখ্যা। সরকারি হিসেবে এখন যা সাড়ে পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি।

উদ্যোগ: চলছে জল প্রকল্পের কাজ। ছবি:শশাঙ্ক মণ্ডল

উদ্যোগ: চলছে জল প্রকল্পের কাজ। ছবি:শশাঙ্ক মণ্ডল

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ২০:০৯
Share: Save:

বরাদ্দ ২২৭ কোটি টাকা। মিলেছে মাত্র ৩৪ কোটি ২৪ লক্ষ। এর জেরে পিছিয়ে যাচ্ছে সোনারপুর জল প্রকল্পের কাজ।

বরাদ্দ টাকার এত কম জোগান কেন? কেন্দ্র-রাজ্য ঠেলাঠেলিতেই হারিয়ে যাচ্ছে উত্তর।

বছর খানেক আগে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি টাকা খরচে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অম্রুতের’ এই জল প্রকল্প। মোট খরচের ৫০ শতাংশ কেন্দ্রের দেওয়ার কথা। ৪৫ শতাংশ রাজ্যের এবং পাঁচ শতাংশ সংশ্লিষ্ট পুরসভার দেওয়ার কথা। তিনটি পর্যায়ে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। প্রথম পর্যায়ে বরাদ্দ ২২৭ কোটি টাকা। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তার মাত্র ৩৪ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। কাজ শুরু হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না।

গত কয়েক বছর ধরে দ্রুত নগরায়নের চাপে ক্রমাগত বাড়ছে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার জনসংখ্যা। সরকারি হিসেবে এখন যা সাড়ে পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি। বর্তমানে পুর এলাকায় জলের চাহিদা মেটাতে অধিকাংশ আবাসনে রয়েছে গভীর নলকূপ। ভূগর্ভস্থ পরিস্রুত জলের ব্যবহার বন্ধ করতে এই কাজ হচ্ছে।

গার্ডেনরিচের ভূতঘাটে গঙ্গা থেকে জল তোলা হচ্ছে। ২৬ কিলোমিটার দূর থেকে টালিনালার ডান দিকের পাড় ধরে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল এনে তা লস্করপুরের পেয়ারাবাগান সংলগ্ন পরিশোধনাগারে পাঠানো হবে। সেখান থেকে পৌঁছে যাবে দু’টি ভূগর্ভস্থ জলাধারে। সেই জল পাইপলাইনের মাধ্যমে ১৯টি ওভারহেড জলাধারে জমা হবে। এর পরে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।

রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রের খবর, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ১৩৬ লক্ষ লিটার পরিশোধিত জল পাওয়া যাবে। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বারুইপুর পুরসভাকেও ওই জল সরবরাহ করা হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে ১১টি ওভারহেড ট্যাঙ্ক এবং তাতে জল তোলার প্রয়োজনীয় পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী নভেম্বরে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই ৪, ১৫, ২০, ২১, ২৩, ২৭, ২৯, ৩০,৩১, ৩৪, এবং ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১১টি ওভারহেড রিজার্ভারের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। পরে আরও আটটি ওভারহেড রিজার্ভার তৈরি হবে।

জল পরিশোধনাগার এবং একটি ভূগর্ভস্থ জলাধার তৈরির কাজ সদ্য শুরু হয়েছে। শেষ হতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লাগবে। পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস এবং চেয়ারম্যান পারিষদ (জল ও উদ্যান) নজরুল আলি মণ্ডলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের টাকা ঠিক মতো দিচ্ছে না। ফলে কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের দাবি, প্রকল্প শেষ হলে পানীয় জলের জোগানে স্বনির্ভর হবে পুরসভা।

প্রকল্পের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুধু কেন্দ্রের উপরে দায় চাপিয়ে লাভ নেই। এই প্রকল্পে প্রায় সমান অংশীদার রাজ্য সরকারও। রাজ্যের ভাগের অর্থ নিশ্চিত হলেই কেন্দ্রের তরফে টাকা পাওয়া যাবে বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water project Sonarpur water project
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE