Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

শীত এখন জমকালো, হাতে কমলালেবু আর পিঠে রোদ নিয়ে ক’দিন বাদেই বড়দিনের ছুটিতে মাতবে ছোটরা। তাদের জন্যে নন্দন চত্বর সহ শহর জুড়ে নানা প্রেক্ষাগৃহে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব, ২৪-৩১ ডিসেম্বর, আয়োজনে শিশু কিশোর আকাদেমি।

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০

ছোটদের মন ভাল করা আয়োজন

শীত এখন জমকালো, হাতে কমলালেবু আর পিঠে রোদ নিয়ে ক’দিন বাদেই বড়দিনের ছুটিতে মাতবে ছোটরা। তাদের জন্যে নন্দন চত্বর সহ শহর জুড়ে নানা প্রেক্ষাগৃহে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব, ২৪-৩১ ডিসেম্বর, আয়োজনে শিশু কিশোর আকাদেমি। ‘বড়দের শাসন আর সিলেবাসের বাইরে বেরনোর এই তো সময় কমবয়সিদের। তারা যাতে মন-ভাল-করা ছবি দেখে উন্নত জীবনের স্বাদ পায় সে চেষ্টাতেই এ উৎসব। পাঁচ পেরিয়ে ছ’বছরে পা দিলাম আমরা, সারা দুনিয়া চষে সেরা পরিচালকদের সব ছবি আনা হচ্ছে এ বার, এক্কেবারে নতুন।’ বলছিলেন অধিকর্তা অর্পিতা ঘোষ। দেশ-বিদেশের নানা সিনেমার পাশাপাশি থাকবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান— ওয়ার্কশপ, কুইজ ইত্যাদি। দৈনিক বুলেটিনের সঙ্গে প্রকাশ পাবে ‘চিরসবুজ লেখা’র উৎসব সংখ্যাও। শতবর্ষ যেহেতু সায়েন্স ফিকশন ফিল্মের, থাকবে প্রদর্শনী: ‘কল্পবিজ্ঞানের সিনেমা: জাদু দুনিয়া’, বেরবে বিশেষ সংকলন ‘কল্পবিজ্ঞান: গল্প থেকে সিনেমা’। সত্যজিতের ফেলুদা লেখালেখির পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সন্দীপ রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হবে আর-একটি বিশেষ সংকলন ‘ফেলুদা ৫০’। তাঁরই নতুন ছবি ‘ডবল ফেলুদা’ দেখানো হবে উদ্বোধনের সন্ধ্যায় (সঙ্গে তারই একটি দৃশ্যে সিধুজ্যাঠার সঙ্গে ফেলুদা-তোপসে)। ‘বাবারই দু’টি প্রিয় গল্প সমাদ্দারের চাবি আর গোলোকধাম রহস্য নিয়ে এ-ছবি। বন্দুক নয় ফেলুদার মগজাস্ত্রই এখানে মূল হাতিয়ার। অঙ্ক কষার মতোই মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে, না হলে রহস্যভেদের ক্লু মিস হয়ে যাবে। বেড়ানো বা অ্যাডভেঞ্চার সে ভাবে না থাকলেও কলকাতার কাছেপিঠের নির্জন লোকেশন, পুরনো বাড়ি, গঙ্গা, গা-ছমছমে সব কিছুই রয়েছে। সঙ্গীত, মনস্তত্ত্ব, পুরাণ নিয়ে জটিলতাও আছে, তবে তা সমাধানে আনন্দই পাবে কমবয়সিরা।’ জানালেন সন্দীপ। তাঁর সঙ্গে এ-ছবির শিশুশিল্পীও উপস্থিত থাকবে উদ্বোধনে। ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে এ-ছবির ফেলুদা-তোপসে সহ অন্যদের নিয়ে আড্ডা নন্দনে। আগের ফেলুদা-ফিল্মগুলিও দেখানো হবে উৎসবে। সত্যজিৎকে সম্মান জানিয়েই উৎসবের লোগো-ফিল্মটি তৈরি করেছেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।

সাম্প্রতিক

গণেশ হালুই সেই প্রজন্মের ভারতীয় শিল্পী যাঁরা আধুনিক চিত্রকলাকে স্বাধীনতা বা আত্মপরিচয় অর্জনের চিহ্নে বিশিষ্ট করে তুলেছিলেন। ১৯৩৬-এ ময়মনসিংহের জামালপুরে তাঁর জন্ম, দেশভাগের পর চলে আসেন কলকাতায়। পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই তাঁর ছবি আঁকার জগতে যেন জন্ম দিয়েছে এক বহুস্বর, প্রাণোচ্ছ্বল, পুনর্জাগর সংস্কৃতির। তাঁর চিত্রভাষায় লেপ্টে থাকে অন্তহীন সময়। হিন্দুস্তান পার্কের গ্যালারি আকার প্রকার-এ চলছে তাঁর সাম্প্রতিক কাজের প্রদর্শনী: ‘দ্য ফিলিং আই’ (৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত)। মোট ছত্রিশটি ছবি ও তিনটি ভাস্কর্য (ব্রোঞ্জ) নিয়ে এই প্রদর্শনী। বেশির ভাগ ছবিই জ্যামিতিক রেখায় সমৃদ্ধ। শিল্পীর নিজের কথায়: ‘আই ট্রাই টু পেন্ট আ ল্যান্ড দ্যাট ইজ মাই ওন।’ সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

স্বকীয়

পরম্পরা নয়, রেওয়াজ আর তালিমের গুণেই তিনি বাংলা তথা ভারতের সংগীত জগতে জায়গা করে নিয়েছিলেন। চিন্ময় লাহিড়ির (১৯২০-১৯৮৪) জন্ম পাবনায়, বড় হয়েছেন বাবা জীবচন্দ্রের কর্মস্থল লখনউতে। প্রথম গুরু রবীন চট্টোপাধ্যায়, তার পর মরিস কলেজের অধ্যক্ষ রতনজনকরজি। আগ্রা ঘরানায় সূচনা, পরে তৈরি করেন নিজস্ব ঘরানা ‘মগন গীত’। সৃষ্টি করেছেন শ্যামকোষ, কুসুমি কল্যাণ, প্রভাতী তৌড়ি, শিবানীর মতো অসংখ্য রাগ। ‘ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান’-এর মতো গানে তাঁর সূক্ষ্ম অনুভূতির পরিচয় মেলে। আমৃত্যু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের এই শিক্ষকের স্মরণে ২৩ ডিসেম্বর বিকেল ৪টেয় মহাজাতি সদনে ‘মগন মন্দির’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে থাকছেন পণ্ডিত গোবিন্দ বসু, পণ্ডিত শ্যামল লাহিড়ি, বিদুষী মন্দিরা লাহিড়ি, রতন ভারতী, অনির্বাণ, দীপ্তম প্রমুখ।

গিটারের জাদুকর

বিদায় কার্লটন কিটো। গিটারের এই জাদুকর যতটা না ভারতীয়, তার চেয়েও অনেক বেশি কলকাত্তাইয়া। লুই ব্যাঙ্কসের কথায়, ‘আমি ওঁকে মুম্বইয়ে এসে কাজ করার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিলাম। অনেক বেশি রোজগারও হত। তা-ও উনি আসতে চাননি।’ জীবন শুরু করেছিলেন পার্ক স্ট্রিটের রেস্তোরাঁয়। মুলাঁ রুজ থেকে মোকাম্বো হয়ে পার্ক হোটেল। শেষটা ওবেরয় গ্র্যান্ডের চৌরঙ্গি রেস্তোরাঁয়। বিটলসের জর্জ হ্যারিসন তাঁর বাজনা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। দশ বছর ক্যালকাটা স্কুল অব মিউজিকে শিক্ষকতা করেছেন। ক্লার্ক টেরি, ল্যারি কোরিল-এর মতো শিল্পীদের সঙ্গে বহু অনুষ্ঠান করেছেন। পঞ্চান্ন বছর এ শহরের প্রাণকেন্দ্রে বসে বাজানর পর বিদায় নিলেন বার্ধক্যজনিত রোগভোগ শেষে।

আয়োডিন মানব

লৌহমানব শিরোপার দাবিদার ঢের আছে। কিন্তু আয়োডিন-মানব? সেটা যিনি দাবি করতে পারেন, সেই চন্দ্রকান্ত পাণ্ডব সম্প্রতি ঘুরে গেলেন কলকাতায়। নুনের মাধ্যমে আয়োডিনকে প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চার দশক অক্লান্ত লড়ে গিয়েছেন যিনি। আজ যে ৯২ শতাংশ ভারতীয় আয়োডিন-যুক্ত নুন খান, তার কৃতিত্বের দাবিদার চন্দ্রকান্ত ও তাঁর সহযোগীরা। এইমস-এর কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান চন্দ্রকান্তের কর্মজীবনের বেশি সময়টা কেটেছে সরকারি কর্তাদের বোঝাতে যে, আয়োডিন না-পাওয়ার সমস্যা পাহাড়ি এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই, আর গলগণ্ডেও নয়। মাটির ক্ষয়ের জন্য ভারতের নানা জায়গায় আয়োডিন কমছে। যাতে ব্যাহত হয় শিশুদের বৃদ্ধি আর মেধার বিকাশ। তাঁর দাবি, আয়োডিন-যুক্ত নুন খাওয়ায় গত তিন দশকে অন্তত চারশো কোটি পয়েন্ট আইকিউ রক্ষা পেয়েছে ভারতীয়দের। চিন ও দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশেও কাজ করেছেন তিনি, যাতে আয়োডিনের অভাবে ভুগতে না হয় একজনকেও। সম্প্রতি কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চন্দ্রকান্তকে মাদার টেরিজা স্মৃতি পুরস্কারে সম্মানিত করল।

এক দশক

সৌরেন্দ্র ও সৌম্যজিৎ নাম দুটি সংগীতপ্রিয় মানুষদের কাছে অপরিচিত নয়। তাঁদের সংগীতযাত্রা শুরু হয়েছিল প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে। তাঁরা শর্মিলা ঠাকুর থেকে শুরু করে অপর্ণা সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে লাইভ স্টেজ শো করেছেন। শিবকুমার শর্মা, আশা ভোঁসলে, পণ্ডিত যশরাজ থেকে শুরু করে এম বালমুরলীকৃষ্ণ তাঁদের সুরে গানও গেয়েছেন। এই ডিসেম্বর মাসেই তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার দশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেই উপলক্ষে ২৩ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় স্বভূমিতে এক অনুষ্ঠানে ‘দশ বছরের যাত্রাপথ কেমন ছিল’ গানের মাধ্যমে ফুটে উঠবে। সঙ্গে ‘জাস্ট-টেন’ শীর্ষক দশটি গান সমৃদ্ধ একটি অ্যালবাম ও তাঁদের নতুন মিউজিক ‘লেবেল’ প্রকাশিত হবে।

প্রকৃতি

তিনি অপার বিস্তৃত প্রকৃতির মধ্যে খুঁজে পান এক বিমূর্ত সৌন্দর্য। তাই সবাই যেমন প্রকৃতির ছবি আঁকেন, তেমনটি তিনি আঁকেন না। শিল্পী সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতে তাই উজ্জ্বল বর্ণের ছড়াছড়ি। ১৯৬৬-তে বাংলা-ঝাড়খণ্ডের উপান্তে জন্ম, বেড়ে ওঠা চিত্তরঞ্জন রেল শহরে। দু’পা বেরলেই সাঁওতাল পরগনার সৌন্দর্য। এই জন্যই কি প্রকৃতি আপনার বিষয়? ‘হ্যাঁ, প্রকৃতি আমার প্রথম প্রেম। ভেজা কাগজে রঙের বিস্তার আমায় আনন্দ দেয়, মুগ্ধ করে।’ বলছিলেন ন’বছর ধরে প্রকৃতির ছবি আঁকা শিল্পী। এ বার তাঁর দু’বছরের সৃষ্টি নিয়ে অ্যাকাডেমিতে একক প্রদর্শনী। ২০ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টায় উদ্বোধন করবেন ওয়াসিম কপূর, চলবে ২৬ ডিসেম্বর (৩-৮টা) পর্যন্ত।

নতুন গুড়

শীত এলেই বাঙালির রসনা আনচান করে জয়নগরের মোয়ার জন্য। এই মোয়া তৈরির অন্যতম প্রধান উপকরণ ‘গুড়’ ক্রমশ দুর্লভ হয়ে পড়ছে। প্রোমোটারদের দৌলতে মুহুর্মুহু কোপ পড়ছে অন্য গাছের সঙ্গে খেজুরগাছেও। ঝুঁকি বেশি আর কম আয়ের জীবিকা বলে পাল্লা দিয়ে কমছে রস সংগ্রহকারী শিউলির সংখ্যা। অথচ গুড় না পাওয়া গেলেও কিন্তু মোয়া, সঙ্গে গুড়ের হরেক মিষ্টির রমরমা শীত পড়তে না পড়তেই। আর এই সমাধানসূত্র মিলেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্লেভার অ্যান্ড ফ্র্যাগর‌্যান্স’ স্বীকৃত গুড়ের স্বাদ ও গন্ধের মিশ্রিত কেমিক্যাল দিয়ে। এক ফোঁটাতেই কেল্লা ফতে করার ক্ষমতা, সঙ্গে গুড়ের গন্ধে ম-ম করে তোলে এলাকা। দমন-এর ‘বেঙ্গল নলেনগুড়ের ফ্লেভার’ ও চেন্নাইয়ের ‘নলেনগুড়ের ফ্লেভার এস-৪১৬৭’ এই দুই সহজলভ্য মিশ্রণ, জানালেন রাধাবাজার এলাকার কারবারি সৌম্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তবে আর শীতের অপেক্ষা কেন? নলেনগুড়ের পাটালি, মোয়া, রসগোল্লা, সন্দেশ— সবই হাতের নাগালে বছরভর।

পায়ে পায়ে পঁচিশ

অঙ্গনওয়াড়ি সংগীতের ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছে সুতানুটি পরিষদ চোরবাগান আঞ্চলিক কমিটি। ১৯৯৩-এর প্রথম অনুষ্ঠানে ওস্তাদ আমজাদ আলি খাঁ কোনও সম্মানদক্ষিণা ছাড়া সরোদ পরিবেশন করেন এবং তাঁর ঠাকুরদার ব্যবহৃত ‘রাবাব’ তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। গত ২৩ বছরে ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ, ওস্তাদ বিসমিল্লা খাঁ, পণ্ডিত ভীমসেন যোশী, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, ওস্তাদ জাকির হোসেন, পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, অশ্বিনী বিদে দেশপাণ্ডে, বিদুষী পদ্মা তলওয়ারকর, বিদুষী শোভা মুদ্গল, বালমুরলীকৃষ্ণ, পণ্ডিত যশরাজ, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওস্তাদ রাশিদ খাঁ প্রমুখ শিল্পী এসেছেন। তাঁদের মতে, এখানে অনুষ্ঠান করে তাঁরা অন্য ধরনের তৃপ্তি পান। দর্শক শ্রোতারা এখানে আসেন ভারতীয় পোশাকে। গদি এবং সাদা চাদরের ওপর তাঁদের বসার ব্যবস্থা করা হয়। এই ‘ধ্রুপদী সংগীতের মজলিশ’ এ বছর রজত জয়ন্তী বর্ষ পূর্ণ করতে চলেছে। সেই উপলক্ষে ১৪-১৫ জানুয়ারি কৈলাস বোস স্ট্রিট লাহা বাড়িতে অনুষ্ঠানের সূচনায় শঙ্খ ঘোষ সংবর্ধিত হবেন। সংগীতানুষ্ঠানে থাকবেন পণ্ডিত বেঙ্কটেশ কুমার, ওস্তাদ সুজাত খাঁ, ওঙ্কার দাদারকর, সৌরভ ও গৌরভ মিশ্র (কত্থক) এবং পণ্ডিত দেবজ্যোতি বসু ও পণ্ডিত রুণু মজুমদার (সরোদ বাঁশি যুগলবন্দি)।

শেক্সপিয়র

২০১২ সালে লন্ডনে ওয়ার্ল্ড শেক্‌সপিয়র ফেস্টিভ্যালে যাত্রা শুরু, তার পর ঘুরেছেন আমেরিকা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইল্যান্ড, চিন, ভারত। দেখেছেন, কী করে শেক্‌সপিয়র পালটে যাচ্ছেন নানান জলহাওয়ায়। এই নিয়েই ব্রিটিশ সাংবাদিক-লেখক অ্যান্ড্রু ডিক্সন-এর বই ‘ওয়ার্ল্ডস এল্‌সহোয়্যার: জার্নি অ্যারাউন্ড শেক্‌সপিয়র’স গ্লোব’। কলকাতায় এসেছেন আগেও, এই শহরের শেক্‌সপিয়র প্রযোজনাগুলি নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। বন্ধু নাট্যকার-অভিনেতা কৌশিক সেনও জানালেন, কী করে উপদ্রুত সময়ে শেক্‌সপিয়রের নাটকই হয়ে উঠেছে এ শহরের নাট্যকর্মীদের প্রতিবাদের ভাষা। শেক্‌সপিয়রের নাটক চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় ক্ষমতার রাজনীতি, সেই আলোতেই বিশ্লেষণ করলেন কংগ্রেসি আমল থেকে আজকের জমানাকেও। ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে সম্প্রতি এক সন্ধেয় এ ভাবেই মিলল বাংলা ও ব্রিটেন।

নৃত্য সম্রাজ্ঞী

কিশোরী মেয়েটির নাচ দেখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উপাধি দিলেন ‘নৃত্য সম্রাজ্ঞী’। দেশবিদেশে ছ’দশকেরও বেশি সময় ধরে কত্থক নাচে নিজের অবদান রেখে যাওয়া নৃত্যশিল্পী সিতারা দেবীর জন্ম কলকাতায় (১৯২০-২০১৪)। ধনতেরাসের দিন জন্ম বলে তাঁর নাম রাখা হয় ধনলক্ষ্মী। জীবিকার তাগিদে তাঁর পূর্বপুরুষরা বারাণসী থেকে কলকাতা এসেছিলেন। পরে মুম্বইবাসী হন। কিংবদন্তি শিল্পীর বাবা শুকদেব মহারাজও ছিলেন নৃত্য পারদর্শী ও সংস্কৃত পণ্ডিত। মা মৎস্যকুমারী দেবীর ছিল নেপালের রাজপরিবারের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক। সিতারা দেবী লন্ডনের ‘রয়্যাল অ্যালবার্ট হল’ ও ‘ভিক্টোরিয়া হল’-এ নাচ দেখিয়ে প্রভূত সমাদর কুড়িয়েছিলেন। পেয়েছেন সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, পদ্মশ্রী, কালিদাস সম্মান। বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন— ‘উষা হরণ’, ‘নাগিনা’, ‘অঞ্জলি’, ‘রোটি’, ‘মাদার ইন্ডিয়া’-র মতো ছবিগুলি স্মরণীয়। তিনি মধুবালা, রেখা, মালা সিংহের মতো তারকাকে কত্থক নাচ শিখিয়েছেন। এ বার তাঁর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় দমদম রবীন্দ্র ভবনে ‘স্মরণ ২০১৬’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। থাকবেন শিল্পীর পৌত্রদ্বয় কত্থক শিল্পী বিশাল কৃষ্ণ ও কুশল কৃষ্ণ (তবলা), প্রমুখ। শিল্পীর নামাঙ্কিত স্মারক সম্মান পাবেন নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়। আয়োজনে কালিন্দী দর্পণ সোশিও কালচারাল অর্গানাইজেশন।

সার্ধশতবর্ষে

তিনি স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে বেলুড় মঠ ও শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন স্থাপন করে আমৃত্যু সেখানকার সম্পাদক ছিলেন। এ কাজে তাঁর অসীম ধৈর্য, দৃঢ় নিষ্ঠা ও আত্মোৎসর্গের পরিচয় পাওয়া যায় শ্রীমা সারদার কথায়— ‘সহস্র ফণা বিস্তার করে শরৎ সঙ্ঘকে ধরে রেখেছেন।’ গিরীশ চক্রবর্তী ও নীলমণি দেবীর জ্যেষ্ঠপুত্র শরৎচন্দ্র (১৮৬৫-১৯২৭)। হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৮৩-তে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। ওই বছরেই দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শন ও নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রথম মিলনও। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন, তবে পড়া শেষ না করেই শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম প্রধান শিষ্যটি ১৮৮৭-তে সন্ন্যাস নেন, নাম হয় স্বামী সারদানন্দ পুরী। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দের আহ্বানে লন্ডনে গিয়ে বেদান্ত প্রচার করেন। আমেরিকায় বেদান্ত প্রচারের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। দেশে ফিরে নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের উন্নতিসাধনে তৎপর হন। মিশনের মুখপত্র ‘উদ্বোধন’ সম্পাদনা করেছেন। তাঁর জন্মসার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে সূত্রধর-এর উদ্যোগে ১৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় শোভাবাজার রাজবাড়িতে ‘বিস্মৃত বাঙালি অগ্রপথিক স্মারক বক্তৃতা-৩’-এ ‘মানুষ সারদানন্দ’ বিষয়ে বলবেন পূর্ণাত্মানন্দজি, সভাপতিত্বে সুবীরানন্দজি। প্রকাশিত হবে স্বামী সারদানন্দের প্রাচীন কালের কাব্য ও নাটক, স্বামী নির্লেপানন্দের অদ্বিতীয় স্বামী সারদানন্দ এবং স্বামী সুবীরানন্দের দ্য সেকেন্ড স্বামী: স্বামী সারদানন্দ নামক বই তিনটি ছাড়াও শ্রীমাকে নিয়ে সারদা-অর্ঘ্য।

Kolkatar Korcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy