Advertisement
০৬ মে ২০২৪

স্কুল-কলেজে মাদক বন্ধে বিশেষ নজর

লালবাজার জানিয়েছে, ওই নির্দেশের পরেই শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু হয়েছে। সোমবার রাতে তালতলা থানা এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় মুন্নি দাস নামে এক মহিলা মাদক পাচারকারীকে।

বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বাইরে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।—ফাইল চিত্র।

বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বাইরে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।—ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

শহরের বিভিন্ন নামী স্কুল এবং কলেজের পড়ুয়াদের একাংশের কাছে গোপনে মাদক পৌঁছে দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সেই পথ বন্ধ করতে এ বার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বাইরে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার। সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অনুজ শর্মা গোয়েন্দা বিভাগের সব শাখার সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করেছিলেন। পড়ুয়াদের হাতে যাতে কোনও মাদক না পৌঁছয়, তা নিয়ে ওই বৈঠকে গোয়েন্দা বিভাগের মাদক পাচার দমন শাখাকে আরও বেশি করে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

লালবাজার জানিয়েছে, ওই নির্দেশের পরেই শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু হয়েছে। সোমবার রাতে তালতলা থানা এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় মুন্নি দাস নামে এক মহিলা মাদক পাচারকারীকে। তার থেকে বাজেয়াপ্ত হয় প্রায় তিন কেজি গাঁজা। এর আগে গত সপ্তাহেই গোয়েন্দারা সুনীল সিংহ নামে আর এক মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিলেন। পুলিশের দাবি, পড়ুয়াদের কাছে মাদক পৌঁছে দেওয়ায় যুক্ত এমন আট পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। তারা মূলত শহরের বিভিন্ন স্কুল বা কলেজের বাইরে মাদকের পুরিয়া নিয়ে ঘুরে বেড়াত। পরিচিত এজেন্টদের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কাছে সেই মাদক পৌঁছে দিত।

গত কয়েক বছর ধরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দারা বিধাননগর এবং কলকাতার বেশ কিছু স্কুল-কলেজের পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিলেন মাদক পাচারের অভিযোগে। তখনই সামনে আসে, শহরের নামী স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের একাংশের কাছে গোপনে মাদক পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলিও। আরও জানা যায়, এজেন্টের মাধ্যমে মাদক পাচারকারীরা পড়ুয়াদের কাছে গাঁজা বা অন্য মাদক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ইন্টারনেটে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেও কারবার চালাচ্ছে। ধৃত পড়ুয়াদের কাছে এলএসডি, মেথামফেটামিন, হেরোইনের মতো মাদকের খোঁজ পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারী অফিসারদের একাংশ জানিয়েছেন, নতুন পুলিশ কমিশনার স্কুল ও কলেজগুলিকে মাদক পাচারকারীদের হাত থেকে মুক্ত রাখতে চান। সে কারণেই পাচারের গোড়াতেই আঘাত করতে বলেছেন তিনি। সেই মতো শুরু হয়েছে অভিযান। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত মুন্নি পার্ক সার্কাস-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন নামী স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের কাছে এজেন্ট মারফত মাদক পৌঁছে দিত। তাকে জেরা করে কয়েক জন এজেন্ট এবং পড়ুয়ার নাম মিলেছে বলে দাবি করেছে পুলিশের একটি সূত্র। সুনীলও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে পৌঁছে দিত মাদক।

এক পুলিশকর্তা জানান, এই ধরপাকড়ের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের আশপাশে থাকা পান-বিড়ি-সিগারেটের দোকানের উপরেও নজরদারি শুরু হয়েছে। সাদা পোশাকের পুলিশ ওই সব এলাকায় টহল দিচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Narcotics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE