উত্তরবঙ্গ সফরের পরে হলদিবাড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে চেপে কলকাতা স্টেশনে ফিরেছিলেন এক দম্পতি। স্টেশনে নামার আগে তাঁরা দেখেন, চলন্ত ট্রেন থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে তাঁদের ব্যাগ। কলকাতা স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে রেলপুলিশের (জিআরপি) অফিসে অভিযোগ জানাতে গেলে বলা হয়, তাঁদের যেতে হবে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে দমদম স্টেশনে। এই অভিজ্ঞতা শুধু ওই দম্পতির নয়। একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে অন্য যাত্রীদের, এমনকি পুলিশকর্মীদেরও।
কিন্তু এ বার যাত্রীরা এই হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন।
নবান্ন সূত্রের খবর, কলকাতা স্টেশনকে রেলপুলিশের পূর্ণাঙ্গ থানার মর্যাদা দেওয়ার ফলে এ বার থেকে কলকাতা স্টেশনেই জানানো যাবে অভিযোগ। রুজু করা যাবে মামলাও। গত সপ্তাহেই নবান্নের তরফে রেলপুলিশের ওই নতুন থানা গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। রেলপুলিশ কর্তাদের অনুমান, পুজোর পরেই ওই নতুন থানা কাজ শুরু করবে। পূর্ণাঙ্গ থানার পরিকাঠামো গড়ার কাজও শুরু হয়েছে। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মেই ওই থানার অফিস হবে।
দায়িত্বে থাকবেন এক জন ইন্সপেক্টর মর্যাদার অফিসার। নতুন থানার পুলিশকর্মীর সংখ্যা কত হবে, তা নিয়ে এখনও কিছু জানাননি রেলপুলিশের কর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৪ সালে তৈরি হওয়া ওই স্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে রেলপুলিশের একটি আউটপোস্ট। সেটি দমদম জিআরপির অধীনে কাজ করে। ওই আউটপোস্টের এলাকা পাতিপুকুর থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে পাতিপুকুর এবং মাঝেরহাট রেল ইয়ার্ডও। এ ছাড়াও ১৩টি স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে ওই আউটপোস্টের উপরে। দমদম জিআরপি-র অধীনে প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকা দেখভালের জন্য রয়েছেন মাত্র এক জন সাব-ইনস্পেক্টর। এ ছাড়া, চার জন এএসআই এবং সাত জন কনস্টেবল রয়েছেন ওই সাব-ইনস্পেক্টরের অধীনে।
কেন পূর্ণাঙ্গ থানা করা হল কলকাতা স্টেশনের রেলপুলিশের ওই আউটপোস্টকে? পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, কলকাতায় একমাত্র ওই স্টেশন থেকেই আন্তর্জাতিক মানের ট্রেন চলে। এ ছাড়াও সারাদিনে চলে প্রায় ৩৩ জোড়া ট্রেন। এ ছাড়াও লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন রয়েছে। কিন্তু তা-ও ওই স্টেশনের নিরাপত্তার দিকে সরকারের নজর ছিল না বলেই অভিযোগ। আউটপোস্ট হওয়ার ফলে সব কাজই হত দমদম থেকে। কোনও ধৃতের থাকা বা তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া, সব কিছুই করতে হত দমদম থেকে। অভিযোগ, এতে অসুবিধায় পড়তেন পুলিশকর্মীরা।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘কলকাতা স্টেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। কিছু দিন আগেই বহুমূল্য মাদক-সহ পাঁচ জন চিনা পাচারকারী ধরা পড়েছিল ওই স্টেশন থেকে। এ ছাড়া চক্ররেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে ওই স্টেশনের উপরেই। নতুন থানা হলে পুলিশকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তাতে নজরদারিও ভাল ভাবে করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy