Advertisement
০১ মে ২০২৪
Kolkata Police

New Year 2022: কতটা সফল পুলিশ, উত্তর কয়েক ঘণ্টায়

লালবাজারের কর্তাদের অবশ্য দাবি, জরিমানা বা অন্য যে কোনও উপায়ে শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩৬
Share: Save:

বছরের শেষ দিন এবং বর্ষবরণের উৎসব ঘিরে কড়া নজরদারির আয়োজন করেছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা শহরকে বেশ কয়েকটি জ়োনে ভাগ করে বিশেষ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেই নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তাতেও করোনা-বিধি বলবৎ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, বর্ষশেষের আগের দিন, বৃহস্পতিবারেও শহর জুড়ে বিধিভঙ্গের বিভিন্ন ছবি দেখা গেল। রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমজনতার এই প্রবণতাই জাগিয়ে তুলছে আশঙ্কা।

লালবাজারের কর্তাদের অবশ্য দাবি, জরিমানা বা অন্য যে কোনও উপায়ে শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবেই। প্রয়োজনে মহামারি আইন জারি করে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। ওই আইনের জোরেই মাস্ক না পরা এবং বিধিভঙ্গের অভিযোগে শুধু নিউ মার্কেট চত্বর থেকেই বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ২০ জনকে। নজরদারি চালাতে শহর জুড়ে মোতায়েন করা হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশকর্মীকে। আজ, বছরের শেষ দিন বিকেল সাড়ে চারটে থেকেই তাঁরা পথের দখল নেবেন। রাতের জন্য পার্ক স্ট্রিট চত্বরকে ভাগ করা হয়েছে পাঁচটি জ়োনে। তবে আগামিকাল, ১ জানুয়ারি পার্ক স্ট্রিটকে চারটি জ়োনে ভেঙে সামলানো হবে। আজ রাতের প্রত্যেকটি জ়োনের দায়িত্বে থাকবেন এক জন করে ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশকর্তা। তাঁদের অধীনে থাকছেন একাধিক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। তবে ১ জানুয়ারি দু’টি করে জ়োনের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে ডেপুটি কমিশনার।

পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায় এ ছাড়াও থাকছে ১১টি নজর-মিনার, দু’টি কুইক রেসপন্স টিম। গির্জাগুলির সামনেও আলাদা পুলিশি বন্দোবস্ত থাকবে। কলকাতা পুলিশের সাতটি ডিভিশনে রাখা হচ্ছে নজরদারির বিশেষ দল। ২০টি মোটরবাইক শহরের পথে টহলদারি চালাবে। সেই সঙ্গে ২২টি পিসিআর ভ্যানও ঘুরবে। গোটা শহরে মোট পুলিশ-পিকেট থাকবে ১২৬টি। এ ছাড়া, আজ এবং কাল রাতে মহিলাদের সুরক্ষার জন্য আলাদা করে তৈরি থাকছে ‘উইনার্স’ এবং ‘শক্তি’ বাহিনী। পাশাপাশি, পরিস্থিতি বুঝে বিশেষ বন্দোবস্ত করবে ট্র্যাফিক পুলিশ। কলকাতার ঘাটগুলিতে থাকছে একটি বার্জ এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের একাধিক দল। দক্ষিণেশ্বর ও বেলুড়ে গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন এলাকায় রাখা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের।

শহরের দর্শনীয় স্থানগুলিতে গত কয়েক দিন ধরেই ভিড় উপচে পড়ছে। এ দিনও তার বদল ঘটেনি ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট, জাদুঘর, চিড়িয়াখানা, প্রিন্সেপ ঘাট এবং ময়দানে। ভিড়ের নিরিখে ওই সমস্ত জায়গাকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিধাননগরের নিক্কো পার্ক, ইকো পার্কের মতো এলাকা। দূরত্ব-বিধি মানা তো দূর অস্ত্, বরং ভিড়ে অধিকাংশের মুখই ছিল মাস্কহীন। ধর্মতলায় কেনাকাটায় ব্যস্ত এমনই এক দম্পত্তির মন্তব্য, ‘‘রোদে গরম লাগছে। নতুন বছরে উপহার কেনার চাপও রয়েছে। এর মধ্যে মাস্ক পরে থাকা যায়!’’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনের রাস্তায় গাদাগাদি ভিড়ে দাঁড়ানো মাস্কহীন মাঝবয়সি সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বললেন, ‘‘টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে বিরক্ত লাগছে। মাস্কের কথা মাথায় নেই।’’ পার্ক স্ট্রিট মোড়ে ভিড় করা জনতাকে মাস্ক নিয়ে সচেতন করতে দেখা গেল পুলিশকর্মীদের। ভিড় ফাঁকা করতে নাজেহাল হওয়া এক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘এখনই এই অবস্থা হলে আগামী দু’দিন কী হবে? করোনার ভয় তো নেই-ই, উৎসবে মাতোয়ারা মানুষের জরিমানা দেওয়ারও ভয় নেই!’’

লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘বাহিনীর আধিকারিকদের বড়দিনের চেয়েও কঠোর হাতে পরিস্থিতি সামলাতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এমন ভিড় বরদাস্ত করা হবে না।’’ সচেতন নাগরিকদের বড় অংশের প্রশ্ন, ছাড়ের শহরে যেখানে বুঝিয়ে কাজ উদ্ধারের রীতি, সেখানে কি আদৌ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে? উত্তর মিলবে কয়েক ঘণ্টায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE