২০২১ সালের পুজোয় অষ্টমীর রাতে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো দেখতে পথে জনজোয়ার। ফাইল চিত্র।
করোনার জন্য গত দু’বছরে আয়োজনে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। এ বার করোনার আতঙ্ক নেই। সেই সঙ্গে কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো আবহমান ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়ায় এ বার পথে আরও বেশি মানুষের ঢল নামতে পারে বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ। যদিও রবিবার শহরের পুজো কমিটিগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতা পুলিশের দাবি, অন্যান্য বারের মতো এ বছরেও সুষ্ঠু ভাবে আইনশৃঙ্খলা মেনে পুজো হবে শহরে। সে জন্য পুজোর দিনে যান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘ইউনেস্কো কলকাতার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ সম্মান দেওয়ায় এ বার শহরে পুজোর ভিড় আরও বাড়বে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী পুজো দেখতে সবেন। পুজো যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুজোয় দিনভর সজাগ থাকবে পুলিশ। শহরের ট্র্যাফিক যাতে ঠিক থাকে, সে জন্য ট্র্যাফিক পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।’’
যদিও যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক থাকার আর্জি জানিয়েছে বেশির ভাগ পুজো কমিটি। যেমন নিউ আলিপুরের একটি পুজো কমিটির এক কর্তা বলেন, ‘‘লকগেটের কাজ চলছে। ফলে ওই এলাকা দিয়ে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় অন্য রাস্তাগুলিতে চাপ বাড়ছে।’’ উত্তরের শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণে টালিগঞ্জের পুজোকর্তারাও যান নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন। পুজোয় মোটরবাইকের তাণ্ডব কমানোরও আর্জিও জানিয়েছে কয়েকটি পুজো কমিটি।
এ দিনের বৈঠকে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, এ বারের পুজোয় শব্দদানবের তাণ্ডব আরও কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পর্ষদের এক কর্তা জানান, বদ্ধ বা খোলা জায়গা যেখানেই হোক না কেন, পুজোয় কোনও ভাবেই ডিজে বাজানো চলবে না। সাউন্ড বক্স বাজাতে গেলেও তার নিয়ন্ত্রক হিসাবে সাউন্ড লিমিটর লাগাতেই হবে। কারণ, সাউন্ড লিমিটর লাগালে কোনও সাউন্ড বক্সে শব্দের প্রাবল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবো।
ওই পষর্দ-কর্তা আরও জানিয়েছেন, বেশ কিছু পুজো কমিটি এখনও গ্রিন পুজোর ফর্ম পূরণ করে জমা দেয়নি। পুজোর আগে যত শীঘ্র সম্ভব ওই ফর্ম জমা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
এ দিনের বৈঠকে প্রতিমা বিসর্জনে ঘাট পরিষ্কার, বিশেষত আহিরীটোলা ঘাট পরিষ্কার রাখার প্রসঙ্গও তোলে একটি পুজো কমিটি। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একটি পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়, যে উদ্যানে তাদের পুজো হয়, সেখানে জলাধার মেরামতির কাজ চলায় পুজোর আয়োজন খানিক ছোট করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত ওই জলাধারের কাজ শেষ করার আর্জি জানিয়েছেন ওই পুজো কমিটির এক কর্তা। কলেজ স্ট্রিট এলাকার এক পুজোকর্তা বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে বৃষ্টি হলেও যাতে রাস্তায় জল না দাঁড়ায়, সেই দিকটি পুরসভাকে দেখতে হবে।’’
পুলিশের সঙ্গে পুজো কমিটির এ দিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন কলকাতা পুরসভা, দমকল, সিইএসসি-র কর্তারাও। পুজোর সময়ে যাতে মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীদের কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট দ্রুত মেরামতির কাজ চলছে বলে জানান এক পুরকর্তা। মণ্ডপের সাজসজ্জায় রাস্তার পাশে লাগানো আলো আরও ভাল ভাবে দৃশ্যমান করতে গাছের ডালপালা ছাঁটার আর্জিও জানিয়েছে বেশ কিছু পুজো কমিটি। তবে সব দিক ভাল ভাবে পর্যালোচনা করে তবেই ওই কাজ করা হবে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত সিইএসসি-র এক আধিকারিক পুজোয় বিদ্যুৎ সংযোগ সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যায় পুজো কমিটিগুলিকে দু’টি নম্বরে ফোন করার কথা বলেছেন। নম্বর দু’টি হল ৯৮৩১০৮৩৭০০ এবং ৯৮৩১০৭৯৬৬৬। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতিটি পুজো কমিটির জন্য সিইএসসি-র তরফে একজন করে নোডাল অফিসারকে রাখা হচ্ছে।
বৈঠকে দমকলের এক আধিকারিক আবার জানিয়েছেন, এ বার পুজোয় বিভিন্ন রাস্তায় স্ট্যান্ডবাই দমকল ইঞ্জিনের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকবে দমকলের কিয়স্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy