Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

দুর্গোৎসবের মতোই দোলের সঙ্গে মিশে আছে বাবুয়ানি আর ঐতিহ্য। এক কালে রঙে মেশানো হত বিশেষ আতর। বাড়ির ভৃত্যদের উপর ভার পড়ত রুপোর পিচকারি আর রেকাবি ঘসে-মেজে ঝকঝকে করে তোলার।

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

আজও টিকে আছে ঐতিহ্যের দোল

দুর্গোৎসবের মতোই দোলের সঙ্গে মিশে আছে বাবুয়ানি আর ঐতিহ্য। এক কালে রঙে মেশানো হত বিশেষ আতর। বাড়ির ভৃত্যদের উপর ভার পড়ত রুপোর পিচকারি আর রেকাবি ঘসে-মেজে ঝকঝকে করে তোলার। গৃহদেবতা নারায়ণ কিংবা প্রতিষ্ঠিত রাধাকৃষ্ণের পুজোর পাশাপাশি চলত এলাহি খানাপিনা, ইয়ার-দোস্তদের নিয়ে মজলিস, বাইনাচ আর ধ্রুপদী সঙ্গীতের আসর। রচিত হত নতুন নতুন হোলির গান। গাইতেন গহরজান থেকে মেটিয়াবুরুজের পিয়ারা সাহেব। তবে সে সব আজ শুধুই স্মৃতি। কয়েকটি বনেদি বাড়িতে টিকে আছে কিছু রীতি রেওয়াজ মাত্র।

শোভাবাজার রাজপরিবারের বড় তরফের গৃহদেবতা গোবিন্দজিউর দোল উৎসব আজও হয়ে আসছে সাবেক রীতি মেনেই। এখানে দোল হয় প্রতিপদে। অর্থাৎ দোলের পরের দিন। আগের দিন নারায়ণের চাঁচর। দোলের সন্ধ্যায় হয় গোবিন্দজিউর চাঁচর। পরের দিন বিশেষ মেঠাই ভোগ-সহ পুজো। এই উপলক্ষে গোবিন্দজিউ আর রাধিকাকে পরানো হয় বিশেষ সাজ। পুজো শেষে নানা উপচারে স্নান করানো হয় রাধা-গোবিন্দজিউকে। রাধিকার স্নানপর্ব লোকচক্ষুর আড়ালে হলেও গোবিন্দজিউর স্নান পর্ব হয় দালানের চাতালে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে। অতীতে দোলের সন্ধ্যায় ঠাকুরদালানে বসত গানের আসর। প্রথম দিকে এতে বাড়ির মহিলারা না থাকলেও পরে তাঁরাও যোগ দিতেন। গান শেষে ওড়ানো হত ফাগ। অতীতের সেই ফাগের রঙ কবে‌ই ফিকে হয়েছে। টিকে আছে দোল-বদলের শুধু স্মৃতি আর সত্তা। সঙ্গে রাধা-গোবিন্দজিউর বিশেষ সাজের ছবি: বিভূতিসুন্দর ভট্টাচার্য।

তারানাথ তান্ত্রিক

• তন্ত্রসাধনা ও সেই সংক্রান্ত নানা ধরনের কালো জাদুর চর্চা বাংলার বহু প্রাচীন ঐতিহ্য। রবীন্দ্রনাথ তাঁর সাহিত্যে এই প্রসঙ্গ কিছুটা এনেছিলেন। তার পর এই ঘরানায় সাহিত্য চর্চা করেছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রমথনাথ বিশী, প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়, কালিকানন্দ অবধূত প্রমুখ। বাংলা অলৌকিক সাহিত্যে বিভূতিভূষণের ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। তাঁর প্রয়াণের পর এই চরিত্রটি নিয়ে আরও কিছু কাজ করেছিলেন তাঁরই পুত্র তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারের টাটা কলকাতা সাহিত্য উৎসবে আলোচনায় এসে পড়ল এই তান্ত্রিকের কথা। তবে শুধু কথায় নয়, বরং ৫০এ হরিশ মুখার্জি রোডের একটি পুরনো বাড়ির ৫টি ঘরে তারানাথের বাসস্থান তৈরি করে তন্ত্রসাধনার স্মৃতি উস্কে দিয়েছিলেন আয়োজকরা। রহস্যময় পরিবেশ, আলপনা, পুতুল, দেবী মূর্তি এমনকি তারানাথের সিগারেটের প্যাকেট ‘পাসিং শো’ পর্যন্ত অবিকল তৈরি করা হয়েছিল। একটি ঘরে পা দেওয়ার মুহূর্তে কোথা থেকে যেন ঝরে পড়েছে সেকালের পুরনো টাকা! সিঁদুর, জবাফুল আর খুলি বা ছাগমুণ্ডে ছমছমে পরিবেশ। আগত দর্শকদের মিলেছে নলেন গুড়ের অভিনব খুলি সন্দেশ। সঙ্গের ছবিতে তারই পোস্টার।

সুখের দিশা

• ‘সুখে আছে যারা, সুখে থাক তারা, সুখের বসন্ত সুখে হোক সারা’— এই বসন্তে প্রকৃতির সুখ এইটুকু, আর এই সুখের স্পর্শ সবাইকে দিতে সে ব্যস্ত। কিন্তু প্রকৃতির সুখে মানুষ কি প্রকৃত সুখী? প্রতি দিনই একটু বেশি সুখ সঞ্চয়ের জন্য মানুষ ছুটছে। তবু সুখের পাতে অসুখেরাই বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সুখের জন্য আমরা প্রায় সব কিছু করতে পারি, কিন্তু সুখ আসলে কী? কাকে বলে সুখ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সম্প্রতি আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে ‘অনুভবে’ ও রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার, কলকাতার যৌথ উদ্যোগে কথায়-গানে-কবিতায় নিবেদিত হল ‘সবিনয় নিবেদন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান। উপস্থাপনায় রায়ান, মনীষা, পারমিতা, সাম্য এবং অঙ্কন। সংগীত পরিচালনায় সিতাংশু মজুমদার। বাঁশিতে সৌম্যজ্যোতি ঘোষ।

নিবেদিতা স্মরণে

• মার্গারেট এলিজাবেথ নোবল ওরফে ভগিনী নিবেদিতা কলকাতায় এসেছিলেন ১৮৯৮-এর ২৮ জানুয়ারি। সে দিন স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ জাহাজঘাটায় উপস্থিত থেকে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে এবং সেই পুণ্যক্ষণ স্মরণে গত ২৮ জানুয়ারি, বিকেল ৩টেয় বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম প্রাঙ্গণে তাঁর পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করলেন স্বামী সুহিতানন্দ। আশ্রম বিদ্যালয়ের পুনর্গঠিত ক্রীড়াঙ্গনকে ‘নিবেদিতা ক্রীড়াঙ্গন’ নামে উৎসর্গ করলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সূত্রে আয়োজিত হয়েছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষামূলক প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। উপস্থিত ছিলেন স্বামী দেবরাজানন্দ, স্বামী সুবীরানন্দ, স্বামী বলভদ্রানন্দ, মনোজ মিত্র প্রমুখ।

বিভাজন

• উত্তরাধিকারের সবটুকুই সম ভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যেমন রক্তপাত, হিংসা, বিভাজন, বিভেদ বা দাঙ্গা— এ সবই তো আমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া, কিন্তু তা তো আপন হতে পারে না! খণ্ডকালের নিষ্পেষণ ক্রমশ এগিয়ে আসে আমাদের দিকে। সময় নিজেই যেখানে দাহ্য এবং দাহক। দেশভাগ আর রক্তস্নাত অতীতকে পিছনে ঠেলে তারই ভিত্তিভূমিতে বিচরণ করে কিছু চরিত্র। এই সময়, এই শহরে দাঁড়িয়েও হিংসা-বিভেদের বহুমাত্রিক আক্রমণ থেকে মুক্তি নেই এই চরিত্রদের, হয়তো বা আমাদেরও! আর কত পথ হাঁটলে মানুষ মানবিক হবে— প্রশ্ন থেকে যায়। থেকে যায় জীবনানন্দের ক্ষোভ ‘সৃষ্টির মনের কথা মনে হয় দ্বেষ...’। এদের নিয়েই গড়ে ওঠে এক মর্মস্পর্শী মানবিক কাহিনি ‘বিভাজন’। চোখ নাট্যদলের এই নবতম নাট্যপ্রয়াসের নির্মাণ এবং নির্দেশনায় অভিজিৎ করগুপ্ত। সম্প্রতি মধুসূদন মঞ্চে এই প্রযোজনাটির প্রথম অভিনয় হল।

সংরক্ষণ

• প্রবহমান বা মৌখিক লোকসংস্কৃতিতেই লুকিয়ে রয়েছে বাংলার প্রাণভ্রমরা। অনেকাংশেই এগুলি হারিয়ে যেতে বসেছে যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে। পরিবার ভেঙে টুকরো হচ্ছে, প্রবীণরা ক্রমেই একাকিত্বের শিকার হচ্ছেন। এ দিকে এই সমস্ত মানুষজনের সঙ্গেই দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে এমত সম্পদ। বিষয়টি মনে রেখেই এই সম্পদ যথাসম্ভব পুনরুদ্ধারে ব্রতী হয়েছে কৃষ্ণপুর সেন্টার ফর ফোকলোর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ। সম্প্রতি ছিটকালিকাপুরের লোকগ্রামে আয়োজিত হয়েছিল এ বিষয়ে একটি সারা দিনের কর্মশালা। ছাত্রছাত্রী, গবেষক এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আয়োজিত এই সভায় ঠিক হয়েছে সারা বাংলা থেকে পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করা হবে হারিয়ে যেতে বসা ব্রতকথা, পশুকথা, কিংবদন্তি, হাসির গল্প, চুটকি, ধাঁধা, প্রেমগাথা, বীরগাথা, শিকার ভূত বা ডাকাতের গল্প প্রভৃতি। প্রকল্পের মুখ্য আহ্বায়ক কাকলী ধারা মণ্ডল জানালেন, পরে এগুলি দুই খণ্ডে প্রকাশ করা হবে সংকলন হিসেবে। প্রথম খণ্ডে থাকবে তাত্ত্বিক আলোচনা, দ্বিতীয় খণ্ডে সংগ্রহ।

সাংস্কৃতিক

• মানুষ, প্রকৃতি বা প্রবহমান জীবন— সবের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে বিজ্ঞানের প্রবাহ। শিল্পের মধ্যে তো বটেই। সেই বিজ্ঞানের খোঁজে এ বারের সরকারি চারুকলা মহাবিদ্যালয়ের ব্যাচ ৮৮-এর শিল্পীরা। শিল্পের মধ্যে দিয়েই এ বারে বিজ্ঞানের কথা বলা। জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল ওদের দ্বিতীয় সম্মিলিত প্রদর্শনী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হল শিল্পী সুমন দত্তকে। কলকাতার প্রায় প্রতিটি শিল্প প্রদর্শনীতে যে মানুষটিকে অবধারিত দেখা যায় ক্যামেরা কাঁধে। এই শহরের অনেক বিস্মৃত শিল্প অধ্যায়কে তিনি ধরে রেখেছেন তাঁর ক্যামেরায়। অন্য দিকে, ৫-৬ মার্চ চারখানি স্মারক বক্তৃতা হয়ে গেল অবনীন্দ্র সভাগৃহে, রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে। প্রথম দিন আশুতোষ ভট্টাচার্য ও তারাপদ সাঁতরা স্মারক বক্তৃতায় যথাক্রমে লোকসংস্কৃতিবিদ আশুতোষ ভট্টাচার্য প্রসঙ্গে সুভাষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গের পটচিত্র নিয়ে বললেন অতনু বসু। দ্বিতীয় দিন অরুণকুমার রায় ও সুধী প্রধান স্মারক বক্তৃতায় লোকসংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে বললেন কিশোরকুমার বাসা এবং কল্যাণকুমার চক্রবর্তীর বিষয় ছিল পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী সংস্কৃতি— বৃহত্তর প্রেক্ষাপট।

আদানপ্রদান

• সম্প্রতি কেরলের তিরুবনন্তপুরমে অনুষ্ঠিত হল জাতীয় লোক উৎসব। আয়োজনে কেরল সরকারের সংস্কৃতি ও যুব দফতর এবং ভারত ভবন। এই অনুষ্ঠানে ১০টি রাজ্য থেকে যোগ দেন বিভিন্ন শিল্পধারার ৫০০ লোকশিল্পী। উদ্দেশ্য সারা ভারতের বৈচিত্রপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেন এই শহরের লোকগানের দল সহজিয়া এবং গায়ক দেব চৌধুরী। অন্য দিকে, তুরস্কের ইজমির শহরে আয়োজিত হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক পুতুল নাটকের উৎসব, চলবে ১৯ মার্চ পর্যন্ত। ১১তম এই উৎসবে যোগ দিয়েছে ২০টি দেশের ৪০টি দল। কলকাতা থেকে আমন্ত্রিত হয়ে এই উৎসবে গিয়েছে ‘ডলস থিয়েটার’। কর্ণধার সুদীপ গুপ্ত জানালেন, ওদের টেমিং অব দি ওয়াইল্ড নাটকটি (সঙ্গে তারই ছবি) নিয়ে সাত জনের একটি দল যোগ দিয়েছে এই উৎসবে। বিদেশের উৎসবে ওরা এই নিয়ে নবম বার। সহযোগিতায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব কালচারাল রিলেশনস।

নীলদিগন্ত

• শিশুসাহিত্যের একটি নতুন ধরনের পত্রিকার জন্ম হল এ বারের কলকাতা বইমেলার শেষ দিনে, প্রেস কর্নার থেকে: ‘নীলদিগন্ত’। পরিকল্পনায় সই-এর লেখকবৃন্দ। মূল পরিকল্পনায় সই-এর শিবানী পাণ্ডে ও সুষ্মেলী দত্ত। পত্রিকাটি শিশু-কিশোরদের মনের মতো করে লিখেছেন সই-এর লেখকরা। পত্রিকাটিতে শুধু শিশু-কিশোরদের নিজস্ব লেখাই নয়, হাতে আঁকা ছবিও স্থান পেয়েছে। পত্রিকাটি তৈরিও হয়েছে শিশু-কিশোরদের নিজস্ব ভাবনায়। আগামী দিনে এই পত্রিকাটির পরিকল্পনা ও পরিচালনার ভার শিশু-কিশোররাই নেবে, এমনই ইচ্ছা পোষণ করে ‘সই’।

শিল্পী শিবির

• কলকাতা থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে কলকাতার চাইতেও শ’তিনেক বছরের প্রাচীন জনপদ বালি। সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রেও বালির কৌলীন্য স্বীকৃত। এই অঞ্চলে সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম অগ্রণী এবং প্রাচীন প্রতিষ্ঠান ‘বালি সাধারণ গ্রন্থাগার।’ শিক্ষাসংস্কৃতির উপর বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং প্রকৌশল যখন জাঁকিয়ে বসছে সেই সময় নানা ভাবে সাবেক সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারে এই গ্রন্থাগার একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে চলেছে। সম্প্রতি গ্রন্থাগারের কর্মীসঙ্ঘ সংলগ্ন ‘বালি অ্যাথলেটিক ক্লাবে’র মাঠে আয়োজন করেছিল ‘সৌমেন চারুকলা উৎসব এবং শিল্পী শিবির’-এর। এ বার পঁচিশ বছরে পা রাখল শিল্পী শিবির। এ বারেও কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রবীণ এবং নবীন শিল্পীরা শিবিরে সারা দিন ধরে ছবি আঁকায় ব্যস্ত থাকলেন। শ’দুয়েক শিশু-কিশোরের সঙ্গে কর্মশালায় যোগ দিয়েছিল ‘কোরাস’-এর ২২জন প্রান্তিক শিশু। ছবি আঁকায় আর হাতের কাজে সকলের নজর কেড়েছে এই খুদে শিল্পীরা।

২৬ এইচ

আমি ঘর-বাহির করি’ গাওয়ার পরে দেড় দশক পেরিয়ে গিয়েছে। ঘর থেকে বাহিরে গিয়েছেন, সেই বাহিরই কখন ঘর হয়েছে। আবছা হয়েছে ঘর-বাহিরের সীমানা। তবে ঠিকানা একটা আছে— ২৬ এইচ, যাদবপুরে তাঁদের বাসাবাড়ির। ওই বাড়ির নম্বরই হয়ে উঠেছে মৌসুমী ভৌমিকের তৃতীয় অ্যালবামের নাম। হতেই হত। দশটি গানের আটটিই ওই বাড়িতে রেকর্ড করা। যেমন লোকে নিজের ঘরে বসে আনমনে গান গায়, তেমনই। দোতারা হাতে সাত্যকি বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গত করেছেন ওই ঘরেই। লন্ডনের বাড়ি থেকে দু’টি গানের যন্ত্রানুষঙ্গ করে পাঠিয়েছেন বন্ধু অলিভার উইকস। ফলে দৈনন্দিনের শব্দও কিছু মিশেছে আবহে আর তা ছেঁটে না ফেলে ঘরের বাতাসের মতোই থাকতে দিয়েছেন শব্দযন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। ‘এটা চার জনের কাজ, আমার একার নয়’— বলছেন মৌসুমী। অ্যালবামের সব গানও তাঁর নিজের বাঁধা নয়। বরং গোড়াতেই রবীন্দ্রনাথ— ‘জীবন যখন শুকায়ে যায়’। আর পরে অতুলপ্রসাদী ‘প্রভাতে যাঁরে নন্দে পাখি’। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হলে ট্র্যাভেলিং আর্কাইভ রেকর্ডসের অ্যালবামটি শ্রোতার হাতে যাওয়ার ছাড়পত্র পেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE