ফাইল ছবি
টাকা নিতে এসে রাঁচীর আইনজীবী রাজীব কুমারের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় এ বার কলকাতা পুলিশের নজরে খোদ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) এক কর্তা। ওড়িশায় কর্মরত ইডি-র ওই ডেপুটি ডিরেক্টর সুবোধ কুমারকে আজ, মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে নোটিস পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাঁর সঙ্গে ধৃত আইনজীবীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। ইতিমধ্যে লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি দল ওই ইডি-কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওড়িশায় পৌঁছেছে।
পুলিশ জানায়, ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রাঁচীতে কর্মরত ছিলেন ওই ইডি-কর্তা। জুনেই তাঁকে ওড়িশায় বদলি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডে জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী হিসেবে নাম রয়েছে ধৃত রাজীব কুমারের। এক সময়ে সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন রাজীব। প্রায় সাতশোরও বেশি জনস্বার্থ মামলার সঙ্গে তিনি যুক্ত। অভিযোগ, গত বছর তিনি কলকাতার এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। পরে সেই মামলায় সমঝোতা করানো হবে বলে ওই ব্যবসায়ীর থেকে ১০ কোটি টাকা দাবি করেন। এর পরে চার কোটির কথা বললেও পরে তা আরও কমে এক কোটি টাকায় রফা হয়। যার প্রথম কিস্তির ৫০ লক্ষ টাকা নিতে গত ৩০ জুলাই রাতে কলকাতায় আসেন রাজীব। কিন্তু সেই টাকা নিতে গিয়েই কলকাতা পুলিশের হতে ধরা পড়েন তিনি। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বিভিন্ন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ধৃতের। তিনি যাঁদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করতেন, তাঁদের কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানোর পাশাপাশি ফাঁসিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিতেন।
এক পুলিশকর্তা জানান, রাজীবের থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া বিভিন্ন নথি ও তথ্য থেকে সুবোধের নাম সামনে আসে। তিনি রাঁচীতে থাকার সময়েই দু’জনের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। টাকা না দিলে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বাড়িতে তল্লাশি করানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। এই সূত্রেই ওই ইডি-কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ওই ইডি-কর্তাকে প্রশ্ন করে আরও কোনও সরকারি আধিকারিক এর সঙ্গে জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা হবে।
ইতিমধ্যেই পুলিশ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে রাজীবের ১৬টি ফ্ল্যাট, একটি তেতলা বাড়ি, নয়ডায় একটি ফ্ল্যাট ও অফিসের সন্ধান পেয়েছে। এ ছাড়া, রাঁচী থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে সাত একর জমি কিনেছিলেন ধৃত আইনজীবী। তাঁর চারটি দামি গাড়িরও সন্ধান মেলে। ধৃতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেও প্রচুর টাকা ও টাকা হস্তান্তরের হদিস মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy