Advertisement
০১ মে ২০২৪
Police Station

প্রোমোটারের থেকে প্রায় চার কোটি টাকায় বাড়ি কিনে থানার ‘মালিক’ হচ্ছে পুলিশ

ট্যাংরা থানার জন্য পাঁচতলা ওই ভবনটি কিনতে খরচ পড়েছে প্রায় ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সব ঠিকঠাক চললে নতুন বছরের গোড়া থেকেই ওই নতুন ভবনে শুরু হতে পারে থানার কাজ।

An image of the flat

নতুন এই ভবনেই চলবে ট্যাংরা থানার কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৬
Share: Save:

প্রোমোটারের কাছ থেকে বহুতল কিনছে পুলিশ! তা-ও আবার থানা হিসাবে ব্যবহার করার জন্য! কলকাতা পুলিশের ইতিহাসে এই প্রথম। কোনও থানা ভবনের মালিকানা সরাসরি কলকাতা পুলিশের হাতে থাকার ঘটনাও এই প্রথম বার। ট্যাংরা থানার জন্য পাঁচতলা ওই ভবনটি কিনতে খরচ পড়েছে প্রায় ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সব ঠিকঠাক চললে নতুন বছরের গোড়া থেকেই ওই নতুন ভবনে শুরু হতে পারে থানার কাজ।

২০২১ সালের এপ্রিলে কলকাতা পুলিশের তৎকালীন এক কর্তা ট্যাংরা থানায় গিয়েছিলেন একটি মামলার সূত্রে। কিন্তু থানার পরিস্থিতি দেখে ওই পুলিশকর্তা ভিতরে ঢুকতেই চাননি বলে প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকর্মীদের দাবি। ১৯৮৯ সাল থেকে ট্যাংরা থানা রয়েছে গোবিন্দ খটিক রোডের একটি ঠিকানায়। সেটি আদতে পুরসভার কসাইখানার (পিগ স্লটার হাউস) আধিকারিকের কার্যালয়। বাড়িটির একাংশে পুরসভার কাজ চলে। সামনের দিকে একটি অংশে রয়েছে থানা। কিন্তু তার ভগ্নপ্রায় অবস্থা। দেওয়ালের চুন-সুরকি খসে পড়ছে। উইপোকা আর ইঁদুরের উৎপাতে নাজেহাল পুলিশকর্মীরা। ওই পুলিশকর্তার নির্দেশেই এর পরে শুরু হয় বিকল্প ভবন খোঁজার কাজ। সেই সময়ে পুলিশের কাছে নিজের তৈরি বহুতল বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে যান অসীম সাহা নামে ট্যাংরার এক প্রোমোটার।

অসীম বললেন, ‘‘পুলিন খটিক রোডে আমার তৈরি একটি বাড়ি নিয়ে খুব সমস্যায় ছিলাম। লকডাউনের আগে ওই বাড়ির দু’-তিনটি ফ্ল্যাট বিক্রি হলেও লকডাউনের পরে আর তেমন হচ্ছিল না। এ দিকে, পুলিশ থানার জন্য ভবন খুঁজছে জানার পরে সরাসরি পুলিশকেই বাড়ি কেনার প্রস্তাব দিই। পুলিশকর্তাদের পছন্দ হয়। আমিও মুক্তি পেয়েছি। পুলিশও।’’ কিন্তু এ ভাবে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন পুলিশ কিনল কী করে? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম-নগরপাল (অর্গানাইজ়েশন) ওয়াকার রাজা বললেন, ‘‘এমনিতে এমন কাজে অন্য কোনও সরকারি দফতরের সাহায্য নিতে হয়। ওই দফতরের মাধ্যমে বাড়ি কিনে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুলিশ হাউজ়িং বোর্ডকে কাজে লাগানো হয়েছে। তাদের মাধ্যমে কেনার প্রস্তাব গিয়েছে সরকারের কাছে। সরকার মঞ্জুর করে টাকাও দিয়ে দিয়েছে। আসলে কাজ করার ইচ্ছে থাকলে সব হয়।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন ভবনের একতলায় সেরেস্তা, মেস, মালখানা এবং প্রসেস ঘরের পাশাপাশি মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা দু’টি লক-আপ থাকছে। এ ছাড়াও থাকছে মহিলাদের সাহায্য করার ডেস্ক। দোতলায় ওসি, অতিরিক্ত ওসি-সহ সার্জেন্ট এবং অফিসারদের ঘর থাকছে। তিন এবং চারতলায় তৈরি করা হয়েছে আধুনিক ব্যারাক। থানা তৈরির কাজে যুক্ত মূল নির্মাণ শ্রমিক রাম দেব এক দুপুরে বললেন, ‘‘লিফটও বসছে। এমন থানা কলকাতায় আর একটিও আছে কি না, সেটাই দেখার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Promoter Multi Storey Complex
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE