Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হারিয়ে যাওয়া সাজসজ্জা

তেমনই বদলেছে চাঁদমালাও। কুমোরটুলি কিংবা নতুনবাজারে পাওয়া মুশকিল ভেলভেট কাগজের উপরে রকমারি সূক্ষ্ম কাজ যুক্ত নজরকাড়া শোলার সেই সব চাঁদমালা।

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

টিকালো নাক, প্রশস্ত ললাট, চাপা থুতনির উপর পাতলা ঠোঁটে স্মিত হাসি। নাকের পাশ থেকে পটলচেরা চোখ। তার উপরেই মোটা ভুরু চলে গিয়েছে কপালের দুই প্রান্তে। পান আকৃতির মুখে গালের পাশ কিছুটা চাপা। এটাই বাংলার সাবেক দুর্গাপ্রতিমার পরিচিত মুখাবয়ব যা ‘খাস বাংলা’ নামে পরিচিত। শোভাবাজার রাজবাড়ি (ছোট তরফ, সঙ্গের ছবি), পাথুরিয়াঘাটা রামলোচন ঘোষের বাড়ি, হাটখোলা দত্তবাড়ি-সহ হাতে গোনা কয়েকটি বাড়ির প্রতিমায় আজও দেখা যায় এই মুখ। বরং বেশির ভাগ পুরনো পুজোয় দেখা যায় ‘দোভাসি’ বা মিশ্র রীতির মুখ। এতে গাল তুলনায় অনেকটা ভরাট। চোখের আকৃতিও এবং ঠোঁটও কিছুটা ফোলানো। দৃষ্টি অনেক শান্ত। তাই এই মুখের আদর বেশি। কুমোরটুলির প্রবীণ শিল্পীদের কথায়, খাস বাংলা মুখে কিছুটা উগ্রতা এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকায় তা অনেকেই পছন্দ করেন না। প্রতিমার সাজেও এসেছে পরিবর্তন। আগে প্রতিমার মাটির সাজের প্রচলন থাকলেও এখন তা বায়না দিয়ে তৈরি করাতে হয়। তাই মাটির সাজ আজ ব্যয়বহুল। তেমনই পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কমেছে শোলার জোগান। বেড়েছে দাম। সেই জায়গায় এসেছে থার্মোকলের সাজ। ঐতিহ্যবাহী ডাকের সাজেও রাংতার পরিবর্তে প্লাস্টিক পেপার। আগে নিকেল করা টিনের চুমকি ব্যবহৃত হলেও এখন বাজার নিচ্ছে প্লাস্টিকের চুমকি। প্রতিমার মুকুটেও কমেছে ময়ূরের পালক, কাচপুঁতি বুলেনের ব্যবহার। হারিয়ে গিয়েছে ‘আংটির সাজ’— যাতে থাকত শলমার চুমকি, বুলেন, কাচপুঁতি, নানা রঙের বসমা কাগজ। পাথুরিয়াঘাটা রামলোচন ঘোষের বাড়িতে, হরকুটিরে কিংবা আরও দু’একটি পরিবারে আজও দেখা যায় সাবেক এই সাজ। গত কয়েক বছরে চালিতে হাতে আঁকা পটের ব্যবহার কমেছে, ছাপানো পটের রমরমা। ভাল দাম না-পাওয়া কৃষ্ণনগরের পটশিল্পীরা আজ আর নজরকাড়া সূক্ষ্ম পট লেখেন না। তাঁদের আঁকা চলতি পট ক্রেতাদের পছন্দ না হওয়ায় অনেকেই উজ্জ্বল রঙের ছাপানো পট পছন্দ করছেন।

তেমনই বদলেছে চাঁদমালাও। কুমোরটুলি কিংবা নতুনবাজারে পাওয়া মুশকিল ভেলভেট কাগজের উপরে রকমারি সূক্ষ্ম কাজ যুক্ত নজরকাড়া শোলার সেই সব চাঁদমালা। জায়গা নিয়েছে কার্ডবোর্ডে ছাপা, চুমকি বসানো চাঁদমালা। আবার থার্মোকলের উপরে মেটাল চুমকি বসানো চাঁদমালা এসেছে। প্রতি বছর পুজো আসে। তবে সেই সঙ্গে হারিয়ে যায় অতীতের গন্ধমাখা পুজোর কিছু কিছু উপকরণ।

নতুন গাঁধীমূর্তি

কৃষ্ণনগরে পৈতৃক ভিটে ও মাতুলালয়, কুমোরটুলিতে পাঁচ পুরুষের বসবাস। ছোটবেলা থেকেই মাটির তাল হাতে নিয়ে চেষ্টা করতেন মুখাবয়ব তৈরি করতে। ঠাকুরদা যতীন্দ্রনাথ পাল মৃৎশিল্পে ও বাবা গণেশ পাল ভাস্কর্য-মৃৎশিল্পে সুখ্যাত। সরকারি আর্ট কলেজ থেকে ভাস্কর্যে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিল্পী অসীম পাল ভাস্কর্য ও মৃৎশিল্প দুটোকেই বেছে নিয়েছেন। তবে ভাস্কর্যই তাঁর প্রথম পছন্দ। তাঁর ভাস্কর্য গিয়েছে দেশের নানা অংশে, বিদেশেও। একক ও দলগত প্রদর্শনী সমাদৃত হয়েছে। বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, পঙ্কজকুমার মল্লিক, বাণীকুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোরকুমার, পঙ্কজ রায় এবং বিভিন্ন বিপ্লবীর ভাস্কর্যে সুনাম অর্জন করেছেন। এ বারে বেলেঘাটার গাঁধী ভবনে প্রতিষ্ঠা পাবে তাঁর গাঁধীমূর্তি (সঙ্গের ছবি)। ২ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটি উদ্বোধন করবেন।

কতটা ভারতীয়

প্রাদেশিক ছবিমাত্রেই ‘আঞ্চলিক’ বলে চিহ্নিত হয়, আর ‘হিন্দি’ হলে ‘জাতীয়’, বিভিন্ন প্রদেশের ছবিগুলি কি তা হলে ভারতীয় নয়? প্রশ্ন তুললেন আদুর গোপালকৃষ্ণন। ২৭ সেপ্টেম্বর গাঁধীভবন-এ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজ় বিভাগ আয়োজিত ‘প্রথম নরেন্দ্র দেব স্মারক বক্তৃতা’ দিলেন তিনি। ‘ইন্ডিয়ান সিনেমা: হাও ইন্ডিয়ান ইট ইজ়’ শীর্ষক আলোচনায় তাঁর অন্তর্ভেদী বিশ্লেষণে উঠে এল ভারতীয়তার অচ্ছেদ্য অনুষঙ্গগুলি। চলচ্চিত্রের শিল্পরূপ নিয়ে ‘সিনেমা: ছায়ার মায়ার বিচিত্র রহস্য’ (১৯৩৪) গ্রন্থটির প্রণেতা নরেন্দ্র দেবের অনন্য অবদানের কথা প্রায় বিস্মরণেই চলে গিয়েছিল, দেবীপ্রসাদ ঘোষের সম্পাদনায় লালমাটি ফের প্রকাশ করেছে বইটি। প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হল নরেন্দ্র-কন্যা নবনীতা দেব সেনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে পাঠানো লিখিত ভাষণে, নিবেদনে ছিলেন তাঁর দুই মেয়ে অন্তরা ও নন্দনা। সভাপরিচালক গৌতম ঘোষের সঙ্গে আদুরের কথোপকথন ছিল এই অনুষ্ঠানের বাড়তি আকর্ষণ।

নকশিকাঁথা

গ্রামবাংলার মেয়েরা কাঁথার উপর সুচের নিপুণ ও নন্দিত ফোঁড়ে যে সব অলঙ্করণ ফুটিয়ে তুলতেন, তা আজ নকশিকাঁথা নামে বিশ্বে সমাদৃত। গুরুসদয় দত্ত বাংলার নকশিকাঁথার নিদর্শন খুঁজে, তার শ্রেণিবিভাজন করে শিল্পটিকে সংরক্ষণের চেষ্টা করেন। তাঁর সংগৃহীত কাঁথা আজও গুরুসদয় সংগ্রহশালার অন্যতম আকর্ষণ। কাঁথাশিল্প যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য উদ্যোগী পশ্চিমবঙ্গের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগও। তারা প্রতি বছর কাঁথাশিল্পের প্রদর্শনী ও বিক্রয়বিপণির আয়োজন করে। এ বারের প্রদর্শনী ২৯ সেপ্টেম্বর গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় শুরু হয়েছে, চলবে ২ অক্টোবর পর্যন্ত। অংশগ্রহণে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাঁথাশিল্পীরা। তাঁদের অনেকেই জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত।

যুগলবন্দি

বিডন স্ট্রিট ভোলানাথ ধামের অজয় দত্ত উত্তর কলকাতার সুতানুটি সংস্কৃতির অঙ্গস্বরূপ ফি বছর কালীপুজোর দিন নিজের বাড়ির ছাদে হরেক আকার আঙ্গিকের ফানুস ছাড়েন। অন্য দিকে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের প্রাক্তনী, শোভাবাজার রাজপরিবারের প্রবীরকৃষ্ণ দেব চিত্রশিল্পী হিসেবে নানা ভাবে শিল্পসৃজন করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। দুই পঁয়ষট্টি পেরোনো তরুণ তুর্কি এ বার হাত মিলিয়েছেন। কাগজের নানা রকম ফানুস সৃজন করছেন অজয়, আর তুলির টানে তা ছবিতে ভরিয়ে তুলছেন প্রবীর। ইতিমধ্যেই শহরের হরেক কর্মকাণ্ডে দু’জনের মিলিত প্রয়াসে চিত্রিত ফানুস সবাইকে চমৎকৃত করেছে। শোভাবাজার রাজবাড়ির বিসর্জন উপলক্ষে এ বছর যে সব ফানুস ছাড়া হবে, বর্তমানে তা তৈরিতেই ব্যস্ত শিল্পীযুগল।

অজিতেশ স্মরণ

বেঁচেছিলেন মাত্র পঞ্চাশ বছর, তাতেই তিনি বঙ্গরঙ্গমঞ্চের কিংবদন্তি! অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ছেলেবেলার স্মৃতি বলেছেন সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়... উঁচু মাথায়, বুক চিতিয়ে হাঁটতেন লম্বা মানুষটি। হনহনিয়ে নয়, গজগামে। দেখে মনে হত, গাছ যদি হাঁটত, তা হলে ও-ভাবেই হাঁটত.... অজিতেশের শিল্পভাবনায় দীক্ষিত সুদীপ্ত আর সন্ধ্যা দে, দু’জনে মিলে পাঠ-অভিনয় করবেন অজিতেশের শেষ অভিনীত, রূপান্তরিত, নির্দেশিত নাটকটি: ‘পাপপুণ্য’। মিনার্ভা থিয়েটারে আজ সন্ধে ৬টায়: প্রসঙ্গ অজিতেশ। ৩০ সেপ্টেম্বর অজিতেশের (১৯৩৩-১৯৮৩) জন্মদিন, আয়োজক ‘গল্ফগ্রিন সাঁঝবেলা’-র নাট্যকর্মও শুরু হয়েছিল সাত বছর আগে এই তারিখটিতেই। কথামুখ ও সামগ্রিক পরিকল্পনায় সন্ধ্যা দে।

বাংলার দুর্গা

বাংলায় ব্যাপক ভাবে উপাসিতা দুর্গামূর্তির উদ্ভব ও বিকাশের কাহিনি বহুমাত্রিক। প্রত্নবিদ গৌতম সেনগুপ্ত তাঁর ‘বাঙালির দুর্গা’ নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ‘‘বাংলায় দেবী উপাসনার সূচনা সুদূর অতীতে, প্রাক্-খ্রিস্টীয় শতকে।’’ (দুর্গা/ বাংলার ঐতিহ্যে, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ)। কৌম সমাজে পূজিতা মাতৃকামূর্তি থেকে আজকের সপরিবার মহিষমর্দিনী রূপে বিবর্তন বহু স্তর পেরিয়ে। প্রাচীন চিত্রকলায় দুর্গার নানা রূপের বিচিত্র প্রকাশ। কালীঘাট পটে, জলরঙে-তেলরঙে এমন সব ছবি নিয়ে চিত্রকূট গ্যালারিতে প্রদর্শনী ‘দ্য গডেস’, আজ থেকে শুরু (৩-৮টা)। সঙ্গে তারই একটি, গণেশজননী। আবার বিশিষ্ট শিল্পীদের ছবি ও ভাস্কর্য নিয়ে ‘দুর্গা ২০১৯’ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে গ্যালারি ল্য মেরে-তে (৪-৮টা)। এ দিকে অ্যাকাডেমিতে চলছে সাত জন মহিলা শিল্পীর প্রদর্শনী ‘জ্যোতিরূপা’। চলবে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত, ১২-৮টা।

প্রয়াণ শতবর্ষ

‘‘অনেক কাজ প্রধানতঃ নিজ শক্তির উপর ভর করিয়া করিয়াছি।’’ ৮ ডিসেম্বর ১৯১৫-য় লিখেছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী (১৮৪৭-১৯১৯)। নিয়মিত না হলেও দিনলিপি লিখতেন, তা থেকেই সমাজ উন্নয়নে তাঁর সক্রিয়তা টের পাওয়া যায়। দিনলিপি রচনার পরবর্তী কালের, অর্থাৎ শেষ বারো বছরের নানা উপকরণ নিয়ে গৌতম নিয়োগীর গ্রন্থনির্মাণ: শিবনাথ শাস্ত্রীর শেষ জীবন/ নূতন তথ্যের আলোকে (সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ)। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর পূর্ণ হবে তাঁর প্রয়াণ শতবর্ষ, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজে প্রকাশ পাবে বইটি। আছে আলোচনাসভাও। আজ সূত্রধর প্রকাশ করছে শিবনাথ শাস্ত্রী রচিত পণ্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর (ইংরেজি) এবং প্রয়াত অলোক রায়ের শিবনাথ শাস্ত্রী: কর্মী ও সাধক। সঙ্গে পুস্তিকা, প্রেমাঙ্কুর আতর্থী-র শিবনাথ শাস্ত্রী।

সমৃদ্ধ ইতিহাস

কনৌজি ব্রাহ্মণ রামচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৮১৬ সালে কেউটে নারায়ণপুরে জন্ম। কলকাতায় এসে সততার সঙ্গে নিজের বুদ্ধিমত্তায় তৎকালীন সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ১২০ ও ১২২ মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে তৈরি করেন বসতবাড়ি ‘রামচন্দ্র ভবন’। এ বার এই বাড়ির দুর্গাপুজোর বয়স হবে ১৬০। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় সেখানেই প্রকাশিত হবে বাড়ির ইতিহাস সমৃদ্ধ বই ‘চোরবাগান চট্টোপাধ্যায় বাড়ি’ (সুমিত্রা প্রকাশনী)। লিখেছেন ওই বাড়ির ভাগ্নে অপূর্ব গঙ্গোপাধ্যায়। বইটি প্রকাশ করবেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও বিশ্বজিৎ মতিলাল। আবার ঢাকা-বিক্রমপুরের আবদুল্লাপুর গ্রামের যুগলকিশোর দে-র বিখ্যাত পুজোর বয়স হল ১৭০। পালা করে চালু এই পুজো এ বার কেষ্টপুর রবীন্দ্রপল্লিতে হচ্ছে।

মিনিয়েচার

বরানগর বনহুগলির বাসিন্দা হরিসাধন বিশ্বাস ফাইন আর্টস নিয়ে ১৯৮২ সালে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ থেকে পাশ করেন। বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করার সময়ই তাঁকে পেয়ে বসে মিনিয়েচারের নেশা। হরেক উপকরণ দিয়ে তিনি এ যাবৎ ২৩টি মিনিয়েচার মূর্তি বানিয়েছেন। মাটি ছাড়াও বোতলের মধ্যে কাগজ দিয়ে, গেঞ্জির কাপড় দিয়ে, রাবার পাইপ দিয়ে, তেজপাতা, ফুলের পাপড়ি, পিঁয়াজের খোসা, ইলেকট্রিক তার, ময়দা, ট্যাবলেট দিয়েও। এ বার তিনি মাস তিনেকের প্রস্তুতিতে বাড়ির পাশের ব্যাগ কারখানার ছাঁট চামড়া দিয়ে ৮ ইঞ্চির একটি দুর্গাপ্রতিমা গড়েছেন (সঙ্গের ছবি)। ২০০৪ থেকে তাঁর দুর্গাপ্রতিমা গড়া শুরু, এ যাবৎ গড়েছেন পনেরোটি।

মাতৃরূপেণ

শারদীয় পত্রিকার বড্ড ভিড় এখন। গল্প কবিতা উপন্যাস ইত্যাদির সঙ্গে প্রবন্ধ শীর্ষক দু’একটি রম্যরচনা, ব্যস। লিটল ম্যাগাজিন আবার কোনও কোনওটি ভীষণ রাশভারী, পাতার পর পাতা গুরুগম্ভীর লেখায় ঠাসা। পড়তে পড়তে হাঁপ ধরে যায়, চোখ একটুও বিশ্রাম পায় না। ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’ (সম্পা: সৈকত মুখার্জি, পরি: অক্ষর প্রকাশনী) নেহাতই ব্যতিক্রম। ম্যাট আর্ট পেপারে ছাপা, প্রায় প্রত্যেক পাতায় সুমুদ্রিত সাদাকালো ছবি— প্রায় ২৫০ পাতার পত্রিকা দুর্গাকে কেন্দ্রে রেখে বহু বিচিত্র লেখায় সমৃদ্ধ। রবীন্দ্রনাথের লেখনীতে শরৎ ঋতুর পাশাপাশি কলকাতার ক’টি অবলুপ্ত ঠাকুরদালানের ইতিবৃত্তান্ত, জয়পুর সংগ্রহের ‘দুর্গাপাঠ’ পুঁথির চিত্রকথা, পটের দুর্গা, পুজোর সুভেনির, কলের গানে আগমনি, শোলাশিল্প, হিন্দুতীর্থ ও বাঙালিনি থেকে মহিষাসুরের কথা— এমনই বিপুল সম্ভার। এত শিল্পিত পত্রিকা বাংলাবাজারে দুর্লভ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

কড়চা কলকাতা Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE