কুয়াশামাখা ভোরে চাদরমুড়ি দিয়ে বসেছিলেন পাঁচ-ছ’জন। পাশে বসে ধূমপান করছিলেন আরও কয়েক জন। সামনে গিয়ে দাঁড়াল ছোট মালবাহী গাড়ি। একটু পরেই সেখানে এল দুই যুবক। মালবাহী গাড়ির চালককে তারা কিছু বলছিল। তখনই তাদের ঘিরে ধরলেন ওই পাঁচ-ছ’জন। ওই দু’জনকে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে চলে গেলেন।
ওই পাঁচ-ছ’জন আসলে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার অফিসার। সোমবার ভোরে ছদ্মবেশে তাঁরা ধরেন রবিবার নারকেলডাঙায় গুলি চালিয়ে, ক্ষুর মেরে এক ব্যক্তিকে জখম করার ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকে। আরশাদ ও আকিল নামে ওই দু’জনকে হেস্টিংসের একটি ধর্মীয় স্থানের সামনে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, যে মালবাহী গাড়ির চালকের সঙ্গে তারা কথা বলছিল, সেই গাড়ি করেই সোমবার তাদের বিহারে পালানোর কথা ছিল। খবর পেয়ে সোমবার ভোর চারটে থেকেই গোয়েন্দারা ছদ্মবেশে বসেছিলেন। নারকেলডাঙার ঘটনায় পুলিশ টাকলা আলম, সাদ্দাম, গুড্ডু ও চিকনা মেহরাজ— এই চার জনকেও খুঁজছে। এ দিন ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, রবিবার নারকেলডাঙায় কংগ্রেসকর্মী কামরুদ্দিনকে লক্ষ করে গুলি চালায় আকিল ও সাদ্দাম। কামরুদ্দিনের মাথায় চপার দিয়ে আঘাত করে আরশাদ। সাদ্দাম টাকলার ছেলে। ধৃত দু’জন টাকলারই শাগরেদ। বিচারক তাদের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন।
লালবাজার সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল থেকেই তল্লাশি অভিযান শুরু করে গুন্ডাদমন শাখা। গভীর রাতে সোর্স মারফত তারা জানতে পারে, আরশাদ ও আকিল এক পরিচিতকে ফোন করে সোমবার ভোরে হেস্টিংস-এর ওই ধর্মীয় স্থানের কাছে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করতে বলেছে। সেই মতো ওই জায়গায় অপেক্ষা করতে থাকেন গুণ্ডাদমন শাখার অফিসারেরা।
নারকেলডাঙায় ঘটনার মূলে ওই এলাকার নর্থ রোডে নির্মীয়মাণ এক বহুতল আবাসনে ফ্ল্যাট বিক্রিকে ঘিরে জালিয়াতি। পুলিশ জানায়, প্রথমে ওই বহুতল নির্মাণ করছিল জালাল নামে এক জন। কিন্তু কয়েক জনের থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েও তাঁদের ফ্ল্যাটের মালিকানা না দিয়ে সে পালায়। পরে ওই আবাসন নির্মাণে যুক্ত হয় টাকলা আলম, যার নামে পুলিশের খাতায় সমাজবিরোধী কাজকর্মের বহু অভিযোগ রয়েছে। টাকলা আবার জালালের বিক্রি করা ফ্ল্যাটগুলো অন্যদের বিক্রি করে। রবিবার সমস্যার সমাধানে বাসিন্দাদের করা সভায় জালাল ও টাকলা দু’জনেই ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy